কলকাতা: উচ্চাঙ্গসংগীতশিল্পী পণ্ডিত বিজয়কুমার কিচলু প্রয়াত হলেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৩। পণ্ডিত কিচলুর প্রয়াণে সংগীতজগতে অপূরণীয় ক্ষতি হল।
আগরা ঘরানার এই শিল্পী দীর্ঘদিন ধরে কিডনির সমস্যা-সহ বার্ধক্যজনিত নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। শেষ পর্যন্ত শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি ইহলোক ত্যাগ করলেন। শিল্পীর অনুরাগীরা যাতে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে পারেন তার জন্য তাঁর দেহ রবিবার ১২টা নাগাদ রবীন্দ্র সদনে শায়িত থাকবে। তার পর হবে তাঁর শেষকৃত্য।
১৯৩০ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর অধুনা উত্তরাখণ্ডের আলমোড়ায় জন্ম বিজয় কুমার কিচলু। পড়াশোনা ইলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে। পড়াশোনার ফাঁকেই তিনি শাস্ত্রীয় সংগীতে পাঠ নিতে থাকেন। ডাগর ভ্রাতৃদ্বয়ের কাছে ধ্রুপদ এবং লতাফৎ হুসেন খানের কাছে খেয়াল শেখেন। আগরা ঘরানার শিল্পী হিসাবে নামডাক হয় বিজয় কুমার কিচলুর। ভাই রবি কুমার কিচলুকে নিয়ে শাস্ত্রীয় সংগীতে দ্বৈত শিল্পী হিসাবে বিখ্যাত হয়ে ওঠেন বিজয়।
১৯৫৫ সালে ব্রিটিশ শিপিং কোম্পানিতে চাকরি নিয়ে কলকাতায় আসেন বিজয় কুমার কিচলু। তখন থেকেই আমৃত্যু তিনি কলকাতাতেই থেকে গেলেন। কলকাতায় কিছু দিনের মধ্যেই পণ্ডিত কিচলুর হৃদ্যতা গড়ে ওঠে পণ্ডিত এ কানন, জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ, কুমারপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মতো শিল্পীর সঙ্গে। তাঁদেরই উদ্যোগে পরিবেশিত হয় ক্যালকাটা মিউজিক সার্কেলের মতো সংগীতাতানুষ্ঠান।
পণ্ডিত কিচলুর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শোকবার্তায় তিনি লিখেছেন, “বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী পণ্ডিত বিজয় কিচলুর প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। আগ্রা ঘরানার শিল্পী বিজয় কিচলু ছিলেন আইটিসি সংগীত রিসার্চ অ্যাকাডেমির কর্ণধার। অগণিত নবীন শিল্পী তাঁর প্রশিক্ষণে আজ লব্ধপ্রতিষ্ঠ। তাঁর প্রয়াণে সঙ্গীতজগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল। আমি বিজয় কিচলুর পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।”
পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন পণ্ডিত বিজয় কুমার কিচলু। এ ছাড়াও সংগীত নাটক রিসার্চ অ্যাকাডেমির স্বীকৃতি লাভ করেছেন তিনি। সম্মানিত হয়েছেন নানা উপাধি ও সম্মানে। তিনি ছিলেন সংগীত রিসার্চ অ্যাকাডেমির জনক ও একজিকিউটিভ ডিরেক্টর।
আরও পড়ুন
তুলসীদাস বলরামের ছিল বৈচিত্র্য, বহুমুখিতা আর উদ্ভাবনী ক্ষমতা