নিজস্ব প্রতিনিধি: রোদ ঝলমলে আকাশ, বৃষ্টির লেশমাত্র নেই। দশমীতে পুজোয় বৃষ্টি হওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে আবহাওয়া দফতরের। সে তো তিন দিন পরে। সুতরাং সপ্তমীতে দলে দলে ঠাকুর দেখতে অসুবিধা কী? তাই বেরিয়ে পড়ো। কোনো বাধাবিঘ্ন ছাড়াই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আবালবৃদ্ধবনিতার ঠাকুর দেখা চলছে।
সপ্তমী শুরু হয়েছিল নবপত্রিকা স্নান দিয়ে। ভোর থেকেই গঙ্গার ঘাটে ঘাটে ভিড়। যাঁদের পক্ষে গঙ্গায় যাওয়া সম্ভব হয়নি, তাঁরা স্থানীয় পুকুর-ঝিলে নবপত্রিকা স্নান সমাপন করেন। মণ্ডপে বা বাড়িতে ফিরে এসে নবপত্রিকা স্থাপন এবং যথাবিহিত আচার আচরণ সম্পন্ন করে পূজা শুরু হয়।

নবপত্রিকা-স্নান গঙ্গায়।
মহানগরীর বিভিন্ন পূজামণ্ডপে সারা দিনই দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল। কিন্তু সন্ধের পর সেই ভিড় কানায় কানায়। তিলধারণের জায়গা নেই। এ ক্ষেত্রে নামী, অনামী কোনো পূজামণ্ডপই বাদ যাচ্ছে না। বিভিন্ন ধরনের আলোকমালায় সজ্জিত মহানগরীকে যেন সন্ধের পর স্বপ্নপুরী মনে হচ্ছে।
মহানগরের যে সব অঞ্চলে নামকরা পূজামণ্ডপ বেশি, সে সব জায়গায় সকাল থেকেই যান নিয়ন্ত্রণে পুলিশ তৎপর ছিল। ফলে সে সব জায়গায় যানজট থাকলেও সাধারণ মানুষকে তেমন ভুগতে হয়নি।

আলোয় সজ্জিত উত্তর কলকাতা।
যানবাহনের মধ্যে মেট্রোকে ভিড়ের চাপ সহ্য করতে হলেও শহরের বাদবাকি যানে ভিড় তেমন ছিল না। আসলে কলকাতার অধিকাংশ নামীদামি পূজা মেট্রো স্টেশন থেকে খুব একটা দূরে নয়। উত্তরের বিখ্যাত পুজোগুলির সঙ্গে দক্ষিণের বিখ্যাত পুজোগুলির যোগাযোগ সব চেয়ে সহজ হয়েছে মেট্রোর দৌলতে।
তা ছাড়া যানজট এড়িয়ে কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছে যাওয়ার সব চেয়ে ভালো মাধ্যম মেট্রো। তাই মানুষ এই পরিবহণ ব্যবস্থাটিকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। পুজা উপলক্ষ্যে মেট্রো চলাচলের সময়সীমাও বাড়ানো হয়েছে।

কালীঘাট মেট্রো স্টেশনে ভিড়।
শুধু মহানগরীর সর্বজনীন পূজামণ্ডপ গুলিতেই নয়, ভিড় হচ্ছে শহরের বনেদিবাড়ির পূজাগুলিতেও। দক্ষিণে সাবর্ণদের আটচালা বাড়ির পুজোই হোক, বা মধ্য কলকাতার রানি রাসমণির বাড়ির পুজো, কিংবা শোভাবাজারের দেবেদের বাড়ির পুজো, দর্শনার্থী সমাগমে কেউই কম যায় না। মহানগরের বনেদিবাড়ির পূজার অবারিত দ্বার। ফলে পুজোর জন্য খ্যাত কলকাতার বনেদিবাড়িতে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা যাচ্ছে।
ছবি: রাজীব বসু।