ঢাকা: সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে বাংলাদেশে যে আন্দোলন চলছে তাতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭। এঁদের মধ্যে ঢাকায় মারা গিয়েছেন ২৭ জন, ঢাকার বাইরে ৮ জন। বৃহস্পতিবার এই আন্দোলন চরম আকার ধারণ করে। এটা সরকারি হিসাব। বেসরকারি মতে, মৃতের সংখ্যা আরও বেশি।
এই অস্থির সময়ে বাংলাদেশে বসবাসকারী ভারতীয়দের ঘর থেকে না বেরোনোর পরামর্শ দিয়েছে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশন। ‘এক্স’ হ্যান্ডেলে হাইকমিশনের তরফে লেখা হয়েছে, “বাংলাদেশে চলতি পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে এখানে বসবাসরত ভারতীয় সম্প্রদায়ের সদস্যদের এবং ভারতীয় ছাত্রদের ঘুরে বেড়াতে নিষেধ করা হচ্ছে এবং ঘরের বাইরে বেরোনো যতটা সম্ভব কম করতে বলা হচ্ছে।”
টিভি দফতরে কেন আগুন
গত বুধবার বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন বিটিভিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাষণ দেওয়ার পর দিনই বৃহস্পতিবার দুপুরে আন্দোলনকারীরা আগুন লাগিয়ে দেয় ঢাকায় বিটিভির সদর দফতরে। সরকারি চাকরিতে যে কোটা চালু করা হয়েছে তা সংস্কারের দাবিতে হাজার হাজার আন্দোলনকারী রাজপথে সমবেত হয়। তারা রায়ট পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তাদের উদ্দেশে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ রাবার বুলেট চালায়। পুলিশ অফিসাররা বিটিভির সদর দফতরের দিকে পিছিয়ে গেলে জনতা তাঁদের ধাওয়া করে। ক্রুদ্ধ জনতা টিভি সদর দফতরের রিসেপশন এবং আশেপাশের ডজনখানেক গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। পরে দমকল আগুন আয়ত্তে আনে। সেই থেকে বাংলাদেশে টিভি সম্প্রচার বন্ধ আছে।
টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত
এই আন্দোলনের জেরে টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে। বহু সংবাদপত্রের ওয়েবসাইট ও সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় করে ফেলা হয়েছে। দেশের বাইরে ফোন করা যাচ্ছে না। ইন্টারনেট পরিষেবা কাজ করছে না। প্রতিবাদ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতেই দেশে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে বলে দেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন।
‘মৃতদের দেহ মাড়িয়ে আলোচনা নয়’
আইনমন্ত্রী বলেছেন, প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে ইচ্ছুক সরকার। সংবাদসংস্থা এপি-র সূত্রে জানা গিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা বলেছে, তারাও আলোচনায় বসতে চায়। তবে, প্রতিবাদকারীদের কো-অর্ডিনেটর নাহিদ ইসলাম রয়টার্সকে বলেছেন, “আলোচনা আর গুলি চালানো একসঙ্গে চলতে পারে না।…আলোচনায় বসার জন্য আমরা মৃতদের দেহ মাড়িয়ে যেতে পারি না।”
আরও পড়ুন
কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘর্ষ অব্যাহত বাংলাদেশে, ১৯ জনের মৃত্যু, ইন্টারনেট বন্ধের অভিযোগ