‘বয়কট ইন্ডিয়া’। কয়েক মাস ধরেই এই ডাক তুলেছে বাংলাদেশের একটি মহল। চতুর্থ বারের জন্য শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে এই আন্দোলন। ঠিক কী কারণে ‘বয়কট ইন্ডিয়া’য় সরব বাংলাদেশের একাংশ।
চলতি বছরের শুরুতেই ছিল বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচন। সেই নির্বাচন বয়কট করে বিরোধী দল বিএনপি। তার পর থেকেই বিভিন্ন ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক আরও জোরালো হয় বাংলাদেশে। জানা যায়, কিছু সমাজকর্মী এবং প্রভাবশালীদের শুরু করা এই আন্দোলনে বিরোধী রাজনীতিকদের একাংশেরও সমর্থন রয়েছে। এ ছাড়া আমেরিকা এবং বিদেশে থাকা বিভিন্ন বাংলাদেশিরা এই আন্দোলনের পিছনে মদত দিচ্ছেন বলে অভিযোগ।
এখন তো বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ‘বয়কট ইন্ডিয়া’-র ব্যাপক প্রভাব। ফেসবুক, এক্স (আগের টুইটার)-এর মতো সোশ্যাল মিডিয়ায় বাংলাদেশি নাগরিকদের একটা অংশের উৎসাহের বড়ো কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ‘বয়কট ইন্ডিয়া’। এই প্রচারের সঙ্গে যুক্তরা দাবি করেন যে ভারত শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় থাকার জন্য সমর্থন করছে। কারণ এর নেপথ্যে রয়েছে ভারতের বাণিজ্যিক স্বার্থ।
বিরোধী দল বিএনপি-র বেশ কিছু নেতা ‘বয়কট ইন্ডিয়া’ আন্দোলনকে প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছেন। যদিও দলের তরফে এ বিষয়ে এখনও অবস্থান স্পষ্ট করা হয়নি। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান সংবাদ মাধ্যমের কাছে জানান, দলের মধ্যে এ বিষয়ে আলোচনা চলছে। কিছু নেতা এ বিষয়ে দলের অবস্থান স্পষ্ট করার দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত, দলের তরফে এই বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক অবস্থান নেই। তবে এটাও সত্যি যে এটা নিয়ে সাধারণ মানুষের প্রবল উৎসাহ দেখাচ্ছেন এবং বিএনপি-র কিছু নেতা এটাকে সমর্থন করছেন।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এই আন্দোলনের সঙ্গে ভারত-বিরোধী মনোভাব ছড়িয়ে দেওয়ার সম্পর্ক রয়েছে। ভারতে বিশ্বকাপ চলার সময় ও শেখ হাসিনা ফের প্রধানমন্ত্রী পদে বসার পর সেদেশের বিএনপি-সহ বিরোধী নেতারা বাংলাদেশে ভারত বিরোধী মনোভাব ছড়িয়ে দিতে চাইছিলেন। ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখা শেখ হাসিনাকে আক্রমণ করে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের সহানুভূতি কুড়োতে চাইছিলেন। আর তাতেই জড়িয়ে পড়েন ‘অ-রাজনৈতিক’ মনোভাবাপন্নরা। আন্দোলনকারীরা বাংলাদেশের মানুষের কাছে ভারতীয় পণ্য বয়কট করার আবেদন জানান। যা বর্তমানে ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।
অনেকের মতে, বয়কট ইন্ডিয়া, ভারতীয় পণ্য বর্জনের রাজনীতি নতুন কিছু না। ভারতীয় পণ্য বর্জনের প্রচারণাকে পাকিস্তান আমলে বস্তাপচা নোংরা রাজনীতির সঙ্গে তুলনাও করছেন অনেকে। সেই বস্তাপচা রাজনীতিই আবার নতুন করে আমদানি করা হচ্ছে মাত্র।
আরও পড়ুন: ভোটের জন্য এগিয়ে এল গরমের ছুটি, কত দিন বন্ধ থাকবে স্কুল