কলকাতা: বালেশ্বরে রেল দুর্ঘটনায় আহতদের দেখতে মঙ্গলবার ওড়িশা যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ট্রেন দুর্ঘটনায় আহতদের দেখতে আরও এক বার ওড়িশা-সফরে মুখ্যমন্ত্রী।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে ওড়িশায় বালেশ্বরের কাছে বাহানগা বাজারে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস এবং বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। একই সঙ্গে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয় একটি মালগাড়িও। মালগাড়ির কামরার উপরে উঠে যায় করমণ্ডলের ইঞ্জিন। এই তিন ট্রেনের দুর্ঘটনায় ২৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যায়।
ঘটনার পর দিনই ওড়িশা গিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পাশাপাশি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসাধীন আহতদের সঙ্গেও দেখা করেন তিনি। আজ আবার ওড়িশায় যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। কটক ও ভুবনেশ্বরের হাসপাতালে ভর্তি এ রাজ্যের আহতদের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি।
জানা গিয়েছে, প্রথমে কটকে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর ভুবনেশ্বর এইমসে গিয়ে দেখা করবেন ট্রেন দুর্ঘটনায় আহতদের সঙ্গে। মৃতদেহ রাজ্যে আনা, আহতদের ফেরানো এবং নিখোঁজদের অনুসন্ধান, গোটা প্রক্রিয়ার তদারকির জন্য তিনদিনের পাহাড় সফর বাতিল করেছেন মমতা।
সোমবার মুখ্যমন্ত্রী জানান তিনি আহতদের দেখতে ওড়িশায় যাচ্ছেন। তাঁর সঙ্গে যাবেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং শশী পাঁজা। ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত বাংলার ৯০ জনের দেহ শনাক্ত হয়েছে বলে জানান মমতা। তিনি বলেন, “বাকি দেহ শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। আমরা ঠিক করেছি মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে দেব। আর হোমগার্ডের চাকরি দেব। যাঁরা আহত তাঁদের ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। তুলনায় বেশি আহতদের ১ লক্ষ টাকা দেব। তুলনায় কম আহতদের ২৫ হাজার দেব। যাঁরা ট্রমায় ভুগছেন তাঁদের প্রথমে এককালীন ১০ হাজার টাকা দেব। তারপর চার মাস পরিবার প্রতি ২ হাজার টাকা পাবে। পাশাপাশি চাল, ডাল, তেল সহ দেওয়া হবে। অনেকে হাত-পা বাদ গিয়েছে এই দুর্ঘটনায়। সংশ্লিষ্টদের জন্য বিশেষ সুবিধা থাকছে। তাঁদের পরিবারের কাউকে হোমগার্ডের চাকরি দেওয়া হবে”।
রেল দুর্ঘটনায় সিবিআই তদন্তের সুপারিশ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জ্ঞানেশ্বরী এবং সাঁইথিয়া দুর্ঘটনার তদন্তভারও তিনি সিবিআইকে দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই তদন্তের কোনো রিপোর্ট এখনও মেলেনি। মমতার কথায়, “সিবিআইয়ের কাজ অপরাধের তদন্ত করা, দুর্ঘটনার নয়। রেলের সুরক্ষায় কোথায় গলদ ছিল তা জানানো রেল কর্তৃপক্ষের কাজ। এখন সত্য খুঁজে বের করার সময়ে। সত্যি চেপে রাখার সময় এটা নয়”।
আরও পড়ুন: প্রবল গরমে পুড়ছে বাংলা, অস্বস্তিকর আবহাওয়া আর কত দিন