চেন্নাই: ভারতে সবুজ বিপ্লবের জনক বিখ্যাত কৃষিবিজ্ঞানী এম এস স্বামীনাথন প্রয়াত হলেন। পরিবারের সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ১১টা নাগাদ চেন্নাইয়ের তেনামপেটে তাঁর বাসভবনে মারা যান। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৮।
মৃত্যুকালে স্বামীনাথন রেখে গেলেন তাঁর তিন কৃতী কন্যাসন্তানকে। বড়ো সৌম্যা স্বামীনাথন এমএসএসআরএফ-এর (এমএস স্বামীনাথন রিসার্চ ফাউন্ডেশন) চেয়ারপারসন, মেজো মধুরা স্বামীনাথন ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউট-এর অর্থনীতির অধ্যাপক এবং ছোটো নিত্যা স্বামীনাথন ইস্ট অ্যাঞ্জালিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে জেন্ডার অ্যানালিসিসের লেকচারার ছিলেন। স্ত্রী মীনা গত বছরই প্রয়াত হন।
সংক্ষিপ্ত জীবনী
বিজ্ঞানী স্বামীনাথনের পুরো নাম মানকম্বু সম্বাসিবন স্বামীনাথন। জন্ম তামিলনাড়ুর তাঞ্জাভুর জেলায়। তিনি ছিলেন একাধারে কৃষিবিদ, কৃষিবিজ্ঞানী, উদ্ভিদ প্রজনন-বিশেষজ্ঞ, প্রশাসক এবং সবার উপরে একজন মানবতাবাদী। ভারতের কৃষিক্ষেত্রে বিপ্লব এনেছিলেন স্বামীনাথন। তিনিই ধানের বিভিন্ন উচ্চফলনশীল প্রজাতির চাষের উদ্ভাবন করেছিলেন আমাদের এই দেশে। আর এর ফলে দেশের স্বল্পআয়ী কৃষকদের আর্থিক অবস্থার প্রভূত উন্নতি হয়েছিল।
রাষ্ট্রপুঞ্জের পরিবেশ কর্মসূচি (ইউনাইটেড নেশনস্ এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম) অনুসারে এম এস স্বামীনাথন ‘ফাদার অফ ইকোনমিক ইকোলজি’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সবুজ বিপ্লবের সাফল্য ত্বরান্বিত করার জন্য গত শতকের ষাট ও সত্তরের দশকে তৎকালীন কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী সি সুব্রহ্মণ্যম ও জগজীবন রামের সঙ্গে একযোগে কাজ করেছিলেন এম এস স্বামীনাথন। রাসায়নিক-জীববিজ্ঞানগত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ধান ও গমের উৎপাদনশীলতা প্রভূত পরিমাণে বাড়ানোর দিশা দেখিয়েছিল সবুজ বিপ্লব।
ভারতবর্ষে উচ্চফলনশীল ধান ও গমের চাষ ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে পথিকৃৎ ছিলেন এম এস স্বামীনাথন। এ কারণে ১৯৮৭ সালে প্রথম বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়। এই পুরস্কারের টাকাতেই তিনি চেন্নাইয়ে প্রতিষ্ঠা করেন এমএস স্বামীনাথন রিসার্চ ফাউন্ডেশন (এমএসএসআরএফ)। এ ছাড়াও ১৯৭১ সালে তিনি রমন ম্যাগসেসে পুরস্কার এবং ১৯৮৬ সালে অ্যালবার্ট আইনস্টাইন ওয়ার্ল্ড সায়েন্স পুরস্কারও পান। ভারত সরকারের প্রদত্ত তিনটি অসামরিক পুরস্কার পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ ও পদ্মবিভূষণও পেয়েছেন স্বামীনাথন। এ ছাড়াও পেয়েছেন এইচ কে ফিরোদিয়া পুরস্কার, লাল বাহাদুর শাস্ত্রী জাতীয় পুরস্কার এবং ইন্দিরা গান্ধী পুরস্কার।
আরও পড়ুন