মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসেই পশ্চিমবঙ্গের মানুষের শান্তি ও সমৃদ্ধি রচনার কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন ডা. বিধানচন্দ্র রায় (Dr. Bidhan Chandra Roy)। বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের স্বাধীনতা লাভের শর্ত হিসেবে দেশবিভাগের ফলে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ। এক দিকে উদ্বাস্তু সমস্যা, অন্য দিকে রুজি-রোজগারের দায়িত্ব গ্রহণ করতে হয়েছিল রাজ্য সরকারকে। মানুষের হাতে কাজ জোগানোর প্রথম ধাপ হিসেবেই বিধানচন্দ্র সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন শিল্পায়নে।
সেই কাজে তিনি কতটা সফল, তা অনেকেই জানেন।স্বাধীনতার ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে রাজ্য সরকারের উদ্যোকে একটি পুস্তিকা প্রকাশিত হয়। সেখানে ডা. বিধানচন্দ্র রায়ের আমলে পশ্চিমবঙ্গের শিল্পায়নে সামগ্রিক সাফল্যের একটি প্রতিবেদনে রাজ্যের শিল্পায়ন সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্য উঠে এসেছিল। যেখানে বলা হয়েছিল, ডা. রায়ের আমলে শিল্পের বিভিন্ন ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গই ছিল সর্বোচ্চ স্থানে। সে সময় এ রাজ্যের উন্নয়নের হার সর্বভারতীয় হার থেকে ১১.১৬ শতাংশ বেশি ছিল।
পরিসংখ্যানে প্রকাশ, ডা. বিধানচন্দ্র রায় যখন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী, তখন গোটা ভারতে শিল্প কারখানার সংখ্যা ১৩ হাজার ১৫৫টি। এর মধ্যে শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই ছিল প্রায় ২ হাজারটি। সর্বভারতীয় উৎপাদনের ৯২ শতাংশ রেজার ব্লেড, ৯০ শতাংশ পাটজাত দ্রব্য, ৮৭ শতাংশ বৈদ্যুতিক পাখা, ৮০ শতাংশ সেলাই মেশিন, ৭৮ শতাংশ রেল ওয়াগন, ৭৪ শতাংশ রবারের জুতো, ৭০ শতাংশ এনামেল-বাসন, ৪৯ শতাংশ রং এবং ২৯ শতাংশ কয়লা এই রাজ্যে উৎপাদিত হতো।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, স্বাধীনতার পরই দ্বিখণ্ডিত বঙ্গের শিল্পক্ষেত্র দীর্ণ হয়ে পড়ে। ডা. বিধানচন্দ্র রায় শিল্পায়নকে স্বাবলম্বনের প্রথম ধাপ হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। শিল্পায়নের মাধ্যমেই সামগ্রিক কর্মসংস্থানের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন তিনি।
তথ্যসূত্র: ডা. বিধানচন্দ্র রায় এবং কিছু অজানা তথ্য/ সঞ্জয় দত্ত/ কোলফিল্ড টাইমস শারদীয় ১৪১৭
ডা. বিধানচন্দ্র রায় সম্পর্কিত আরও প্রতিবেদন:
১৯২৬ সালে নিজের প্রথম রাজনৈতিক ভাষণ দেন বিধানচন্দ্র। ১৯২৮ সালে সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। বিস্তারিত পড়ুন এখানে: ডা. বিধানচন্দ্র রায়: বহুবিধ প্রতিভার সমাহার
১ জুলাই দিনটিকে চিকিৎসক দিবস হিসেবে পালন করা হয় ভারতে। ১৯৯১ সালে প্রথম বার এই দিনটি পালিত হয়। পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত ডা. বিধানচন্দ্র রায়ের প্রতি সম্মান জানিয়েই এই তারিখটি বেছে নেওয়া হয়েছে। বিস্তারিত পড়ুন এখানে: ভারতে কবে থেকে পালিত হয় জাতীয় চিকিৎসক দিবস, জানুন এই দিনটির ইতিহাস ও গুরুত্ব
মহাত্মা গান্ধী একটি প্রশ্ন করেছিলেন ডা. বিসি রায়কে: “কেন আমি তোমার চিকিৎসা নেব? তুমি কি আমার চার কোটি দেশবাসীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা দিতে পারো”? বিস্তারিত পড়ুন এখানে: ডা. বিধানচন্দ্র রায়ের কাছ থেকে যখন বিনামূল্যে চিকিৎসা নিতে চাননি মহাত্মা গান্ধী!