হাওড়া থেকে সিঙ্গুরগামী ‘সিঙ্গুর আন্দোলন লোকাল’ ট্রেনটির যাত্রাপথ সম্প্রসারণের প্রতিবাদে উত্তাল হল সিঙ্গুর স্টেশন। বুধবার ভোর থেকেই তৃণমূল নেতা এবং সিঙ্গুরের বাসিন্দারা ট্রেনের সামনে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ দেখান। নেতৃত্ব দেন রাজ্যের মন্ত্রী এবং সিঙ্গুরের তৃণমূল বিধায়ক বেচারাম মান্না।
সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে সিঙ্গুর স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেনটি পৌঁছতেই বেচারাম মান্না, তাঁর স্ত্রী ও হরিপালের বিধায়ক করবী মান্না এবং তৃণমূল কর্মীরা ট্রেনটির সামনে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাদের দাবি, ‘সিঙ্গুর আন্দোলন লোকাল’ ট্রেনটির যাত্রাপথ কোনও মতেই বদলানো যাবে না।
বেচারাম মান্না বলেন, “সিঙ্গুরের মানুষের সম্মান জানিয়ে এই ট্রেন চালু করেছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেলের নতুন সিদ্ধান্ত সিঙ্গুরবাসীর আবেগের ওপর আঘাত করছে। যতক্ষণ না রেল কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে, আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।”
রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ট্রেন বন্ধ করা হচ্ছে না। বরং ট্রেনের যাত্রাপথ সম্প্রসারণ করে একটি ট্রেনকে হরিপাল এবং অন্যটি তারকেশ্বর পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। রেলের তরফ থেকে আরও জানানো হয়েছে, লোকাল ট্রেনের কোনও নাম হয় না, বরং নির্দিষ্ট নম্বরের মাধ্যমেই তারা পরিচিত।
তবে সিঙ্গুরবাসীর ক্ষোভ এতে থামেনি। তাদের বক্তব্য, এই ট্রেনের সঙ্গে সিঙ্গুরের ঐতিহ্য এবং আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। সিঙ্গুর স্টেশনে জমায়েত হওয়া স্থানীয় বাসিন্দারা ট্রেনটির নাম ও যাত্রাপথ অক্ষুণ্ণ রাখার দাবিতে অনড়।
সিঙ্গুর আন্দোলন লোকাল ট্রেনটি ২০০৯ সালে চালু হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে। জমি আন্দোলনের সময় সিঙ্গুরের কৃষকদের লড়াইকে সম্মান জানিয়ে এই ট্রেনের নাম রাখা হয় ‘আন্দোলন লোকাল’।বুধবারের বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা জানিয়েছেন, এই সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র সিঙ্গুরের মানুষের জন্য সমস্যার কারণ নয়, বরং এটি সিঙ্গুর আন্দোলনের ইতিহাসকে মুছে ফেলার চেষ্টা।
তৃণমূল নেতৃত্ব রেল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে লাগাতার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে। অন্যদিকে, রেল কর্তৃপক্ষ তাদের সিদ্ধান্তে অনড়। ফলে সিঙ্গুর লোকাল ইস্যুতে উত্তাপ আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।