নয়াদিল্লি: দেশে একসঙ্গে নির্বাচন পরিচালনার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সভাপতিত্বে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে শনিবার। এই বৈঠকে যাবতীয় সম্ভাব্যতা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার রূপরেখা নির্ধারণ করা হবে। এ ছাড়া নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার কর্মসূচিও ঠিক করা হবে।
বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন তার আগে আবার ‘এক দেশ এক ভোট’ (ওয়ান নেশন ওয়ান ইলেকশন) নীতি কার্যকরের পক্ষে তৎপরতা মোদী সরকারের। এই নীতি কার্যকরের দিশা খুঁজতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। যে কমিটির নেতৃত্বে রাখা হয়েছে দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে।
নিজের সাম্প্রতিক ওড়িশা সফরের সময় ২৩ সেপ্টেম্বর বৈঠকের বিষয়ে জানিয়েছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। দেশের লোকসভা, রাজ্য বিধানসভা, স্থানীয় সংস্থা এবং পঞ্চায়েতগুলির জন্য একযোগে নির্বাচন করার সম্ভাবনা বিবেচনা করার জন্য গঠিত আট সদস্যের উচ্চ-স্তরের কমিটি গঠন শীঘ্রই সরকারের কাছে একটি রিপোর্ট পাঠাতে পারে। যেখান থেকে ভবিষ্যতের রূপরেখা নির্ধারণ করা হবে।
কারা রয়েছেন কমিটিতে
প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি কোবিন্দের নেতৃত্বে গঠিত এই কমিটিতে রয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, রাজ্যসভার প্রাক্তন বিরোধী নেতা গুলাম নবি আজাদ এবং অর্থ কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান এনকে সিং। এ ছাড়াও রয়েছেন লোকসভা সচিবালয়ের প্রাক্তন সদস্য সুভাষ সি কাশ্যপ, দেশের প্রাক্তন সলিসিটর জেনারেল হরিশ সালবে এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশনার সঞ্জয় কোঠারী।
লোকসভায় কংগ্রেস নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরীকেও এই কমিটিতে মনোনীত করা হয়েছিল কিন্তু তিনি এই কমিটির সদস্য হতে অস্বীকার করেন। বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ এই কমিটি গঠন এবং এর উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ইতিমধ্যেই।
কেন ‘এক দেশ এক ভোট’
কেন্দ্রের যুক্তি এর ফলে বিপুল অর্থের সাশ্রয় হবে। উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলিতে গতিও বাড়বে। একটি ভোটার তালিকাতেই দু’টি নির্বাচন হওয়ায় ফলে সরকারি কর্মীদের তা তৈরির কাজের চাপ কমবে। এছাড়া প্রতিবার ভোটের সময় আদর্শ আচরণ বিধির লাগু হয়। এর ফলে বার বার সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ থমকে যায়। ‘এক দেশ এক ভোট’ নীতি চালু হলে সেই সমস্যা আর থাকবে না।
সমস্যা কোথায়
এই ‘এক দেশ এক ভোট’ পদ্ধতির সমালোচনায় বিরোধী দলগুলি। মুম্বইয়ে ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধী নেতারা। তাঁদের মতে, এই নীতি নিয়ে মোদী সরকার ঘুরপথে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ধাঁচের ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং সংসদীয় গণতান্ত্রিক ভাবনার উপর আঘাত আসবে বলে বিরোধীদের অভিযোগ।
আরও পড়ুন: সংসদে ঘৃণ্য মন্তব্য বিজেপি এমপির, ব্যাপক আলোড়ন, দুঃখ প্রকাশ রাজনাথের