Home খবর দেশ ৩০ বছর পর আবার ফুটল পদ্ম! কাশ্মীরের ওয়ুলার হ্রদে ফিরল ‘নদরু’-র জৌলুস,...

৩০ বছর পর আবার ফুটল পদ্ম! কাশ্মীরের ওয়ুলার হ্রদে ফিরল ‘নদরু’-র জৌলুস, ফিরল জীবিকার আশা

কাশ্মীরের বান্দিপোরার ওয়ুলার হ্রদে ৩০ বছর পর আবারও ফুটল পদ্ম। সংরক্ষণ প্রকল্পের ফলে ফিরে এল ‘নদরু’ বা পদ্মডাঁটার চাষ। জীবিকা ফিরে পেল বহু পরিবার।

Lotus blooms in Kashmir’s Wular lake

কাশ্মীরের বান্দিপোরার ওয়ুলার হ্রদ যেন স্বপ্নের জগত! ৩০ বছর পর আবারও ফুলে উঠেছে হ্রদের জলে গোলাপি পদ্ম। স্থানীয় ভাষায় যার ডাঁটাকে বলা হয় ‘নদরু’। এক সময়ের হারিয়ে যাওয়া জীবিকা ফিরে পেয়ে চোখে জল বান্দিপোরার কৃষক পরিবারগুলোর।

এক সময় ওয়ুলার হ্রদ ছিল এশিয়ার বৃহত্তম মিঠা জলের হ্রদ, যেখানে পদ্ম ছিল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ১৯৯২ সালের বিধ্বংসী বন্যা সেই পদ্ম বপনকে থামিয়ে দিয়েছিল। নদীর সঙ্গে আসা পলির স্তূপ পদ্মবীজকে এতটাই গভীরে ঢেকে দিয়েছিল যে, সে আর জন্মাত না। বহু বছর চেষ্টাতেও কোনও ফল হয়নি।

কিন্তু হঠাৎই আশার আলো। ২০২০ সালে ওয়ুলার সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (WUCMA) হ্রদের পুনরুদ্ধার প্রকল্প শুরু করে। পলি সরানোর কাজ শুরু হয়। এবং তার ফলও মিলতে শুরু করে ২০২3-এ—ফুটে ওঠে প্রথম কিছু পদ্ম।

“আমার চোখই বিশ্বাস করছিল না,” বলেন বান্দিপোরার কৃষক আব্দুল রশিদ দার। “ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে পদ্মডাঁটা তুলতে যেতাম। এত বছর পরে আবার সেই ছবি ফিরে এল।”

সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষের জোনাল অফিসার মুদাসির আহমেদ জানান, “পলি সরানোর ফলে পদ্মের পুরনো বীজগুলি আবার আলো ও বাতাস পাচ্ছে। আমরা নতুন করে কিছু বীজ ছড়িয়েও দিয়েছি।”

ওয়ুলার হ্রদ, যেখানে সারা বছর ধরে কাজ পাওয়া কঠিন, সেখানে নদরু চাষের এই প্রত্যাবর্তন যেন আশীর্বাদ। আব্দুল আজিজ দার জানান, “এই চাষ হয় সেপ্টেম্বর থেকে মার্চের মধ্যে—ঠিক সেই সময়ে যখন অন্য কোনও কাজ পাওয়া যায় না।”

একইসঙ্গে চলছে হ্রদের পুনরুদ্ধার প্রকল্প। এখনো পর্যন্ত প্রায় ৭৯ লক্ষ কিউবিক মিটার পলি সরানো হয়েছে। জলধারার মুখে তৈরি হচ্ছে রিটেনশন বেসিন, যাতে ভবিষ্যতে পলি আর হ্রদে না জমে।

এখন শুধু সৌন্দর্য নয়, নদরু আবার হয়ে উঠেছে উপার্জনের মাধ্যম। পদ্মের এই প্রত্যাবর্তন যেন কাশ্মীরের প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের এক নতুন করে যোগসূত্র। এবং সেই সূত্রেই ওয়ুলারের ঘরে ঘরে ফিরে আসছে হারানো হাসি।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version