নয়াদিল্লি: মোদী পদবী নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগ। তিন বছর আগের সেই মন্তব্যের জেরে দায়ের হওয়া মামলায় বৃহস্পতিবার রাহুল গান্ধীর দু’বছরের কারাবাসের সাজা ঘোষণা। শুক্রবার কংগ্রেস নেতার সাংসদপদ খারিজ করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা লোকসভার সচিবালয়ের। তবে এ ভাবে সংসদের কোনো সদস্যের পদ খারিজ করা যায় কি না, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে কংগ্রেস।
গতকাল রাহুলের কারাবাসের সাজা ঘোষণার পরই দেশ জুড়ে বিক্ষোভে নেমেছে কংগ্রেস। তার পরে এ দিন লোকসভার সচিবালয় রাহুলের সদস্যপদ খারিজ করে বিজ্ঞপ্তি জারি করল।
এ বিষয়ে শুক্রবার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে লোকসভা সচিবালয়। যাতে বলা হয়েছে, মোদী পদবি তুলে আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে বৃহস্পতিবার গুজরাতে সুরাত জেলা আদালত রাহুলকে ২ বছর জেলের সাজা দিয়েছিল। তারই ভিত্তিতে ভারতীয় সংবিধানের ১০২(১)-ই অনুচ্ছেদ এবং জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-র ৮ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ করা হল।
বিজ্ঞপ্তির প্রতিক্রিয়ায়, এই সিদ্ধান্তকে ভুল বলে অভিহিত করেছেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা মনীশ তেওয়ারি। তাঁর কথায়, “লোকসভা সচিবালয় কোনো সাংসদকে অযোগ্য ঘোষণা করতে পারে না। রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে পরামর্শ করে এটি করতে হবে।”
কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, “বিজেপি বরাবরই ওঁর (রাহুল গান্ধী) সাংসদপদ বাতিল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। সত্যি কথা যাঁরা বলেন তাঁদের সংসদে রাখতে চায় না ওরা। তবে আমরা সংসদের বাইরেও সরব হব। আমরা জেপিসি-র দাবি চালিয়ে যাব। দরকারে গণতন্ত্র বাঁচাতে জেলে যাব। দলীয় নেতাদের নিয়ে বৈঠকে আগামী দিনের রণনীতি তৈরি হবে”।
কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়রাম রমেশ বলেন, “আমরা এই লড়াই আইনি এবং রাজনৈতিক, উভয় ভাবেই লড়ব। আমরা ভয় পাচ্ছি না বা মুখ বন্ধ করেও থাকব না। আদানি কেলেঙ্কারিতে জেপিসি চেয়েছিলাম, পরিবর্তে রাহুল গান্ধীকে সংসদে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে”।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পদবি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ২০১৯ সালের সেই ফৌজদারি মানহানির মামলায় বৃহস্পতিবার রায় শুনিয়েছে গুজরাতের সুরাতের একটি আদালত। দু’বছরের কারাদণ্ড এবং ১৫ হাজার টাকার জরিমানার সাজা শুনিয়েছে আদালত। তবে আপাতত এক মাসের জন্য রাহুলকে জামিন দেওয়া হয়েছে যাতে তিনি উচ্চ আদালতে এই নির্দেশের বিরুদ্ধে আবেদন জানাতে পারেন। আর এরই মধ্যে তাঁর সাংসদপদ খারিজের বিজ্ঞপ্তি নিয়ে নতুন করে শোরগোল।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় এজেন্সির অপব্যবহারের অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টে ১৪টি বিরোধী দল, শুনানি ৫ এপ্রিল