চারটি নতুন শ্রম কোড বাতিল, নিয়মিত সরকারি নিয়োগ এবং ন্যূনতম মজুরি সহ ১৭ দফা দাবিকে সামনে রেখে আজ, বুধবার দেশজুড়ে ভারত বন্ধ পালিত হচ্ছে। ১০টি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নের যৌথ মঞ্চ এই বন্ধ ডেকেছে, যার সঙ্গে হাত মিলিয়েছে কৃষক সংগঠন ও গ্রামীণ শ্রমিক সংগঠনগুলিও।
পর্যবেক্ষকদের মতে, এই বন্ধে প্রায় ২৫ কোটি শ্রমিক-কর্মচারী অংশ নিয়েছেন, যার জেরে ব্যাহত হয়েছে ব্যাঙ্ক পরিষেবা, পোস্টাল অপারেশন, বিদ্যুৎ, খনির কাজ, পরিবহণ এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র।
কেন এই ধর্মঘট?
এই বন্ধের মূল কারণ কেন্দ্রীয় সরকারের পাশ করা চারটি নতুন শ্রম কোড, যা শ্রমিকদের অধিকার খর্ব করবে বলে ট্রেড ইউনিয়নগুলির দাবি।
তাঁদের অভিযোগ:
- নতুন কোডে কাজের সময় বাড়ানো,
- ইউনিয়ন গঠনের অধিকার দুর্বল করা,
- ধর্মঘটের পথ কঠিন করে তোলা হয়েছে।
এ ছাড়াও, অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের পুনর্নিয়োগ এবং নতুনদের জন্য সরকারি চাকরির দরজা বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রবণতার বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দিয়েছে সংগঠনগুলি।
বিশেষত, রেল, শিক্ষা, ইস্পাত ও খনিজ ক্ষেত্রে অবসরপ্রাপ্তদের পুনর্নিয়োগের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রবল। দেশের জনসংখ্যার ৬৫ শতাংশ যেখানে ৩৫ বছরের নিচে, সেখানে ২০-২৫ বছর বয়সি যুবাদের মধ্যে বেকারত্বের হার সর্বোচ্চ।
কী চাইছেন আন্দোলনকারীরা?
ধর্মঘটকারী সংগঠনগুলি শ্রমমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্যর কাছে ১৭ দফা দাবিপত্র জমা দিয়েছে। মূল দাবিগুলি হল:
- চারটি শ্রম কোড প্রত্যাহার
- চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ ও বেসরকারিকরণ বন্ধ
- নতুন সরকারি চাকরি তৈরি ও নিয়মিত নিয়োগ
- জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ₹২৬,০০০ করা
- গ্রামীণ রোজগার প্রকল্প (MGNREGA)-এর সম্প্রসারণ এবং শহরেও এর অনুরূপ প্রকল্প চালু
- ফসলের জন্য সুয়োগ্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (MSP) প্রদান (স্বামীনাথন কমিশনের C2 + 50% সূত্র অনুযায়ী)
- কৃষিঋণ মুকুব
#WATCH | Left parties' unions participate in the 'Bharat Bandh' by taking out a foot march in Jadavpur, Kolkata.
— ANI (@ANI) July 9, 2025
The 'Bandh' has been called by 10 central trade unions, alleging that the central government is pushing economic reforms that weaken workers' rights. pic.twitter.com/WbGnQYAdXD
প্রভাব পড়েছে কোন কোন রাজ্যে?
AITUC-র সাধারণ সম্পাদক অমরজিত কৌর জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, ঝাড়খণ্ড, কর্নাটক, তামিলনাড়ু ও বিহার থেকে ব্যাপক সাড়া মিলেছে।
ব্যাঙ্ক, বিদ্যুৎ, ডাকঘর, তামা ও কয়লাখনির কাজ বিপর্যস্ত হয়েছে। পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও রাজস্থানে কৃষক সংগঠনগুলি সম্পূর্ণ সংহতি জানিয়ে রাস্তায় নেমেছে।
দক্ষিণ দিনাজপুরে বংশীহারিতে ভারত বনধের সমর্থনে রাস্তা অবরোধকারী সিপিএম নেতাকে চড় মারার অভিযোগ পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে।শুধু চড় মারাই নয়, মাজেদার রহমান নামে ওই সিপিএম নেতাকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। এই নিয়ে সরব হয়েছে বামেরা।
সরকারি প্রতিক্রিয়া
সরকারের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও বিশদ প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে ট্রেড ইউনিয়নগুলি অভিযোগ করেছে, তাঁদের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনা করতে রাজি নয় কেন্দ্র।