দেহরাদুন: সিলকিয়ারা টানেল বিপর্যয় পশ্চিম হিমালয়ের বাস্তুতন্ত্রের সংবেদনশীলতা এবং জটিলতার বিষয়গুলি পুরোপুরি স্পষ্ট করে দিয়েছে। এই এলাকায় বাস্তবায়িত সমস্ত প্রকল্পের পুঙ্খানুপুঙ্খ অডিট হওয়া উচিত। এ ছাড়াও, হিমালয় অঞ্চলে ভবিষ্যতের সমস্ত প্রকল্পগুলিকে বন্ধ করতে হবে এবং পেশাদারিত্বের সঙ্গে পরিবেশগত ঝুঁকি যাচাইয়ের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে। সুড়ঙ্গ সংকট মিটে যাওয়ার পর এমনটাই দাবি করেছেন বিরোধী দলের নেতা যশপাল আর্য।
বিরোধী দলনেতা যশপাল আর্য বলেছেন, সিলকিয়ারা টানেল ধস সংক্রান্ত কিছু বড়ো প্রশ্ন বিবেচনা করা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। কারণ, এই দুর্ঘটনায় হিমালয় অঞ্চলে নাগরিক নির্মাণ এবং অন্য প্রকল্পের পরিকল্পনা, নকশা এবং বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও পরিবেশগত মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার ব্যর্থতা প্রকাশ পেয়েছে।
উত্তরকাশীতে যে সুড়ঙ্গটি ভেঙে পড়েছিল, তা চারধাম প্রকল্পের অংশ। প্রকল্পের নির্মাণ কাজগুলি এমন ভাবে বরাদ্দ করা হয়েছে যাতে পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন সম্পূর্ণ ভাবে এড়ানো যায়। সুড়ঙ্গে কোনো ব্যাপক ভাবে স্বীকৃত নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য নেই বলে রিপোর্ট পাওয়া গেছে বলে দাবি করেন যশপাল।
জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের প্রাক্তন পরিচালক সত্যেন্দ্র সিংয়ের বক্তব্য উল্লেখ করে যশপাল বলেছেন, কোনো প্রকল্পে, মোট প্রকল্প ব্যয়ের ১০ শতাংশ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য রাখা হয়। এই টানেল প্রকল্পের মূল্য ১৪০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা খাতে ১৪০ কোটি টাকা থাকতে হবে। যদি তাই হয়, তা হলে এর জন্য কত বরাদ্দ ছিল? তাঁর দাবি, দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের কোনো প্রস্তুতি নেই। আসলে কোনো প্রাক-দুর্যোগ ব্যবস্থা নেই, দুর্ঘটনা ঘটে গেলেই তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়!
প্রসঙ্গত, উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটকে থাকা ৪১ শ্রমিককে বাইরে বের করে আনা হয় মঙ্গলবার রাতে। টানা ১৭ দিন ধরে আটকে থাকার পর সিলকিয়ারা টানেলে আটকে থাকা কর্মীদের একে একে বের করে আনা হয়। রাত্রি ৮টা নাগাদ আটকে থাকা শ্রমিকদের প্রথমজন বেরিয়ে আসেন। রাত ৮টা ৩৮ মিনিটের মধ্যে সম্পন্ন হয় উদ্ধারকাজ। স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেন তাঁদের পরিজনেরা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামী শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন। সেই খবর পেয়ে স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলে গোটা দেশ।