দেহরাদুন: সিলকিয়ারার সুড়ঙ্গে আটকে থাকা কর্মীদের উদ্ধারকাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছে এনডিএমএ (ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি) তথা জাতীয় বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা বাহিনী। উদ্ধারকারী দল আটকে থাকা কর্মীদের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। যে কোনো মুহূর্তেই আটকে থাকা কর্মীদের বের করে আনার কাজ শুরু হয়ে যাবে।
এনডিএমএ-র সদস্য অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল সৈয়দ আতা হাসনাইন সাংবাদিকদের জানান, ৫৮ মিটার খোঁড়া হয়ে গিয়েছে। আটকে থাকা কর্মীদের বার করে আনতে উদ্ধারকারীদের আর দু’ মিটার মতো খুঁড়তে হবে।
তিনি আরও জানান, পাইপ পুরোপুরি ঢোকানো হয়ে গেলে এক এক জন আটকে পড়া শ্রমিককে বার করে আনতে পাঁচ মিনিট করে সময় লাগবে। সেই হিসাবে ৪১ জন কর্মীকে বার করে আনতে তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লেগে যাবে। আটকে থাকা কর্মীরাই বলছেন, তাঁরা মাটি খোঁড়ার আওয়াজ শুনতে পাচ্ছেন।
১২ সদস্যের তিনটি এনডিআরএফ দল আটকে পড়া কর্মীদের উদ্ধার করতে সুড়ঙ্গের ভিতরে প্রবেশ করবে বলেও জানিয়েছেন হাসনাইন। উদ্ধার করার সময় চিকিৎসাকর্মীরাও ভেতরে যাবেন।
মঙ্গলবার দুপুর দেড়টা নাগাদ রাজ্য সরকারের তথ্য দফতরের তরফে বংশীধর তিওয়ারি জানান, গর্ত খোঁড়া সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। কিছু পরেই মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়ে দেন, বেরিয়ে আসার পাইপ পুরোপুরি বসানো হয়েছে। আটকে থাকা সব কর্মীকে খুব শীঘ্রই বের করে আনা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
তার কয়েক ঘণ্টা পরে এনডিএমএ-র তরফে জানানো হয়, এখনও কাজ পুরো সম্পন্ন হয়নি। তবে উদ্ধারকারী দল কাছাকাছিই পৌঁছে গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, আটকে থাকা কর্মীদের কাছে পৌঁছোনোর জন্য উদ্ধারকারী দল ইঁদুরের কায়দায় গর্ত খুঁড়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। কী ভাবে সুড়ঙ্গে ধ্বংসস্তূপ খোঁড়া হচ্ছে? ‘ইঁদুরের গর্ত’ খোড়ার প্রথম ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে এসেছে মঙ্গলবার। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সেই ভিডিয়ো পোস্ট করেছে। তাতে দেখা গিয়েছে, চার জন শ্রমিক কাজ করছেন। তাঁদের মধ্যে তিন জন একটি পাইপের ভিতর থেকে বেরিয়ে থাকা দড়ি টানছেন। সর্বশক্তি দিয়ে দড়িটি টানতে দেখা গিয়েছে শ্রমিকদের। আর চতুর্থ জনকে দেখা গিয়েছে পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে।
সুড়ঙ্গের সামনের দিক থেকে ধ্বংসস্তূপ খোঁড়ার সময় যখন মাত্র ১০-১২ মিটার বাকি ছিল, তখনই শুক্রবার সন্ধ্যায় ধাতব বাধায় ধাক্কা খেয়ে তুরপুনের মতে খননযন্ত্রটি ভেঙে যায়। তার সব টুকরো বার করার পর সোমবার থেকে আবার সেখানে খননকাজ শুরু হয় ইঁদুরের গর্ত করার কৌশল অবলম্বন করে। এই পদ্ধতিতেই শেষ পর্যন্ত সাফল্যা আসবে বলে উদ্ধারকারী দলের আধিকারিকদের দৃঢ় বিশ্বাস।
গত ১৭ দিন ধরে উত্তরাকাশীর কাছে সিলকিয়ারা সুড়ঙ্গে আটকে আছেন ৪১ জন শ্রমিক। শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়েছে। বিএসএনএল ল্যান্ডলাইনের ব্যবস্থা করেছে। পাইপের মাধ্যমে শ্রমিকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে খাবার, জল, অক্সিজেন এবং অন্যান্য দরকারি জিনিসপত্র। কবে ঘরে ফিরবেন, সেই অপেক্ষায় দিন গুনছেন আটকে পড়া শ্রমিকেরা।