উত্তরকাশীর সিলকিয়ারা গ্রামে নির্মীয়মান সুড়ঙ্গে ৪১ জন শ্রমিক আটকা পড়ার ঘটনার পর ১২ দিন কেটে গেছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত শ্রমিকদের এখনও নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি। যে কারণে প্রশাসনের প্রতি শ্রমিক পরিবারের ক্ষোভ বাড়ছে। তবে খুব শীঘ্রই টানেল থেকে শ্রমিকদের বের করে আনার আশা বেড়েছে।
উদ্ধার অভিযানে এই বিলম্বের কারণ জানিয়েছেন জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) সৈয়দ আতা হসনৈন। তিনি বলেছেন, হিমালয় অঞ্চলে কোনো রকমের ভূতাত্ত্বিক ভবিষ্যদ্বাণী করা সহজ নয়। ইন্ডিয়া টুডে-র এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে উদ্ধার অভিযান এখন এমন এক পর্যায়ে রয়েছে যেখান থেকে পাইপের মাধ্যমে শ্রমিকদের সহজে সরিয়ে নেওয়া যেতে পারে।
উদ্ধার অভিযানে বিলম্বের বিষয়ে জেনারেল হাসনৈন বলেন, “যে কাজটি করা হচ্ছে তা খুবই প্রযুক্তিগত, কিন্তু আপনি হিমালয় অঞ্চলের ভূতত্ত্ব সম্পর্কে কোনো ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারবেন না। ১৬ এবং ১৭ নভেম্বর আমরা অপ্রত্যাশিত বাধার সম্মুখীন হয়েছিলাম। ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযানে অন্তত পাঁচ দিন বিলম্ব হয়েছে। তবে, এ কথা আমি অবশ্যই বলব যে আমরা অনেক ভালো অবস্থায় আছি।”
ধসে পড়া সুড়ঙ্গের ভিতরে আটকে থাকা শ্রমিকদের উদ্ধার অভিযানের আজ দ্বাদশতম দিন। একই সঙ্গে চূড়ান্ত দিনও বলা যেতে পারে। গত ১২ নভেম্বর থেকে ওই সুড়ঙ্গে আটকে রয়েছেন শ্রমিকরা। আটকে পড়া শ্রমিকদের বার করার জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে। ধ্বংসস্তূপ খুঁড়ে চওড়া পাইপ ঢুকিয়ে তার মাধ্যমে শ্রমিকদের বাইরে আনা হবে বলে পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু গত শুক্রবার সেই খোঁড়াখুঁড়ির কাজ বন্ধ হয়ে যায়। সুড়ঙ্গের ভিতরে আবার ধস নামে। সোমবার ফের নতুন করে কাজ শুরু হয়।
বিশেষজ্ঞদের কথায়, পাথুরে মাটিতে ভেঙে পড়া সুড়ঙ্গের ইস্পাতের বর্জ্য সরিয়ে সুড়ঙ্গ খুঁড়তে হচ্ছে। ইস্পাতের চওড়া পাইপ বসিয়ে আটক শ্রমিকদের নাগাল পাওয়া তাই মুখের কথা নয়। কারণ, ভেঙে সুড়ঙ্গের ইস্পাতের খণ্ডও পাইপের মুখে এসে পড়ায় বার বার খোঁড়ার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। কাজের গতিটাই শ্লথ হচ্ছে।
সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, জেলাশাসক অভিষেক রুহেলা জানিয়েছেন, “সমস্ত মেশিন কাজ করছে… আমরা সুড়ঙ্গের বেশিরভাগ দূরত্ব অতিক্রম করেছি, কিছু কাজ বাকি আছে। এখনই বলা সম্ভব নয় কতটা সময় লাগবে। কাজটি সম্পূর্ণ করতে দিন।। অনেক সময় নতুন নতুন সমস্যা দেখা দেয়। কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। সকলের সঙ্গে সঠিক সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজটি করা হচ্ছে। ভারত সরকার এবং রাজ্য সরকার উভয়েই কাজের উপর প্রতিনিয়ত নজরদারি করছে। ভারত সরকারের কাছ থেকে পূর্ণ সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে।”
আরও পড়ুন: উত্তরকাশী টানেল বিপর্যয়: সিলকিয়ারায় প্রস্তুত ৪১টা অ্যাম্বুল্যান্স, তৈরি হয়েছে ৪১ শয্যার হাসপাতাল