কলকাতা: লোকসভা-সহ সব নির্বাচন একসঙ্গে করা যায় কি না, তা নিয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলির মতামত জানতে চেয়েছিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। সে ব্যাপারেই ‘এক দেশ এক ভোট’ সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের কমিটির সচিব নীতেন চন্দ্রকে একটি চিঠি দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে তিনি স্পষ্ট ভাবেই জানিয়ে দিয়েছেন, এই প্রস্তাব গণতন্ত্র ও সংবিধানের পরিপন্থী।
প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে ‘এক দেশ, এক ভোট’ সংক্রান্ত কমিটির কাছে একটি চিঠিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “আমরা একযোগে নির্বাচনের সঙ্গে একমত নই। ১৯৫২ সালে, লোকসভা নির্বাচন এবং বিধানসভা নির্বাচন একই সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এটি বহু বছর ধরে চলতে থাকলেও পরবর্তীতে তা টিকিয়ে রাখা যায়নি”।
তিনি আরও বলেন, “একসঙ্গে কেন্দ্র এবং রাজ্য নির্বাচন না করা ওয়েস্টমিনস্টার শাসন ব্যবস্থার একটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য। এই পরিবর্তন করা উচিত নয়. সংক্ষেপে, একযোগে নির্বাচন না করা ভারতীয় সাংবিধানিক ব্যবস্থার মৌলিক কাঠামোর অংশ”।
আপত্তির কথা জানিয়ে চিঠির শেষে মমতা লেখেন, “আমি দুঃখিত যে এক দেশ এক ভোট ধারণার সঙ্গে একমত হতে পারছি না। আমরা এই প্রস্তাবকে সমর্থন করছি না।” চিঠিতে মমতা প্রথমেই ‘এক দেশ’ ধারণাটির সারবত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। জানান যে, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোবিশিষ্ট দেশে একটি কেন্দ্রীয় সরকার ছাড়াও একাধিক সরকার রয়েছে। এই প্রসঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, তার পরেও ‘এক দেশ’ বা ‘ওয়ান নেশন’ ধারণায় কী ভাবে আসা হচ্ছে? চিঠিতে মমতা লেখেন, “আমি স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে। তাই আমি আপনাদের (কেন্দ্র) এই পরিকল্পনারও বিরুদ্ধে।”
প্রসঙ্গত, কোবিন্দের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির কাজ হল লোকসভা, বিধানসভা, পুরসভা এবং পঞ্চায়েতগুলির জন্য একযোগে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা বিবেচনা করা এবং সুপারিশ করা। কমিটি সংবিধান সংশোধনের জন্য রাজ্যগুলির অনুমোদনের প্রয়োজন হবে কি না তাও খতিয়ে দেখবে।
আরও পড়ুন: এ বার হাইকোর্টের ২ বিচারপতির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়