নয়াদিল্লি: সংসদ থেকে সুপ্রিম কোর্ট। আদানি ইস্যুতে তোলপাড় গোটা দেশ। আঁচ পড়েছে আমেরিকার শেয়ার মার্কেটেও। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদানির গত বছরের আর্থিক বিবৃতি এবং অন্যান্য নিয়ন্ত্রক ফাইলিংগুলি খতিয়ে দেখা শুরু করেছে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রক। এক সপ্তাহ আগে হিন্ডেনবার্গ-আদানি দ্বন্দ্ব শুরু হওয়ার পর এটাই সরকারের পক্ষ থেকে যাচাই-বাছাইয়ের প্রথম পদক্ষেপ বলে জানা গিয়েছে।
গত বুধবার, ইউএস-ভিত্তিক শর্ট-সেলার হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে জালিয়াতি এবং শেয়ারে কারচুপির অভিযোগ তুলেছিল। তার পরে আদানি গ্রুপের সমস্ত কোম্পানির বাজার মূলধনে প্রচুর ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে বন্ড। বুধবার আদানি এন্টারপ্রাইজেসের ২০ হাজার কোটি টাকার নতুন শেয়ার ছাড়ার (এফপিও) প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই এফপিও-র অনিয়মগুলি খতিয়ে দেখছে বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি (SEBI)।
তবে কোম্পানি আইনের “ধারা ২০৬”-এর অধীনে কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের নতুন পদক্ষেপটি বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে। এর আওতায় আদানিদের বছরের পর বছর জমা দেওয়া ব্যালেন্স শিট, লেজার ইত্যাদির মতো অন্যান্য ব্যবসায়িক লেনদেনের নথিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্সের ডিরেক্টর জেনারেলের নেতৃত্বে এই তদন্ত শুরু করা হয়েছে। পরিস্থিতির উপর নিরবচ্ছিন্ন ভাবে নজর রাখছে মন্ত্রক।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি গৌতম আদানির সংস্থার বিরুদ্ধে ওঠা কারচুপির অভিযোগকে কেন্দ্র করে দেখা দিয়েছে চরম সংকট। প্রভাব পড়েছে সংস্থার শেয়ারে। আদানির সংস্থার বিরুদ্ধে শেয়ার ‘স্টক ম্যানিপুলেশন’ এবং ‘অ্যাকাউন্টিং জালিয়াতির’ অভিযোগ তুলেছে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। তারা জানিয়েছে, বিপুল পরিমাণ ঋণের বোঝা রয়েছে আদানি গোষ্ঠীর ঘাড়ে। তাছাড়া তাদের শেয়ারের ভ্যালুয়েশনও মাত্রাতিরিক্ত। ফলে যে কোনো সময়ে ভেঙে পড়তে পারে তাসের ঘর। মার্কিন সংস্থার ভয়ানক রিপোর্টের পরেই টলে গিয়েছে আদানি গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থার শেয়ার।
হিন্ডেনবার্গের চাঞ্চল্য়কর রিপোর্ট সামনে আসার পরই আদানির সংস্থার শেয়ারে ধস নেমেছে। ব্লুমবার্গের তথ্য় অনুযায়ী, ১৭ জানুয়ারি আদানি গোষ্ঠীর মোট সম্পত্তি ছিল ১০ লক্ষ কোটি। বিশ্বের ধনীদের তালিকায় গৌতম আদানির স্থান ছিল তৃতীয়। কিন্তু হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টের পর ৩ ফেব্রুয়ারি তিনি নেমে এসেছেন ২১ নম্বরে। সম্পত্তির পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ৫ লক্ষ ৪ হাজার কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: সংসদে আদানি-বিতর্কের ঝড়! যৌথ সংসদীয় কমিটি, সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে তদন্তের দাবি বিরোধীদের