কলকাতা: ওড়িশায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় ক্রমশ বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। শুক্রবার সন্ধ্যার এই দুর্ঘটনার জন্য রেলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে বাংলার আহত ও নিহতদের পরিবারের জন্য আর্থিক সাহায্য ঘোষণাও করলেন তিনি।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ওড়িশায় দুর্ঘটনার কবলে বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস, শালিমার-চেন্নাই সেন্ট্রাল করমণ্ডল এক্সপ্রেস এবং একটি মালগাড়ি। শনিবার সকালে দুর্ঘটনাস্থলে যান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা। দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন তিনি।
ওড়িশা সরকারের পক্ষ থেকে কনভয়ে করে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয় ঘটনাস্থলে। ঘটনাস্থল থেকেই মুখ্যমন্ত্রী ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেন। তিনি জানান, এই রাজ্যের নিহতদের পরিবার পিছু ৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে। গুরুতর আহতদের ১ লক্ষ টাকা ও অল্প আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, উদ্ধার হওয়া যাত্রীদের রাজ্যে ফেরানোর জন্য পাঠানো হচ্ছে বাস। মেদিনীপুর থেকে এসেছেন ৫০ জন্য অফিসারদের একটি টিম।
এ দিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “মেদিনীপুর থেকে মেডিক্যাল টিম এসেছে ওড়িশায়। দুর্ঘটনার পিছনের নিশ্চয় কিছু রয়েছে। ভাল করে দুর্ঘটনার তদন্ত হোক”। রেলমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েই এ দিন রেলের সমালোচনা করেছেন তিনি। এই দুর্ঘটনাকে ‘শতাব্দীর সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা’ আখ্যা দিয়ে রেলকে তোপ দাগতেও ছাড়েননি মমতা। রেলমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েই তিনি বলে দেন, “আমি তিন বছর রেলমন্ত্রী হিসেবে কাজ করেছি। কিন্তু এখন মনে হয় রেলে নিজেদের মধ্যে কোনো কো-অর্ডিনেশন নেই। কী ভাবে এমন ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটল তার ভালো করে তদন্ত হোক”।
তিনি আরও বলেন, “করমণ্ডল এক্সপ্রেসে কোনো সংঘর্ষ প্রতিরোধী যন্ত্র ছিল না। আমি যখন রেলমন্ত্রী ছিলাম, তখন আমি একটা অ্যান্টি-কলিশন ডিভাইস চালু করেছিলাম। একই ট্র্যাকে একটি নির্দিষ্ট দূরত্বে চলা ট্রেনগুলিকে থামাতে সাহায্য করে ওই অ্যান্টি-কলিশন ডিভাইস। যদি ওই ডিভাইস থাকত, তবে হয়তো এত বড়ো সংঘর্ষ হতো না। এই ধরনের প্রযুক্তি প্রয়োগ করে এই ঘটনা এড়ানো যেত।”
উল্লেখ্য, শুক্রবার বাহানাগা স্টেশনে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে তিনটি ট্রেন। লাইনচ্যুত হয়েছে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ১৫টি বগি। এ ছাড়াও হাওড়া-বেঙ্গালুরু সুপারফাস্টের ৩-৪টি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। একটি মালগাড়ির কয়েকটি কামরাও লাইনচ্যুত হয়েছে। এই দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে অন্তত ২৮০, আহত বহু। মৃত এবং আহত দুইয়ের সংখ্যাই বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে অন্তত ২৮০, আহত ৬৫০