নয়াদিল্লি: গত ৪ জুন, লোকসভা ভোটের ফলাফল ঘোষণার দিনই আচমকা প্রকাশ করা হয় এ বছরের নিট পরীক্ষার ফল। ফলাফলে কারচুপির অভিযোগ ঘিরে বিতর্কের অন্ত নেই। এমন পরিস্থিতিতে ভবিষ্যতের কথা ভেবে আশঙ্কায় রয়েছেন পরীক্ষার্থী এবং তাঁদের অভিভাবকরা। তাঁদের উদ্দেশেই বড়সড় আশ্বাস দিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।
রবিবার NEET-UG মেডিক্যাল এন্ট্রান্স বিতর্ক নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করেছেন
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। বলেছেন, তিনি (মোদী) নতুন মেয়াদের জন্য শপথ নেওয়ার আগেই এই পরীক্ষায় ‘অনিয়ম’ ২৪ লক্ষেরও বেশি পরীক্ষার্থীকে দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। দেশের পড়ুয়াদের আশ্বস্ত করে রাহুল বলেন, সংসদে তাঁদের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠবেন তিনি এবং তাদের ভবিষ্যতের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়গুলি জোরালো ভাবে উত্থাপনও করবেন।
আজ, রবিবার সন্ধ্য়া ৬টায় তৃতীয় বারের জন্য প্রধানমন্ত্রীপদে শপথ নেবেন নরেন্দ্র মোদী। তার কয়েকঘণ্টা আগে সোশ্য়াল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের পোস্টে রাহুল বলেন, “নরেন্দ্র মোদী এখনও শপথ নেননি. তার আগেই নিট পরীক্ষায় অনিয়ম ২৪ লাখেরও বেশি পরীক্ষার্থী এবং তাঁদের পরিবারকে শেষ করে দিচ্ছে।”
প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি বলেন, কী ভাবে একই পরীক্ষা কেন্দ্রের ছয়জন পরীক্ষার্থী সর্বোচ্চ নম্বর নিয়ে শীর্ষস্থানে রয়েছেন? কিছু পরীক্ষার্থী রয়েছেন, যাঁরা এমন নম্বর পেয়েছেন, যা অংকের হিসাবে বাস্তবে সম্ভব নয় (৯১৯ অথবা ৭১৮)। তবে সরকার ক্রমাগত প্রশ্নপত্র ফাঁসের সম্ভাবনা অস্বীকার করছে। রাহুলের দাবি, কংগ্রেস এই ‘প্রশ্নপত্র ফাঁস শিল্প’ মোকাবিলা করার জন্য একটি শক্তিশালি পরিকল্পনা করেছে। এই শিল্পটি শিক্ষা মাফিয়া এবং সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে যোগসাজশে চলছে।
রাহুল গান্ধী আরও বলেন, “আমাদের ইশতেহারে, আমরা একটি আইন করে পরীক্ষার্থীদের ‘প্রশ্নপত্র ফাঁস থেকে মুক্তি’ দেওয়ার সংকল্প নিয়েছিলাম। আজ আমি দেশের সমস্ত পড়ুয়াদের আশ্বস্ত করছি যে আমি সংসদে আপনার কণ্ঠস্বর হব। এবং আপনাদের ভবিষ্যতের জন্য কাজ করব।”
কিছু পরীক্ষার্থীর সঠিক নম্বর না পাওয়া, ঘোষিত মার্কের অমিল এবং ওএমআর (OMR) শিটের তুলনায় গ্রেস মার্কের ধারণা এবং প্রশ্নপত্র ফাঁসের সমস্যা নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। অভিযোগ, কিছু পরীক্ষার্থী ৭১৮ এবং ৭১৯ নম্বর পেয়েছে। এই নম্বর পাওয়ার পিছনে কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই। কারণ এই প্রবেশিকা পরীক্ষায় ১৮০টি প্রশ্ন থাকে। প্রত্যেকটির সঠিক উত্তরের জন্য ৪ (চার) নম্বর পাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে কোনো পরীক্ষার্থী যদি সবকটি প্রশ্নের নির্ভুল উত্তর দেন, তিনি ৭২০ নম্বর পেতে পারেন। একটির জন্য কোনো উত্তর না করলে পেতে পারেন ৭১৬ নম্বর। অর্থাৎ, ৭১৯ অথবা ৭১৮ পাওয়ার কোনো যুক্তি নেই। এক্ষেত্রে যে গ্রেস মার্কেক কথা বলা হচ্ছে, সেই অনুযায়ী কোনো তালিকাও প্রকাশ করা হয়নি।
পাশাপাশি, এমনটাও অভিযোগ উঠেছে, নিট ২০২৪-এর প্রশ্নপত্র অনেক জায়গায় ফাঁস হয়েছে, কিন্তু এই বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। একই সময়ে, অনেক পরীক্ষার্থী তাঁদের স্কোরকার্ডে ওএমআর শিটের তুলনায় ভিন্ন নম্বর পেয়েছেন। এ ছাড়াও, নিট ২০২৪-এর ফলাফল নির্ধারিত সময়ের আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল। এর মধ্যেও বিশেষ কোনো কারণ লুকিয়ে থাকতে পারে।
বিস্তারিত পড়ুন এখানে: ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষায় কেলেঙ্কারির অভিযোগ! সিবিআই তদন্ত, পুনরায় পরীক্ষার দাবিতে এনটিএ-কে চিঠি