আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) মণিপুরের ইম্ফলে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে আফস্পা (আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট), ১৯৫৮ বাতিলের দাবি জানায়। পাশাপাশি তারা মানবাধিকার সুরক্ষা এবং রাজ্যের সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও তোলে।
ইম্ফল ওয়েস্ট জেলার থাঙ্গমেইবান্দ থাউ গ্রাউন্ড থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি ইম্ফল সিটি মার্কেট, খোয়াইরামবান্দ কৈথেল হয়ে খুমান লম্পাক পর্যন্ত যায়। মিছিল থেকে স্লোগান ওঠে, “আফস্পা অপসারণ করো, বাতিল করো” এবং “স্বাধীনতা আমাদের জন্মগত অধিকার”, ইত্যাদি।
জানা গিয়েছে, এই প্রতিবাদ মিছিলটি পাঁচটি নাগরিক সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত হয়, যার নেতৃত্ব দেয় অল মণিপুর ইউনাইটেড ক্লাব অর্গানাইজেশন (এএমইউসিও)। অংশগ্রহণকারী অন্যান্য সংগঠনের মধ্যে ছিল পোইরেই লেইমারোল মেইরা পাইবি আপুনবা মণিপুর, অল মণিপুর উইমেন ভলান্টারি অ্যাসোসিয়েশন, কমিটি অন হিউম্যান রাইটস (সিওএইচআর) এবং মণিপুর স্টুডেন্ট ফেডারেশন।
মিছিল চলাকালীন এএমইউসিও-র সভাপতি নান্দো লুওয়াং সাংবাদিকদের জানান, এই প্রতিবাদ মূলত মণিপুরের পাঁচটি জেলার ছয়টি পুলিশ স্টেশন এলাকার মধ্যে এএফএসপিএ প্রয়োগের বিরুদ্ধেই আয়োজিত হয়।
গত বছরের মে মাস থেকে ইম্ফল ভ্যালি-কেন্দ্রিক মেইতেই এবং পার্শ্ববর্তী পাহাড়ি এলাকার কুকি-জো সম্প্রদায়ের মধ্যে জাতিগত সংঘর্ষে মণিপুরে আড়াইশোর বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এবং হাজারো মানুষ গৃহহীন হয়েছে।
এরই মধ্যে, গত সেপ্টেম্বর মাস থেকেই মণিপুরে মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে পরিস্থিতি আবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছে মণিপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে। বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে প্রচুর গোলাবারুদ ও আগ্নেয়াস্ত্র বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ ও আধাসেনার যৌথ দল।
উল্লেখ্য, গত অক্টোবর মাসের শুরুতেই মণিপুরে ছ’মাসের জন্য বর্ধিত হয়েছিল আফস্পা-র মেয়াদ। ইম্ফল, বিষ্ণুপুর, জিরিবাম-সহ ১৯টি থানা এলাকা বাদ দিয়ে গোটা রাজ্যেই এই আইনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছিল। নভেম্বরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের জারি করা একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পশ্চিম ইম্ফলের সেকমাই ও লামসাং, পূর্ব ইম্ফলের লামলাই, বিষ্ণুপুরের মইরাং, কাংপোকপির লেইমাখং এবং জিরিবাম থানা এলাকায় নতুন করে আফস্পা চালু করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মেগা প্রতিরক্ষা চুক্তি! চিনকে ঠেকাতে রাশিয়ার সঙ্গে কয়েকশো কোটি ডলারের চুক্তি করতে চলেছে ভারত