অন্যান্য রাজ্যেও কর্নাটক মডেল প্রয়োগ করা দরকার এবং এর জন্য সমমনা দলগুলিকে একটি সাধারণ ন্যূনতম কর্মসূচিতে (সিএমপি) কাজ করতে হবে। বিজেপি-কে পর্যুদস্ত করে কর্নাটকের কংগ্রেসের ক্ষমতা দখলের পর এমনটাই বার্তা দিলেন প্রবীণ রাজনৈতিক শরদ পওয়ার। মুম্বইয়ে সিপিআই নেতা ডি রাজার সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের সামনে এ কথা জানান এনসিপি প্রধান।
বৈঠকে উভয় নেতাই বিজেপির বিকল্প তুলে ধরার বিষয়ে আলোচনা করেন। পওয়ার বলেন, “কর্নাটক বিধানসভা নির্বাচন একটা বার্তা দিয়েছে। আমাদের অন্যান্য রাজ্যেও কর্নাটকের মতো পরিস্থিতি তৈরি করতে কাজ করতে হবে।” তিনি বলেন, অন্যান্য রাজ্যে সমমনা দলগুলোর একত্রিত হয়ে বিজেপিকে পরাজিত করা উচিত।
প্রবীণ রাজনৈতিক পওয়ার বলেন, “কংগ্রেস নিজেই কর্নাটকে বিজেপির বিকল্প হয়ে উঠেছে, তবে অন্যান্য রাজ্যে সমমনা দলগুলিকে একটি সাধারণ ন্যূনতম কর্মসূচিতে কাজ করতে হবে। আমরা এই দু’টি উদ্দেশ্যকে (কর্নাটকের মতো কৌশল তৈরি এবং সিএমপি) সামনে রেখে কাজ করব এবং আমরা এই প্রক্রিয়াটি শুরুও করে দিয়েছি”।
বিজেপি-কে হারাতে পারস্পরিক বোঝাপড়ার কথা বলেছেন ডি রাজাও। কর্নাটক নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে সিপিআই নেতা বলেন, “রাজ্য স্তরের কৌশল তৈরি করা যেতে পারে। এখন আমরা দিল্লিতে আলোচনার জন্য কিছুটা সময় নিতে পারি। বিজেপি পরাজিত হতে পারে এবং ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন এবং রাজ্য (মহারাষ্ট্র) নির্বাচনে হারতে পারে। বিজেপি অপরাজেয়, এমন মিথ ভেঙে গেছে”।
এ দিকে, কর্নাটকে কংগ্রেসের জয়ের পর ‘মমতা তত্ত্ব’কে সামনে রেখে বিরোধী জোটের ইঙ্গিত দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূলও। কর্নাটক বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ দাবি করলেন, “যে যেখানে বিজেপি-বিরোধী, সে সেখানে লড়ুক। তাঁদের সামনে রেখেই সারা ভারতে বিজেপি-বিরোধী জোট হতে পারে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই তত্ত্ব আরও বেশি প্রাসঙ্গিক এবং গ্রহণযোগ্য হল।”
প্রসঙ্গত, এই নিয়ে গত ৫ মাসের মধ্যে দ্বিতীয় বার বিজেপিকে হারিয়ে কংগ্রেস কোনো রাজ্য দখল করল। এই পরিবর্তন প্রথম লক্ষ করা গিয়েছিল হিমাচলপ্রদেশে। তার পরেই কর্নাটক। ২২৪ আসনের কর্নাটকে কংগ্রেস পেয়েছে ১৩৬ আসন, তাদের জোটসঙ্গী পেয়েছে ১টি। অন্য দিকে বিজেপি নেমে গিয়েছে ৬৫ আসনে। কুমারস্বামীর জেডিএস পেয়েছে ১৯টি আসন। কংগ্রেস একাই পেয়েছে ৪২.৯ শতাংশ ভোট। বিজেপি পেয়েছে ৩৬ শতাংশ। জেডিএস পেয়েছে ১৩.২৯ শতাংশ।
কর্নাটকের মতো ২২৪ আসনের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের ঘুরে দাঁড়ানোর এই লড়াই জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রেও যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। এখন দেখার, কর্নাটকের এই জয় ২০২৪ লোকসভার ক্ষেত্রে কোন রাস্তা তৈরি করে!