নয়াদিল্লি: দ্রুতগতিতে ধসেছে জোশীমঠের ভূমি (Joshimath sinking)। উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠ মাত্র ১২ দিনের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৫ সেন্টিমিটার ডুবে গিয়েছে বলে জানাল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ISRO)-র একটি রিপোর্ট।
প্রকাশ্যে ইসরো-র উপগ্রহ চিত্র
শেষ কয়েক দিন ধরে উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠে ক্রমশ ভয়াবহ আকার নিচ্ছে ভূমিধস। বাড়ছে আতঙ্ক। শয়ে শয়ে বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। প্রশাসনের তরফে ভেঙে ফেলা হচ্ছে ফাটল ধরা বাড়ি, হোটেল। এরই মধ্যে উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়ল চাঞ্চল্যকর তথ্য।
সার্বিক পরিস্থিতি দেখে অনুমান, শত শত বাড়ি মাটির তলায় চলে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এমনকী ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো-র ন্যাশনাল রিমোট সেন্সিং সেন্টার সম্প্রতি যে উপগ্রহ চিত্র প্রকাশ্যে এনেছে, সেখানেও ভূমিধসের ছাপ স্পষ্ট। যে বাড়িগুলিতে ফাটল দেখা দিয়েছে, সেই পরিবারকে ইতিমধ্যেই আশ্রয় শিবিরে নিয়ে যাচ্ছে প্রশাসন। এই উপগ্রহ চিত্র প্রকাশ্যে আসার পর জোশীমঠ খালি করার কাজে আরও তৎপর হয়েছে উত্তরাখণ্ড সরকার।
কী বলছে উপগ্রহ চিত্র
সম্প্রতি একটি উপগ্রহ চিত্রও প্রকাশ্যে এনেছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো-র ন্যাশনাল রিমোট সেন্সিং সেন্টার। মহাকাশ সংস্থাটি জানিয়েছে, আগের মাসগুলিতে ডুবে যাওয়ার হার অনেক কম ছিল। রিপোর্টে জানানো হয়েছে, গত ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত জোশীমঠের জমি অনেকটাই ধসেছে। এই সাত মাসে প্রায় ৯ সেন্টিমিটার ধসেছে জোশীমঠের ভূমি। যদিও গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি, অর্থাৎ মাত্র ১২ দিনে ওই শহরের ভূমিধসের হার হঠাৎ করে বেড়ে গিয়েছে। যা ৫.৪ সেমি। যে কারণে গাড়োয়াল হিমালয়ের এই জনপদে বিপর্যয় এবং অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
আর্মি হেলিপ্যাড এবং একটি মন্দিরের আশেপাশের অঞ্চলে মধ্য জোশীমঠের মাটির দ্রুত স্থানান্তর ঘটেছে। ইসরো-র রিপোর্টে বলা হয়েছে, “নিম্নপতনের শীর্ষস্থানটি ২ হাজার ১৮০ মিটার উচ্চতায় জোশীমঠ-আউলি রোডের কাছে অবস্থিত।”
ত্রাণ শিবিরে স্থানান্তর
প্রতি মুহূর্তে নতুন নতুন জায়গায় ফাটল ধরছে। বিপজ্জনক বাড়িগুলিতে আরও চওড়া হচ্ছে ফাটল। জোশীমঠের তলিয়ে যাওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির দ্রুত পুনর্বাসনের জন্য একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠনের দাবি জানিয়ে হাইকোর্টে জমা পড়েছে আবেদন। বৃহস্পতিবার দিল্লি হাইকোর্টকে উত্তরাখণ্ড সরকারের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে পুনর্বাসন দিচ্ছে প্রশাসন। এলাকায় জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং রাজ্য বিপর্যয় প্রতিক্রিয়া বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
বদ্রীনাথের মতো জনপ্রিয় তীর্থস্থানগুলির প্রবেশদ্বার হিসাবে পরিচিত, ভবন এবং রাস্তাগুলিতে বিশাল ফাটল দেখা দেওয়ায় একটি বড়োসড়ো বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে “ডুবন্ত” মন্দির শহর। উপগ্রহ সমীক্ষা রিপোর্টের পর প্রায় ৪ হাজার মানুষকে ত্রাণ শিবিরে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। পাশাপাশি, উত্তরাখণ্ড সরকার জানিয়েছে, হোটেল এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও, ৬৭৮টি বাড়ি বিপদের প্রহর গুনছে।
আরও পড়ুন: এবার একই সঙ্গে করা যাবে দুটি ডিগ্রি, নয়া নিয়ম UGC-র