নয়াদিল্লি: মার্কিন শর্ট-সেলার ফার্ম হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্টের জেরে বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না আদানি গ্রুপের। বৃহস্পতিবার সংসদে, আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের তদন্তের দাবিতে সরব বিরোধীরা। সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের পাশাপাশি এ বার যৌথ সংসদীয় কমিটি গড়ার দাবি তুললেন কংগ্রেস, তৃণমূল, বাম এবং শিবসেনা-সহ বেশির ভাগ বিরোধী দলের সাংসদেরা।
সংকটে গরিবের সঞ্চয়!
বিরোধীদের দাবি, “কোটি কোটি ভারতীয়র সঙ্গে ‘প্রতারণা’ করেছে আদানি গোষ্ঠী। কষ্টার্জিত অর্থ নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ওই সংস্থার মাধ্যমে এলআইসি বা স্টেট ব্যাঙ্কের তহবিলে বিনিয়োগ হয়েছে, ঋণ দেওয়া হয়েছে, যেখানে সাধারণ মানুষের জীবনভর উপার্জনের সঞ্চয় রয়েছে”।
হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরই শেয়ার বাজারে নজিরবিহীন ধাক্কা খেয়েছে আদানি। প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে বন্ড। বুধবার আদানি এন্টারপ্রাইজেসের ২০ হাজার কোটি টাকার নতুন শেয়ার ছাড়ার (এফপিও) প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে গিয়েছে। পর দিনই আদানি গোষ্ঠীর সংকটের জন্য একটি যৌথ সংসদীয় কমিটি বা সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে তদন্তের দাবি জানাল কংগ্রেস এবং অন্য বিরোধী দলগুলি।
এ ব্যাপারে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে বলেন, বিধি ২৬৭-র অধীনে সংসদে নোটিশ দিয়েছিল বিরোধীরা। এলআইসি, পাবলিক সেক্টর ব্যাঙ্ক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির আদানি গ্রুপের বিভিন্ন সংস্থায় বিনিয়োগ এবং সেগুলির বাজার মূল্য হারানোর বিষয়ে আলোচনার দাবি জানানো হয়েছিল। কিন্তু আমাদের নোটিশগুলি প্রত্যাখ্যান করা হয়। যখন আমরা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি উত্থাপন করি, তখন আলোচনার জন্য সময় দেওয়া হয় না। এলআইসি, এসবিআই এবং অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিতে গরিব মানুষের টাকা রয়েছে। সেই টাকা নির্বাচিত সংস্থাগুলিতে ঢেলে দেওয়া হচ্ছে”।
কংগ্রেস সভাপতির সংযোজন, “হয় একটি যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠন করতে হবে অথবা সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির তত্ত্বাবধানে এই তদন্ত করা উচিত”।
হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্টের জের
সম্প্রতি গৌতম আদানির সংস্থার বিরুদ্ধে ওঠা কারচুপির অভিযোগকে কেন্দ্র করে দেখা দিয়েছে চরম সংকট। প্রভাব পড়েছে সংস্থার শেয়ারে। আদানির সংস্থার বিরুদ্ধে শেয়ার ‘স্টক ম্যানিপুলেশন’ এবং ‘অ্যাকাউন্টিং জালিয়াতির’ অভিযোগ তুলেছে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। তারা জানিয়েছে, বিপুল পরিমাণ ঋণের বোঝা রয়েছে আদানি গোষ্ঠীর ঘাড়ে। তাছাড়া তাদের শেয়ারের ভ্যালুয়েশনও মাত্রাতিরিক্ত। ফলে যে কোনো সময়ে ভেঙে পড়তে পারে তাসের ঘর। মার্কিন সংস্থার ভয়ানক রিপোর্টের পরেই টলে গিয়েছে আদানি গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থার শেয়ার।
আরও পড়ুন: হঠাৎ পারদ পতন, ফিরল শীতের আমেজ