আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের এক মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় নির্যাতিতার পরিবারের পক্ষে লড়ছিলেন বর্ষীয়ান আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার। বুধবার তিনি এই মামলা থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। তার দফতর থেকে জানানো হয়েছে, “কিছু নির্দিষ্ট কারণ এবং পরিস্থিতির জন্য বাধ্য হয়েই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
বৃন্দার বক্তব্য অনুযায়ী, গত তিন মাস ধরে তিনি এবং তার দফতর নির্যাতিতার পরিবারকে যাবতীয় আইনি সহায়তা প্রদান করেছেন এবং সিবিআইয়ের তদন্ত প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করেছেন। শিয়ালদহ আদালতে বিচারপ্রক্রিয়া চলমান থাকার সময় তিনি নিজে এবং তার দফতরের আইনজীবীরা নিয়মিতভাবে উপস্থিত থেকেছেন। মামলার বিচার শুরু হয়ে যাওয়ার কারণেই তিনি এখন এই দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন।
বিচারপ্রক্রিয়ার অগ্রগতি
শিয়ালদহ আদালতে মামলার বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, যেখানে ৫১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। বাকি সাক্ষীদের জেরা দু’-তিন দিনের মধ্যেই সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বৃন্দা জানান, “আমরা আশা করছি সিবিআই অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দেবে। নির্যাতিতার বাবা-মা দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আশা করছেন।”
সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক শুনানি
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানিতে বৃন্দা গ্রোভার নিজেই সওয়াল করেন। সেখানেও তিনি বিচার প্রক্রিয়ার দ্রুততার ওপর জোর দেন এবং জানান, সিবিআইয়ের তদন্ত কার্যক্রম সঠিকভাবে এগোচ্ছে। যদিও নির্যাতিতার বাবা-মা সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে অভিযোগ করেছেন, বৃন্দা শুনানির সময় কোনও হতাশা প্রকাশ করেননি। টিভি নাইন বাংলার প্রতিবেদন অনুযায়ী, আদালতে আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভারের ভূমিকায় অসন্তুষ্ট ছিলেন নির্যাতিতার বাবা-মা। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানির পর নিজেদের অসন্তোষের কথা বৃন্দা গ্রোভারকে ফোনে জানান তাঁরা। এরপরই মামলা থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন বৃন্দা গ্রোভার।
বিনা পারিশ্রমিকে আইনি সহায়তা
গত সেপ্টেম্বর মাসে বৃন্দা গ্রোভার এই মামলার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার আগে এই মামলা লড়ছিলেন আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য। প্রায় বিনা পারিশ্রমিকেই এতদিন ধরে মামলাটি পরিচালনা করেছেন বৃন্দা এবং তাঁর দফতর। তবে বুধবার তার দফতর থেকে জানানো হয়েছে যে তাঁরা এখন আর এই মামলার সঙ্গে যুক্ত থাকবেন না।
নতুন আইনজীবী খুঁজতে হবে পরিবারকে
বৃন্দার সরে দাঁড়ানোর পর, নির্যাতিতার পরিবারকে এখন নতুন আইনজীবী নিয়োগ করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের পাশাপাশি শিয়ালদহ আদালত, কলকাতা হাইকোর্টেও নতুন আইনজীবী নিয়োগ করা হবে বলে টিভি নাইন বাংলাকে জানিয়েছেন নির্যাতিতার বাবা-মা। বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত এগোনোর পাশাপাশি তারা আশা করছেন, দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তি নিশ্চিত হবে।