অবশেষে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (IMF) সামনে মাথা নত করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। আইএমএফের সঙ্গে আলোচনায় কোনো শর্ত মানতে রাজি ছিল না শাহবাজ সরকার। কিন্তু এখন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি দল পাকিস্তান ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিটি শর্তে সম্মতি জানাতে শুরু করেছে পাক সরকার।
রবিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা বিদ্যুতের ভর্তুকি বাতিল করে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির অনুমোদন দিয়েছে। বিদ্যুৎ-সহ বিভিন্ন ভর্তুকি প্রত্যাহার আইএমএফের শর্তের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ভার্চুয়াল মাধ্যমে আলোচনার আগে আইএমএফকে সন্তুষ্ট করতে পাকিস্তানের মন্ত্রীসভা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিদ্যুতে ভর্তুকি বাতিল করার ফলে পাকিস্তানি শিল্পের ওপর চাপ বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে শুধু বিদ্যুতের দামেই যে মূল্যস্ফীতি ঘটেছে তা নয়। পাকিস্তানে বিদ্যুতের পাশাপাশি অন্যান্য জিনিসের দামও আকাশ ছোঁয়া। পাকিস্তানে লিটার প্রতি দুধের দাম ২১০ টাকা ছাড়িয়েছে।
দুধ ছাড়াও, গত দুই দিনে পাকিস্তানে মুরগির দাম এক নিমেষে বেড়েছে ৩০-৪০ টাকা। ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে মুরগির দর ছিল ৩৯০-৪৪০ টাকা কেজি। যেখানে, জানুয়ারিতে প্রায় ৩৮০-৪২০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু এখন মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ৭৮০ টাকায়। অন্য দিকে, মুরগির বোনলেস পিস ১১০০ টাকা কেজি।
জানা গিয়েছে, খালি হওয়ার পথে পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রাভাণ্ডার। অর্থনৈতিক সংকটে পাকিস্তান। পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রা ভান্ডারের দেখভাল করে ওই দেশের প্রধান রাষ্ট্রীয় ব্যাঙ্ক স্টেট ব্যাঙ্ক অব পাকিস্তান (SBP)। বিশেষজ্ঞদের মতে, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ পাকিস্তানের কাছে গচ্ছিত বিদেশি মুদ্রায় আর কয়েকটা দিনই চলতে পারে পাকিস্তান। এমন একটা পরিস্থিতিতে
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল থেকে বড়ো ধাক্কা খেয়েছিলেন শেহবাজ। ১০ দিনের আলোচনার পরও ত্রাণ তহবিল দেওয়ার বিষয়ে স্পষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি আইএমএফ।
মিডিয়া রিপোর্টে প্রকাশ, দেশের অর্থনীতিকে পতনের মুখ থেকে বাঁচাতে আইএমএফের কাছে বেলআউট (পুনরুদ্ধার) চেয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু ১০ দিনের আলোচনার পর পাকিস্তান হতাশ হয়ে পড়ে। আইএমএফ বলেছিল, পাকিস্তানের রাজস্ব ঘাটতি এবং রাজস্বের মধ্যে বড়ো পার্থক্য রয়েছে। অন্য দিকে, পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের মতে, পাকিস্তানের অর্থসচিব হামিদ শেখ বলেছেন যে বৈদেশিক মুদ্রাভাণ্ডার শূন্য হওয়ার বিষয়ে আইএমএফের সঙ্গে ইতিমধ্যে একটি চুক্তি করা হয়েছে।