তেজস্বী যাদবের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পথে ‘কাঁটা’ অনেক। লালু – পুত্রকে নীতীশ কুমার, চিরাগ পাসওয়ান এবং পিকের ত্রিফলা টপকাতে হবে। এ ছাড়াও তাঁর পথে কাঁটার মতো বিছিয়ে রয়েছে জিতন রাম মাঞ্জি এবং উপেন্দ্র কুশওয়াহার নাম।
প্রশান্ত কিশোর
প্রশান্ত কিশোর বিহারের ঐতিহ্যবাহী রাজনীতির বিকল্প হয়ে উঠতে পারবেন কি না তা নিয়ে হয়তো ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারেন কোনো জ্যোতিষী। এর বাইরে যারা এমন প্রত্যাশা করবেন, তাঁরা নিশ্চিত প্রশান্ত কিশোরের সমর্থক। কিন্তু বাস্তব বলছে প্রশান্ত কিশোরের নাম এখন আর বিহারের মানুষের কাছে অজানা নয়। ঠিক যেমন গ্রাম-শহরের মানুষ লালু, নীতীশ ও তেজস্বীকে তাঁদের মুখ দেখেই চিনতে পারে। ফলে তিনি ভোটে জিতে মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবেন কি পারবেন না, সে প্রশ্নের উত্তর খোঁজা সময় অপচয় হলেও তেজস্বীর জন্য তিনি এক বড় ফ্যাক্টর।
প্রশান্ত কিশোরের কাছ থেকে সত্যিকারের বিপদে পড়েছেন তেজস্বী। প্রথমত, পিকে নিজের মিটিংয়ে তেজস্বীকে টার্গেট করেন। গ্রামে গ্রামে ঘুরে প্রচারের সময় তিনি যাঁদের কাছে পৌঁছান, তাঁদের মধ্যে যাদব-মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকও রয়েছেন। যাঁরা লালু পরিবারের প্রতি অন্ধ ভক্তি দেখায় এবং তেজস্বীকে বিহারের ভবিষ্যত বলে ডাকে। অন্যরা এটা বললে পিকে-র প্রতি বাড়াবাড়ি হবে, কিন্তু তেজস্বীর দল আরজেডি-র রাজ্য সভাপতি জগদানন্দ সিং নিজেই হতবাক হয়ে একথা বলছেন।
চিরাগ পাসওয়ান
এখন বিহারের রাজনীতিতে আরেকজন প্রতিশ্রুতিবান রাজনীতিবিদকেও দেখা যাচ্ছে। লোকসভা ভোটের ফলাফলে তাকালে চিরাগ পাসওয়ান এখন তেজস্বীরও উপরে উঠে গিয়েছেন। নিজের পাঁচজন প্রার্থীকে সংসদে পাঠানোর কৃতিত্ব তাঁরই। রাজনীতিতে, ধৈর্য এবং আনুগত্য কখনও কখনও সাফল্যও দেয়। চিরাগও নরেন্দ্র মোদীর প্রতি অপরিসীম আনুগত্য এবং সীমাহীন ধৈর্য দেখানোর সাফল্য পেয়েছেন। এখন তিনি মোদীর সহযোগী মন্ত্রীও হয়েছেন।
তবে বিহারে এখন তাঁর কোনো বিধায়ক নেই। যে কারণে এখন থেকে জমিও প্রস্তুত করেছেন চিরাগ। শুধু সুযোগের অপেক্ষায়। তাঁর মানে চিরাগও তেজস্বীর পথে কাঁটার সমান!
নীতীশ কুমার
নীতীশের অতীত পাল্টাপাল্টি অবস্থা দেখে তেজস্বী যদি স্বস্তি পান, তবে সেটা নিছকই আত্মতুষ্টি। নীতীশ এখানে-সেখানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন শুধুমাত্র নিজের স্বার্থে, কোনো দানখয়রাতির উদ্দেশ্যে নয়। তেজস্বী নিশ্চয়ই অনুভব করছেন যে নীতীশ কুমার বিভিন্ন সময়ে লালুর ছোট ও বড় ভাইয়ের ভূমিকা পালন করছেন। সেটা ২০১৫ সাল হোক বা ২০২২ সাল। কখনও নীতীশ লালু যাদবের সন্তানদের জন্য বড়ই আপন হয়ে ওঠেন আবার কখনও নো এন্ট্রি বোর্ড লাগিয়ে দেন। রাবড়ি দেবীও মধুর সম্পর্ক বজায় রাখতে কোন কসরত রাখেন না। কিন্তু সময়ের চাহিদা মতো পূরণ করা ছাড়া আর অন্য কিছুকেই গুরুত্ব দিতে যায় না বিহারের মুখ্যমন্ত্রীকে।
আরও পড়ুন: নীতীশ ও তেজস্বীর টেনশন বাড়ালেন মায়াবতী! বিধানসভা নির্বাচনে ‘খেলা’র প্রস্তুতি বিহারে