ভারতের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক চিত্র বেশ উদ্বেগজনক। গত পাঁচ ত্রৈমাসিকের মধ্যে এই প্রথমবার আর্থিক বৃদ্ধির হার সর্বনিম্নে পৌঁছেছে। শুক্রবার ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিক্যাল অফিস (এনএসও) প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালের এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে দেশের জিডিপি বৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৬.৭ শতাংশ। গত বছর একই সময়ে এই হার ছিল ৮.২ শতাংশ। অর্থাৎ অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ধীরগতির দিকে যাচ্ছে এবং এর অন্যতম কারণ হিসাবে কৃষিক্ষেত্রে মন্দাকে দায়ী করা হচ্ছে।
গত বছরের শেষ ত্রৈমাসিকে আর্থিক বৃদ্ধি ৮.৪ শতাংশ ছুঁয়ে ফেলেছিল, যা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মতে ভারতের অর্থনীতির শক্তি প্রদর্শন করেছিল। তবে চলতি বছর এই চিত্র বদলেছে। জানুয়ারি-মার্চ ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধি ছিল ৬.২ শতাংশ, যা এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে আরও কমে এসেছে। যদিও ভারত এখনও বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল অর্থনীতির শিরোপা ধরে রেখেছে, কারণ চিনের বৃদ্ধি ছিল ৪.৭ শতাংশ।
এনএসও-র তথ্য অনুসারে, কৃষিক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, যা গত বছর ৩.৭ শতাংশ থেকে নেমে হয়েছে ২ শতাংশ। উৎপাদন ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার এখনও ৭ শতাংশের কাছাকাছি আছে, যা আশাব্যঞ্জক। তবে আবাসন এবং কর্মক্ষেত্রে মোট যুক্তমূল্য (জিভিএ) হ্রাস পেয়ে ৭.১ শতাংশে পৌঁছেছে, যা গত বছর ১২.৬ শতাংশ ছিল।
অর্থনীতিবিদদের মতে, দেশের অর্থনীতির প্রকৃত অবস্থা বুঝতে জিডিপি-র চেয়ে জিভিএ (মোট যুক্তমূল্য) বেশি কার্যকর মাপকাঠি। কারণ জিভিএ-র সঙ্গে কর ও ভর্তুকির নিট ফল যোগ করে জিডিপি পাওয়া যায়। তবে অন্যান্য লাভজনক ক্ষেত্রে যেমন বিদ্যুৎ, গ্যাস, জল সরবরাহে বৃদ্ধির হার ৩.৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ১০.৪ শতাংশ হয়েছে।
নির্মাণ ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখা গেছে, যেখানে গত বছরের ৮.৬ শতাংশ বৃদ্ধি এ বছর ১০.৫ শতাংশে পৌঁছেছে। তবে হোটেল, পরিবহণ, যোগাযোগ ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার প্রায় ৪ শতাংশ কমেছে। অর্থনীতিবিদরা যদিও আশাবাদী যে, এই আর্থিক বছরে মোট বৃদ্ধির হার ৭ শতাংশের কাছাকাছি থাকবে। কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাঙ্কের মুখ্য অর্থনীতিবিদ উপাসনা ভরদ্বাজের মতে, জিভিএ ভাল থাকায় কৃষি বাদে অন্যান্য ক্ষেত্রগুলিতে স্থিতিশীল উন্নতি হচ্ছে।
📰 আমাদের পাশে থাকুন
নিরপেক্ষ ও সাহসী সাংবাদিকতা টিকিয়ে রাখতে খবর অনলাইন আপনার সহায়তা প্রয়োজন। আপনার ছোট্ট অনুদান আমাদের সত্য প্রকাশের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
💠 সহায়তা করুন / Support Us