নয়াদিল্লি: মথুরার শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি জমি বিবাদে আরেক মোড়। বিতর্কিত জমির সমীক্ষায় অনুমোদনের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিতে রাজি হল না সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল হাইকোর্টের আদেশে স্থগিতাদেশ দেওয়া যাবে না।
হিন্দু সংগঠনগুলি দাবি করেছে, উত্তরপ্রদেশের মথুরার শাহী ইদগাহ মসজিদটি ভগবান কৃষ্ণের জন্মস্থানে নির্মিত হয়েছিল। সেটাই খতিয়ে দেখতে একটি সমীক্ষার দাবি করেছিল তারা। গত বছরের ডিসেম্বরে স্থানীয় একটি আদালত দাবিটি স্বীকার করলেও মুসলিমপক্ষ হাইকোর্টে আপত্তি জানায়।
শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি মন্দির সংলগ্ন শাহী ইদগাহ চত্বরের প্রাথমিক সমীক্ষার অনুমতি দিয়েছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট। সেই আদেশকে চ্য়ালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় মসজিদ কমিটি। এ দিন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং এসভিএন ভাট্টির একটি বেঞ্চ মসজিদ কমিটির আবেদন প্রত্যাখ্যান করে। বেঞ্চ জানিয়েছে, হাইকোর্টের আদেশ অব্যাহত থাকবে এবং হাইকোর্ট বিষয়টি নিয়ে এগিয়ে যাবে।
বলে রাখা ভালো, বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর, ২০২৩) একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্তে, এলাহাবাদ হাইকোর্ট মথুরার শাহী ইদগাহ চত্বরে একটি বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা পরিচালনার অনুমোদন দিয়েছে। শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি মন্দির এবং শাহী ইদগাহ মসজিদের মধ্যে বিরোধের রায় শোনাতে গিয়ে বিতর্কিত জায়গা জরিপের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি মায়াঙ্ক কুমার জৈন। অ্যাডভোকেট কমিশনারের মাধ্যমে সমীক্ষা করার দাবি মঞ্জুর করেছে আদালত।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বিরাজমান ও তাঁর সঙ্গে ৭ জন এই মামলাটি দায়ের করেছিলেন। হিন্দুসেনার দাবি, সপ্তদশ শতকে শ্রীকৃষ্ণের জন্মভূমিতে শাহি ইদগাহ মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। এই মসজিদের অপসারণের দাবি তোলা হয়েছে হিন্দুসেনার তরফে। আর তার জেরে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় দাবি করা হয়েছে, ১৬৬৯-১৬৭০ সালে মুঘল আমলে সম্রাট ঔরাঙ্গজেব শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমিতে কাতরা কেশবদেবের মন্দিরের ১৩.৩৭ একর জমিতে এই মসজিদ গড়েন। যদিও হিন্দুসেনার সেই দাবি খারিজ করে মথুরা আদালত। পরে শাহী ইদগাহ মসজিদ সমীক্ষার নির্দেশ দেয় মথুরার এক আদালত। এরপর বৃহস্পতিবার এসেছে এলাহাবাদ হাইকোর্টের এই বড় বার্তা।
হাইকোর্টের রায়ের পর হিন্দুপক্ষের আইনজীবী বিষ্ণু শঙ্কর জৈন বলেন, “একজন অ্যাডভোকেট কমিশনারের মাধ্যমে শাহি ইদগাহ মসজিদের সমীক্ষার দাবি জানিয়েছিলাম আমরা। এলাহাবাদ হাইকোর্টে সেই আবেদন অনুমোদিত হয়েছে। পুরো প্রক্রিয়া কেমন ভাবে চলবে, সে ব্যাপারে ১৮ ডিসেম্বরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
এর আগে, লখনউয়ের বাসিন্দা রঞ্জনা অগ্নিহোত্রী শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমির ১৩.৩৭ একর জমির মালিকানার দাবিতে মামলা করেছিলেন। সেই মামলায়, শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমিতে নির্মিত শাহী ইদগাহ মসজিদটি অপসারণের দাবি করেছিলেন আবেদনকারী।
আরও পড়ুন: সাংসদপদ খারিজের বিরুদ্ধে মহুয়া মৈত্রের মামলার শুনানি পিছিয়ে গেল সুপ্রিম কোর্টে