নয়াদিল্লি: বুধবার সংসদের নিরাপত্তায় বড় ধরনের ত্রুটির ঘটনা প্রকাশ্যে এল। লোকসভার কার্যক্রম চলাকালীন সেখানে প্রবেশ করেন দুই বহিরাগত। এই দুই ব্যক্তিই দর্শক গ্যালারি থেকে লাফিয়ে পড়ে। সংসদ সদস্যরা তাদের ধরে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে তুলে দেন। এই ঘনার পরেই দুপুর ২টো পর্যন্ত মুলতবি করা হয় লোকসভার কার্যক্রম।
সংসদ হামলার বার্ষিকীর দিনেই নিরাপত্তায় ত্রুটি ধরা পড়ল লোকসভার। লোকসভার দর্শক গ্যালারিতে বসে থাকা দুই ব্যক্তি হঠাৎ লাফিয়ে পড়ে নীচে। দুই যুবক বেঞ্চের দিকে দৌড়ানোর সময় সাংসদরা তাদের ধরে ফেলেন। দুই যুবকই এখন দিল্লি পুলিশের হেফাজতে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
২২ বছর আগে সংসদে হামলার স্মৃতি ফিরিয়ে দিয়েছে বুধবারের এই ঘটনা। এর আগে ২০০১ সালে এই ১৩ ডিসেম্বরেই সংসদে জঙ্গি হামলা হয়েছিল। এ বার আটক ওই দুই যুবক লোকসভায় ঢুকে ‘ধোঁয়াবাজি’ ছোড়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ।
ঘটনায় প্রকাশ, কংগ্রেস সাংসদ গুরজিৎ সিং আউজলা এক ব্যক্তিকে ধরে ফেলেন। সংসদের কার্যক্রম চলার সময় আউজলা বেঞ্চে বসে ছিলেন। কংগ্রেস সাংসদ এই ঘটনা নিজের চোখে দেখেছেন। তিনি বলেন, ‘সে যখন উপর থেকে লাফ দিল, আমি বসে ছিলাম। প্রচণ্ড শোরগোল সৃষ্টি হয়েছিল। একজন প্রথমে লাফ দিল তারপর অন্যজন লাফ দিল। তারা নিজের জুতো খুলে ফেলল, জুতোর মধ্যে কিছু ছিল। তাদের হাতেও কিছু ছিল এবং ধোঁয়া বের হচ্ছিল। সেটা একজনের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে বাইরে ফেলে দিলাম।’
প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, হামলাকারীরা হলুদ রঙের গ্যাস জাতীয় পদার্থ সভায় ছড়িয়ে দিচ্ছিলেন। এক বেঞ্চ থেকে অন্য বেঞ্চে লাফিয়ে লাফিয়ে ধোঁয়া ছড়াচ্ছিলেন তাঁরা। সেগুলিকে ‘ধোঁয়াবাজি’ বলে দাবি করা হচ্ছে। গ্যাস দেখে সভায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ওই ধোঁয়া বিষাক্ত হতে পারে, সেই আতঙ্কে ত্রস্ত হয়ে পড়েন সাংসদেরা। হামলাকারীরা স্লোগান দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। দুই সাংসদ দ্রুত তাঁদের ধরে ফেলেন এবং নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে তুলে দেন।
এক জন অমল শিন্ডে। তাঁর বাড়ি মহারাষ্ট্রে। অন্য জনের নাম নীলম সিংহ। তিনি হরিয়ানার বাসিন্দা বলে খবর। দিল্লি পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন সাগর শর্মা নামে এক জন। তিনিই পুরো ঘটনায় ‘নেতৃত্ব’ দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ।
দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, লোকসভার ভিতর থেকে যে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সংসদে কাউকে আক্রমণ করা নয়, কোনও একটি বিষয় নিয়ে প্রতিবাদ জানাতেই তারা এই কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জনা গিয়েছে। সংসদের বাইরে পরিবহণ ভবনের সামনেও একই রকমের রঙিন ধোঁয়া নিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন আরও কয়েকজন। তাদেরকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছিল তারা।
লোকসভার ভিতরে কী ভাবে তারা ধোঁয়াবাজি নিয়ে ঢুকে পড়লেন, সেই নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। চাইলেই কেউ লোকসভা কক্ষের ভিতরে ঢুকতে পারেন না। এর জন্য কোনও সাংসদের সই করা ভিজিটর পাস লাগে। এই ক্ষেত্রে সাগর শর্মার সঙ্গে প্রতাপ সিংহ নামে এক বিজেপি সাংসদের পাস ছিল বলে জানা গিয়েছে। প্রতাপ সিংহ মাইসুরুর সাংসদ।
আরও পড়ুন: গাজায় সমুদ্রের জল দিয়ে সুড়ঙ্গ ভরছে ইজরায়েলি সেনা, বিপদ বাড়ছে হামাসের