কোটা আন্দোলন নিয়ন্ত্রণে আনতে কারফিউ জারি করেছে হাসিনা সরকার। সেই কারফিউ চলাকালীন ঢাকাতে ৭জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ব্যাপক হিংসার পর মধ্যরাতে কারফিউ জারি করা হয়। মোতায়েন করা হয় সেনা। এই কারফিউয়ের মধ্যে ঢাকা সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন সংঘর্ষের খবর পাওয়া গিয়েছে।
এই আন্দোলনে গত চারদিন ১১০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে বিবিসি বাংলা জানিয়েছে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের সূত্র উদ্ধৃত করে বিবিসি জানিয়েছে, শনিবার সেখানে সাতজনের মৃতদেহ আনা হয়। তাঁদের মধ্যে পাঁচজনকে আনা হয় যাত্রাবাড়ি এলাকা থেকে। মৃতদের মধ্যে এক জন পুলিশ কর্মীও রয়েছে।
যাত্রাবাড়ি এলাকায় পুলিশের সঙ্গে দফায় সংঘর্ষ চলে আন্দোলনকারীদের। এই সংঘর্ষে এক জনের মৃত্যু ও ২০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রায় দুঘণ্টা ধরে চলে এই সংঘর্ষ।
কোটা আন্দোলনের সমন্বয়কারী নাহিদ ইসলামকে আটক করে পুলিশ। তাঁকে কোথায় রাখা হয়েছে তা জানা যায়নি। শুক্রবার নাহিদ ইসলাম খিলগাঁওয়ের নন্দীপাড়া এলাকার তাঁর এক বন্ধুর বাড়িতে ছিলেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নাহিদের এক বন্ধু বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, রাত আড়াইটার দিকে পুলিশের একটি দল এলে নাহিদ স্বেচ্ছায় বাড়ির নিচে নেমে আসে। ওই পুলিশকর্মীদের সঙ্গে সেখানে সাদা পোশাকের গোয়েন্দারাও ছিল বলেও জানান তিনি। তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে জানার চেষ্টা করা হয় কোথায় তাঁকে রাখা হয়েছে। কিন্তু কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।
কোটা সংস্কার আন্দোলন: বাংলাদেশে কারফিউ দেশ জুড়ে, সেনা মোতায়েন
ঢাকার প্রগতি সরণিজুড়ে শনিবারও থমথমে পরিস্থিতি ছিল। বেলা গড়ালেও সেখানে স্বাভাবিক লোক চলাচল দেখা যায়নি। জরুরি প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হতে সাধার মানুষকে দুর্ভোগ পডতে হয়েছে।
নতুনবাজার-বাড্ডা-রামপুরার বিভিন্ন গলিতে মানুষজনের জটলা দেখা গেছে। কিন্তু তাদেরকে মূল রাস্তা দাঁড়াতে দেয়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অনেক জায়গায় গলিতে ঢুকে ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল ছুড়তে দেখা গেছে নিরপত্তাকর্মীদের।
বেলা ১২টায় রাজধানীর গুলশান-বাড্ডা লিঙ্ক রোডের বিভিন্ন গলিতে ঢুকে পুলিশকে ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। এ সময় সেখানে সেনাবাহিনীকে দেখতে পাওয়া যায়নি। মূল সড়ক ধরে বিচ্ছিন্নভাবে হেঁটে যাওয়া বেশ কয়েকজন পথচারীকে লাঠিচার্জ করে সরিয়ে দিতে দেখা গেছে পুলিশকে।
হাসিনার বিদেশ সফর বাতিল
দেশের বর্তমান পরিস্থিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পূর্ব নির্ধারিত স্পেন ও ব্রাজিল সফর বাতিল করা হয়েছে। শুক্রবার বিদেশমন্ত্রক থেকে এ খবর জানানো হয়েছে। হাসিনার ২১ থেকে ২৩শে জুলাই স্পেনে এবং সেখান থেকে ২৪ থেকে ২৭শে জুলাই ব্রাজিলে সফরে থাকার কথা ছিল।