খবর অনলাইন ডেস্ক: লোকসভা নির্বাচনের চতুর্থ দফায় আজ সোমবার ৯টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত জম্মু-কাশ্মীরের মোট ৯৬টি আসনে ভোট নেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে যে সব কেন্দ্রের দিকে নজর রয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে তেলঙ্গানার হায়দরাবাদ, জম্মু-কাশ্মীরের শ্রীনগর, পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণনগর, বহরমপুর ও আসানসোল, উত্তরপ্রদেশের কনৌজ ও লখিমপুর খেরি এবং মধ্যপ্রদেশের ইন্দৌর।
কনৌজে অখিলেশ, লখিমপুর খেরিতে সেই বিতর্কিত মন্ত্রী
সোমবার উত্তরপ্রদেশের ১৩টি কেন্দ্রে ভোট নেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি করে নজর রয়েছে কনৌজ ও লখিমপুর খেরির দিকে। কনৌজ ছিল উত্তরপ্রদেশের একসময়ের মুখ্যমন্ত্রী মুলায়ম সিং যাদবের দুর্গ। ১৯৯৯ থেকে সেই দুর্গ দখলে রেখেছিলেন তিনি এবং তাঁর পুত্রবধূ ডিম্পল যাদব। কিন্তু ২০১৯-এর নির্বাচনে এই দুর্গ যাদবদের হাতছাড়া হয়। সুগন্ধির শহর কনৌজ দখল করেন সুগন্ধি ব্যবসায়ী সুব্রত পাঠক। তিনি এবারেও বিজেপি প্রার্থী। কিন্তু এই কেন্দ্রকে আবার যাদব পরিবারের হাতে নিয়ে আসার জন্য সক্রিয় হন সমাজবাদী পার্টির (সপা) প্রধান অখিলেশ যাদব। তিনি নিজেই এবার এই কেন্দ্র থেকে ভোটযুদ্ধে নেমেছেন পাঠকের বিরুদ্ধে।
যে মন্ত্রীর পুত্রকে নিয়ে ঝড় উঠেছিল, সেই মন্ত্রীকেই আবার প্রার্থী করেছে বিজেপি উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরি কেন্দ্রে। মোদী সরকারের স্বরাষ্ট্র দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী অজয় মিশ্র তেনি এই কেন্দ্র থেকে গত দু’বার বিজয়ী হন। ২০২১-এর ২ অক্টোবর ওঁর পুত্র আশিস মিশ্র তাঁর চার চাকার গাড়িতে বিক্ষোভরত চার জন কৃষককে পিষে মারেন বলে অভিযোগ ওঠে। আপাতত আশিস মিশ্র জামিনে আছেন। কৃষকরা বিজেপির কাছে দাবি করেছিল, অজয় মিশ্র তেনিকে এবার যেন প্রার্থী না করা হয়। কিন্তু বিজেপি তাঁকেই প্রার্থী করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে লড়ছেন সপার উৎকর্ষ বর্মা এবং বিএসপি-র অনশয় কালরা।
হায়দরাবাদে আসাদুদ্দীন ওয়াইসি
এআইএমআইএম (অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন) প্রেসিডেন্ট আসাদুদ্দীন ওয়াইসি লড়ছেন তেলঙ্গানার হায়দরাবাদ আসন থেকে। ২০০৪ সাল থেকে তিনি টানা জিতে আসছেন এই আসন থেকে। তাঁর আগে ওই আসন থেকে নির্বাচিত হতেন আসাদুদ্দীনের বাবা সুলতান সালাহুদ্দীন ওয়াইসি। তিনি ১৯৮৪ থেকে ওই কেন্দ্রের সংসদ ছিলেন। ১৯৮৪, ১৯৮৯, ১৯৯১, ১৯৯৬, ১৯৯৮ এবং ১৯৯৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ওই আসনে বিজয়ী হন সালাহুদ্দীন ওয়াইসি। এবার আসাদুদ্দীনের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী অভিনেত্রী মাধবী লতা।
জম্মু-কাশ্মীরের শ্রীনগর
২০১৯-এর নির্বাচনে ব্যাপক ভোট বয়কটের জেরে জম্মু-কাশ্মীরের শ্রীনগর কেন্দ্রে ভোট পড়েছিল মাত্র ১৫ শতাংশ। সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের পর এই প্রথম জম্মু-কাশ্মীরে লোকসভা নির্বাচন হচ্ছে। এবার এই কেন্দ্রে কতটা ভোট পড়ে সেই দিকে নজর নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের। তবে এবার কোনো ভোট বয়কটের ডাক নেই কোনো। এই আসনে কংগ্রেস বা বিজেপি, কোনো দলই প্রার্থী দেয়নি। মূল লড়াই হচ্ছে জম্মু-কাশ্মীর ন্যাশনাল কনফারেন্সের আগা সৈয়দ রুহুল্লাহ মেহদির সঙ্গে পিপলস্ ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ওয়াহিদ উর রেহমান পারার।
যে কেন্দ্রে কংগ্রেস ‘নোটা’য় ভোট দিতে বলছে
প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল ভোটারদের ‘নোটা’য় ভোট দিতে বলছে, এ রকম কখনও দেখা যায়? সেটাই ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের ইন্দৌর কেন্দ্রে। এই কেন্দ্রে কংগ্রেস দাঁড় করিয়েছিল অক্ষয় কান্তি বামকে। একেবারে শেষ মুহূর্তে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। তখন প্রার্থীপদ জমা দেওয়ার শেষ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। ফলে কংগ্রেস কোনো বিকল্প প্রার্থী দাঁড় করাতে পারেনি। এই বাম পরে বিজেপিতে ঢুকেছেন। তাই কংগ্রেস এখানে ভোটারদের ‘নোটা’য় ভোট দিতে বলছে। এখানে বিজেপি প্রার্থী গত বারের নির্বাচিত সাংসদ শঙ্কর লালওয়ানি।
এ ছাড়া পশ্চিমবঙ্গে অন্তত গোটাপাঁচেক কেন্দ্র তো আছেই যেখানে হচ্ছে আকর্ষণীয় লড়াই। এই কেন্দ্রগুলো থেকে ভোটে লড়ছেন অভিনেতা থেকে ক্রিকেটার। তা ছাড়া উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তো আছেনই।
আরও পড়ুন
সোমবার চতুর্থ দফায় ৯৬ আসনে ভোট, রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ৮ কেন্দ্র
হেমন্ত সোরেন কি ইডি মামলায় স্বস্তি পাবেন? আজই রায় সুপ্রিম কোর্টে