রাজস্থানের টঙ্ক জেলার সেই নির্দল প্রার্থী নরেশ মীনাকে বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার ভোট চলাকালীন জনসমক্ষে মালপুরা উপবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট (এসডিএম) অমিত চৌধুরিকে চড় মারার একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর এই গ্রেফতারি। গত বুধবার উপনির্বাচন হয় রাজস্থানের দেওলি-উনিয়ারা আসনে। কংগ্রেসের প্রাক্তন নেতা নরেশ মীনা দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে নির্দল প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন।
ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল টঙ্ক জেলার সামরাবতা গ্রামে, যেখানে স্থানীয়দের দাবি ছিল গ্রামটি ইউনিয়ারা উপবিভাগের অধীনে আনা হোক, কারণ এটি নিকটবর্তী এলাকা। নরেশ মীনা স্থানীয়দের এই দাবির পক্ষে সমর্থন জানাচ্ছিলেন। ভোট চলাকালে এসডিএম চৌধুরী ভোটারদের উৎসাহিত করতে গেলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এর পরেই নরেশ মীনা এসডিএম-এর বিরুদ্ধে জোর করে ভোট দেওয়ার অভিযোগ তোলেন। এখানেই থেমে না থেকে তাঁকে থাপ্পড়ও মারেন।
এই ঘটনার পরপরই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ জানায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে বিক্ষুব্ধ জনতা গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং পুলিশের উপর পাথর ছোড়া হয়। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশকে লাঠিচার্জ এবং গ্যাসের গ্যাসের ব্যবহার করতে হয়। এই সংঘর্ষে প্রায় ৬০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের দাবি, ধৃতদের মধ্যে অনেকেই আগে থেকেই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন।
গ্রেফতারের সময় নরেশ মীনা সাংবাদিকদের বলেন, “আমি আত্মসমর্পণ করব না। মানুষকে জোর করে ভোট দিতে বাধ্য করা হচ্ছিল। যখন আমি তাদের কাছে জানতে চাইলে তাঁরা বলেন, ওই আধিকারিক এই কাজ করছেন। হ্যাঁ, আমি এসডিএমকে চড় মেরেছি, কারণ তিনি ভুল করছিলেন।”
মীনা আরও অভিযোগ করেন যে, তাঁকে জোর করে আটকানো হলে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ছড়ায় এবং এরপর পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে। মীনার দাবি অনুযায়ী, সংঘর্ষের সময় তাঁর উপর কাঁদানে গ্যাস এবং মরিচ গ্যাস প্রয়োগ করা হয়। সে সময় তাঁর সমর্থকরা তাঁকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে যায়।
নরেশ মীনা আরও বলেন, “পুলিশ আমার বিরুদ্ধে যে শাস্তি দেবে, এমনকি ফাঁসিও, আমি মেনে নিতে প্রস্তুত। তবে প্রশাসনকে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে।”
কংগ্রেস সাংসদ হরিশ চন্দ্র মীনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন নরেশ মীনা। তাঁর দাবি, “হরিশ মীনা এই ঘটনার পেছনে রয়েছে। তিনি আমার প্রার্থীপদ বাতিল করিয়েছেন এবং বহুবার আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছেন। আমি আশঙ্কা করছি তিনি হয়তো আমাকে এনকাউন্টারের যড়যন্ত্রও করতে পারেন।”
নির্দল প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা মীনা বলেন, গ্রেফতার হওয়া ৬০ জন মানুষ নির্দোষ এবং তাঁদের মুক্তির দাবি জানান।
আরও পড়ুন: ভোট কেন্দ্রে কর্তব্যরত সরকারি আধিকারিককে কষিয়ে থাপ্পড়, উপনির্বাচনে তুলকালাম কাণ্ড রাজস্থানে