নিজস্ব সংবাদদাতা: মাত্র দু’ বছর হল পথ চলা শুরু করেছে সাহিত্য পত্রিকা ‘বনপলাশি’। কিন্তু এই অল্প সময়ের মধ্যেই বাংলার সাহিত্য জগতে একটা জায়গা করে নিয়েছে তারা। মঙ্গলবার তাদের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হল শ্যামবাজারের সেরাম অডিটোরিয়ামে।
পুস্তক প্রকাশ, সাহিত্য সম্মাননা প্রদান এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সব মিলিয়ে এক মনোজ্ঞ সন্ধ্যা উপহার দিল ‘বনপলাশি’। এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাহিত্য ও সংস্কৃতি জগতের এক একজন মহীরূহ। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্যে দিয়ে এই অনুষ্ঠানের সূচনা করেন সাধন চট্টোপাধ্যায়, সুনীল দাশ, দেবব্রত সিংহ, শুভেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুশান্ত কুমার রায়, সুদীপ সিংহ, সুশান্ত রায় কর্মকার, ভার্গবী বসু এবং সংবৃতা।

শুরুতেই ছিল উদ্বোধনী সংগীতের পর্ব। ‘বনপলাশি’ পরিবারের সদস্য শ্রী জীবনানন্দ বসুর কন্ঠে নিজের কথা এবং সুরে ‘বনপলাশি বনেই থাকে’ গানটির মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। এর পর এই সাহিত্য পত্রিকার উপদেষ্টামণ্ডলীর ও সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য এবং বিশিষ্ট অতিথিদের বরণ করে নেওয়া হয়। সবার প্রথমে বরণ করে নেওয়া হয় সুশান্ত রায় কর্মকারকে। সুশান্তবাবুর স্বপ্নেই পথ চলা শুরু করেছিল ‘বনপলাশি’।
পরের পর্বে ছিল বিশেষ সম্মাননা প্রদানের পালা। এখানে ‘বনপলাশি’-র পক্ষ থেকে বিশেষ সম্মান প্রদান করা হয় কবি দেবব্রত সিংহকে। এর পরে কথাসাহিত্যিক সুনীল দাশের হাতে ‘বনপলাশি’-র তরফ থেকে ‘শচীন্দ্রনাথ সাহিত্য অর্ঘ্য’ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

পরের পর্বে ছিল বইপ্রকাশের পালা। একে একে প্রকাশিত হয় সাধন চট্টোপাধ্যায়ের ‘সামাইয়া বারিক’, তপন সাহার ‘চোখে বৃষ্টি আসে’, বীথি করের ‘কবিতা তোমায় দিলাম’ এবং মৌটুসী ঘোষ দে সরকারের ‘ডিঙ্গি দ্য ডয়েচল্যান্ড।’

বইপ্রকাশের পরে ছিল ‘বনপলাশি’র তরফ থেকে পুরস্কার তুলে দেওয়ার পালা। ‘বনপলাশি’র বিশেষ বিভাগ শিশুদের জন্য ‘অমলতাস’। ‘অমলতাস শিশু প্রতিভা’ পুরস্কার দেওয়া হয় তৃহাণ গুহকে। ‘অমলতাস সেরা কলম’ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয় অব্ধিজা চিকিকে। ‘অমলতাস সেরা চিত্রকলা’ পুরস্কার যৌথ ভাবে পায় পারিজাত চট্টোপাধ্যায় এবং রৌনক যশ।
‘বনপলাশি নবীন সাহিত্য সম্মান’ প্রদান করা হয় কবি রাখীবৃতা বিশ্বাসকে। সাহিত্যপত্রিকার আলোকচিত্র বিভাগে বিশেষ সম্মান পেয়েছেন লিঙ্কন সাহা। চিত্রকলার জন্য বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হয় আর্য বিশ্বাসকে। সংবৃতা ও অনমিত্র-র কবিতা এবং সন্মিত্রর গানের মধ্যে দিয়ে শেষ হয় অনুষ্ঠানের প্রথমার্ধ।
দ্বিতীয়ার্ধে ছিল শ্রুতি নাটকের পালা। মৈনাক সেনগুপ্তের রচনায় এবং প্রণব বন্দ্যোপাধ্যায় ও কাকলি বসু ভট্টাচার্যের অভিনয়ে মঞ্চস্থ হয় শ্রুতি নাটকটি। আবহে ছিলেন ঈশান রায়। সবার উপভোগ্য হয়ে ওঠে সেটি। অনুষ্ঠানের শেষাংশে ছিল সংগীতের অনুষ্ঠান। সংগীত পরিবেশন করেন জয়িতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পূর্ণিমা বন্দ্যোপাধ্যায়, শুভদীপ মণ্ডল, মৌ চক্রবর্তী ও সুশান্ত রায় কর্মকার। এঁরা সকলেই বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী ও ‘বনপলাশি’-র উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্যা সুতপা ভট্টাচার্যর ছাত্রছাত্রী।

সবশেষে সংগীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী স্বাক্ষর বসু। গোটা অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বীথি কর।