কলকাতা: ৩৬ হাজার প্রশিক্ষণহীন প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিল করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। এ ব্যাপারে ডিএ আন্দোলকারীদের কাঠগড়ায় তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হওয়ার কথা জানিয়ে ডিএ আন্দোলনকারীদের উদ্দেশেও কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
২০১৬-তে নিয়োগের সময় যাঁরা অপ্রশিক্ষিত ছিলেন, তাঁদের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই রায় নিয়েই চাকরিহারাদের পাশে থেকে লড়াইয়ের বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার নবান্ন থেকে জানিয়ে দিলেন, “যতদূর লড়াই করতে হয়, রাজ্য সরকার সেটা করবে”।
এ দিন নবান্নে সাংবাদিকের মুখোমুখি হয়ে মমতা বলেন, “৩৬ হাজার চাকরি বাতিল হয়েছে। এক জনের উপর যদি ৬ জন নির্ভরশীল হন, তা হলে প্রায় ২ লক্ষ মানুষ বেকার হয়ে গিয়েছেন। বিষয়টা বিচারাধীন, সে ব্যাপারে কিছু বলব না। কিন্তু আমি আমার অবস্থান পরিষ্কার করে দিতে চাই। এমনিতে অনেক নিয়োগ মামলার জটে আটকে রয়েছে। ফলে অনেক সমস্যা হচ্ছে। যাঁরা ডিএ নিয়ে চিৎকার করে, ৩ শতাংশ ডিএ এ বছরও পেয়েছেন। আর প্রতিদিন গিয়ে গিয়ে মিছিল করছে। আর তাঁদের জন্যই ৩৬ হাজার ছেলে-মেয়ের চাকরি চলে গেল। ২ লক্ষ মানুষ বুভুক্ষু হয়ে গেল। তাদের কথা তো কেউ মন দিয়ে ভাবে না। পরিবারগুলো বার বার আমাকে আবেদন জানাচ্ছে। এটা খুব খারাপ লাগছে। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এটা নিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে যাব”।
ডিএ আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, “সরকারি চাকরির জন্য বেতনের পাশাপাশি অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পান কর্মীরা। কিন্তু, অফিস টাইমে কাজ বন্ধ করে মিছিল, এটা সার্ভিস রুল ব্রেক হচ্ছে না? মিছিল করতে কেউ না করেনি, অফিস টাইমের বাইরে করুন।”
সাম্প্রতিককালে মুখ্যমন্ত্রীর মুখে ডিএ আন্দোলনকারীদের নিয়ে এমন কড়া সুর শোনা যায়নি। তাঁর মতে, “সব জায়গায় কোঅর্ডিনেশন কমিটির লোকেরা বসে রয়েছেন।” তবে তিনি যে এর পরও কাউকে বরখাস্ত করেননি সে কথা মনে করিয়েও মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, “আমি কিন্তু দুর্বল নই”।
তিনি আরও বলেন, “দিল্লিতে আমাদের ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা পড়ে রয়েছে। সেই টাকা এনে দিন না। ৩ শতাংশ ডিএ দিয়েছি, টাকা এনে দিলে আরও ৩ শতাংশ দেব। এখন সময়ে সরকারি কর্মীদের বেতন ও পেনশন পৌঁছে যায়, আগে এই সব হতো না।”