টানা ন’ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর ইডি অফিস থেকে বেরোলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বেরিয়ে তিনি একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেই সাংবাদিক বৈঠকে যা বললেন অভিষেক।
জিজ্ঞাসাবাদ প্রসঙ্গে
‘তদন্তকারী অফিসারদের আমি কোনও দোষ দিচ্ছি না। ওঁরা ওঁদের কাজ করছেন। আগের দিন বলেছিলাম, ৮ ঘণ্টা জেরার নির্যাস হল শূন্য। আজ বলছি, ৯ ঘণ্টা জেরার নির্যাস হল মাইনাস টু। এর পরের দিন ডাকলে মাইনাস ফোর হয়ে যাবে।’
জিজ্ঞাসাবাদ হাইকোর্টে পেশ করতে চ্যালেঞ্জ
‘আমাকে ডাকা এখন প্রচলিত প্রথা হয়ে গিয়েছে। আবার দু’মাস বাদে ডাকতে পারে। আমাকে ও আমার স্ত্রীকে দু’বছরে নয় বার ডেকেছে। কী প্রমাণ করতে পেরেছে? কিচ্ছু না। ইডির কাছে দাবি করছি, আজ ওদের যা বলেছি তা যেন বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে হুবহু পেশ করে। কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে এটা আমার চ্যালেঞ্জ রইল।’
জটায়ু-ফেলুদা প্রসঙ্গ
‘জটায়ূ তাঁর বন্ধু ফেলুদাকে প্রশ্ন করেছিলেন, একই জিনিস আমরা এক ভাবে দেখছি , আর আপনি অন্য ভাবে দেখছেন, সেটা কী করে হয়? জবাবে ফেলুদা বলেছিলেন, আপনার আর আমার মধ্যে তফাত শুধু দৃষ্টিভঙ্গির। আপনারা আগে অপরাধী ঠিক করে নেন। পরে অপরাধ খোঁজেন। কিন্তু আমি আগে অপরাধ খুঁজি তার পর অপরাধীকে চিহ্নিত করি। ইডি-ও এখানে জটায়ূর মতোই আগে অপরাধী ঠিক করে নিচ্ছে। আগে অপরাধ খুঁজছে না। হয়তো তাই তারা অপরাধের গভীরে পৌঁছতে পারছে না।’
সারদা-নারদা প্রসঙ্গে
‘৮ বছর ধরে সারদা মামলার তদন্ত হচ্ছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কী হয়েছে? গত ১৪ মাস ধরে জেল হেফাজতে রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বিরুদ্ধে কী প্রমাণ হয়েছে? আসলে ইডি-সিবিআই যে ভাবে ডাকাডাকি করছে তা একটা প্রথা হয়ে গিয়েছে। ভোট আসলে ডাকাডাকি করবে। আবার থেমে যাবে। এই ক’দিন আগে ধূপগুড়িতে বিজেপি হেরেছে, লোকসভা ভোট আসছে, তাই ডাকাডাকি করছে। কিন্তু ইডি-সিবিআইয়ের তদন্তে কেউ ন্যায় বিচার পেয়েছেন, তা বলতে পারবেন না। সারদা, রোজভ্যালিকাণ্ডে যাঁদের টাকা মার গিয়েছে, তারা তো এখনও বিচার পাননি। আর যাঁরা টিভি ক্যামেরায় টাকা নিয়েছেন, তাঁরা বিজেপিতে যোগ দিলেও সাত খুন মাফ।’
লিপ্স অ্যান্ড বাউন্স প্রসঙ্গ
‘হ্যাঁ, আমি এখনও লিপ্স অ্যান্ড বাউন্সের সিইও। শিক্ষা দুর্নীতির ১০ পয়সা ওই কোম্পানিতে ঢুকেছে, তা ইডি প্রমাণ করুক। চ্যালেঞ্জ করছি, কোনও দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারবে না সেন্ট্রাল এজেন্সি।’
(আরও পড়ুন প্রাথমিক টেট-এর তারিখ ঘোষণা পর্ষদের, বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই)
‘গ্রেফতার হবেন শুভেন্দু’
‘টেলিভিশনে টাকা নিতে দেখা গিয়েছে। অথচ কোনও বিচারপতি বলেননি, ওঁকে ডেকে পাঠাও। আমি বলব, যাঁরা নারদে অভিযুক্ত, তাঁদের সবাইকে গ্রেফতার করুন। শুরুটা হোক শুভেন্দু অধিকারীকে দিয়ে। আমি বলে দিচ্ছি, এর পর এনডিএ সরকার গিয়ে ‘ইন্ডিয়া’ ক্ষমতায় আসবে। তখন গ্রেফতার হবেন শুভেন্দু।’
ধূপগুড়ি খোঁচা
‘কিন্তু এ ভাবে আমাকে ইডি দিয়ে ডেকে পাঠিয়ে ধূপগুড়ি পুনরুদ্ধার হবে না। আমিও ধূপগুড়ির রেজাল্ট নিয়ে বলছি দেখ কেমন লাগে? কিন্তু তফাতটা হল আমি ইডির মতো কোনও কেন্দ্রীয় সংস্থাকে ব্যবহার করে এ কথা বলছি না। আমি রাজনৈতিক ভাবে জিতে এ কথা বলছি।’