কলকাতা: ইংরাজি নতুন বছরের শুরুতেই সারা দেশ জুড়ে বিক্ষোভে নেমেছেন ট্রাক চালকরা। গোটা দেশ জুড়ে তিনদিনের ধর্মঘট ডেকেছেন তাঁরা। কেন্দ্রীয় সরকারের নয়া পরিবহণ নীতির বিরোধিতায় দেশ জুড়ে ট্রাক চালকদের বিক্ষোভ। ইতিমধ্যেই এর আঁচ পড়েছে পেট্রোল পাম্পগুলিতে। আশঙ্কা, এর ফলে হু হু করে বাড়তে পারে ফল-সবজির দাম।
সংসদের শীতকালীন অধিবেশনেই ভারতীয় দণ্ডবিধিকে প্রতিস্থাপনের লক্ষ্যে পাশ হয়েছে ভারতীয় ন্যায় সংহীতা। বিক্ষুব্ধ ট্রাকচালকদের দাবি, নয়া ‘হিট অ্যান্ড রান’ আইনটি অত্যন্ত কঠোর এবং এতে বিশেষ করে ট্রাকের মতো বড় গাড়ির চালকদের বিরুদ্ধে পক্ষপাত করা হয়েছে। তাঁরা বলছেন, নয়া আইনে অলিখিতভাবে বড় গাড়ির উপর দোষ চাপানোর ইঙ্গিত আছে।
এই আইনে গাড়ি দুর্ঘটনা নিয়ে নিয়মের কড়াকড়ি করা হয়েছে। বড়সড় পথ-দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলার পর, পুলিশ-প্রশাসনকে না জানিয়ে যদি চালকরা পালিয়ে যান, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে হিট-অ্যান্ড-রান মামলা দায়ের হবে। সেক্ষেত্রে দোষ প্রমাণ হলে চালকদের সর্বোচ্চ ১০ বছর সাজা অথবা ৭ লক্ষ টাকা জরিমানা হতে পারে। কেন্দ্রের এই আইনেরই বিরোধিতা করছেন ট্রাক ও লরি চালকরা।
ট্রাক ধর্মঘটের জেরে মহারাষ্ট্র, হিমাচল প্রদেশ-সহ বিভিন্ন রাজ্যে দেখা দিয়েছে জ্বালানি-সঙ্কট। বিক্ষোভ-আন্দোলনের জেরে আজ সকাল থেকে পেট্রোল পাম্পগুলিতে কোনও ট্রাক ঢোকেনি। ফলে পেট্রোল-ডিজেলের ভাণ্ডারে টান পড়তে শুরু করেছে। বাড়ছে ঘাটতি।
গত রবিবার ডানকুনিতে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন ট্রাক চালকরা। রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে, টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। এর জেরে ব্য়াপক যানজটের সৃষ্টি হয়। রাস্তায় সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় একাধিক বাস, প্রাইভেট কার। দীর্ঘসময় যান বন্ধ থাকার কারণে বিপাকে পড়েন বহু মানুষ। আটকে পড়ে অ্যাম্বুল্যান্সও। এ ভাবেই প্রায় দু’ঘণ্টা বন্ধ থাকে যান চলাচল। শেষে পুলিশ এসে লাঠি চালিয়ে হটায় বিক্ষোভকারীদের। আটক ১২ জন বিক্ষোভকারী। তার পরে জাতীয় সড়কে ফের স্বাভাবিক হয় যান চলাচল।
বিক্ষোভরত ট্রাক চালকদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় নতুন পরিবহণ নীতির জন্য তাঁদের আর্থিক সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। প্রচুর টাকা জরিমানা নেওয়া হচ্ছে। সারা দেশের প্রচুর প্রয়োজনীয়, জরুরি জিনিস তাঁরা বহন করে নিয়ে যান। জাতীয় সড়কে কোনও ট্রাক চালক যদি মারা যায়, তাঁদের ক্ষতিপূরণের জন্য তো কিছু করা হল না। এরকম বৈপরীত্য পরিবহণ নীতি কেন করা হয়েছে? এর বিরুদ্ধেই এই প্রতিবাদ।