নয়াদিল্লি: ৯ ডিসেম্বর বেঙ্গালুরুর ইঞ্জিনিয়ার অতুল সুভাষের আত্মহত্যার পর তাঁর চার বছরের ছেলের হেফাজত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন তাঁর মা, অঞ্জু মোদী।
সুভাষের মৃত্যুর আগে রেখে যাওয়া ভিডিও এবং চিঠিতে স্ত্রী নিকিতা সিংহানিয়া ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তোলা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টে হেবিয়াস করপাস আবেদন করেছেন অঞ্জু মোদী। যেখানে তিনি দাবি করেছেন যে নাতি কোথায় রয়েছে, তা এখনও অজানা। আবেদনপত্রে জানানো হয়েছে, নিকিতা সিংহানিয়া ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা—যাঁরা বর্তমানে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে আছেন—শিশুটির সঠিক অবস্থান প্রকাশ করেননি।
পুলিশকে নিকিতা জানিয়েছেন, শিশুটি ফরিদাবাদের একটি বোর্ডিং স্কুলে ভর্তি এবং তাঁর কাকা সুশীল সিংহানিয়ার তত্ত্বাবধানে রয়েছে। কিন্তু সুশীল সিংহানিয়া এই বিষয়ে কোনও তথ্য জানাতে অস্বীকার করেছেন।
বিচারপতি বিবি নাগরত্ন এবং বিচারপতি এন কোটেশ্বর সিংহের বেঞ্চ উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা এবং কর্নাটক সরকারের কাছে এ বিষয়ে দ্রুত প্রকৃত তথ্য প্রকাশ্যে আনতে নির্দেশ দিয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারিত হয়েছে ৭ জানুয়ারি।
অতুল সুভাষের আত্মহত্যার ঘটনায় নিকিতা সিংহানিয়া, তাঁর মা নিশা সিংহানিয়া এবং ভাই অনুরাগ সিংহানিয়াকে কর্নাটক পুলিশ আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করেছে। তাঁরা বর্তমানে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন।
অঞ্জু মোদী এবং সুভাষের বাবা পবন কুমার অভিযোগ করেছেন যে, নিকিতা এবং তাঁর পরিবার মিথ্যা মামলার মাধ্যমে সুভাষকে হয়রানি করেছিল এবং আর্থিক দাবি জানিয়েছিল। পবন কুমার প্রকাশ্যে নাতির হেফাজতের দাবিও করেছেন।
নিকিতার কাকা সুশীল সিংহানিয়া সুপ্রিম কোর্টে গ্রেফতারি এড়াতে জামিনের আবেদন করেন। তাঁর আইনজীবী জানিয়েছেন, সুশীলের বয়স ৬৯ এবং তিনি দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতায় ভুগছেন। এই প্রেক্ষিতে, এলাহাবাদ হাইকোর্ট জামিন মঞ্জুর করে, শর্তসাপেক্ষে ৫০,০০০ টাকার ব্যক্তিগত বন্ড এবং পাসপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
অতুলের ভাই বিকাশ কুমার জানিয়েছেন, সুভাষের অস্থি বিসর্জন না দিয়ে তাঁরা ন্যায়ের জন্য লড়াই চালিয়ে যাবেন। তাঁর কথায়, “আমার ন্যায়বিচার পাওয়ার আগে পর্যন্ত আমরা তাঁর অস্থি বিসর্জন দেব না। এছাড়াও আমরা আমার ভাইপোর নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। তাঁকে আমরা বহু দিন ধরে দেখতে পাইনি। তাকে আমরা দ্রুত নিজেদের কাছে ফেরাতে চাই”।
এই ঘটনায় শিশুটির নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। সুভাষের পরিবার সুপ্রিম কোর্টের দ্রুত হস্তক্ষেপের মাধ্যমে যথোপযুক্ত নির্দেশের আশা করছে।
আরও পড়ুন: বেঙ্গালুরু ইঞ্জিনিয়ার আত্মহত্যা মামলা: হেনস্থার অভিযোগ অস্বীকার স্ত্রী নিকিতা সিংহানিয়ার