নিজস্ব প্রতিনিধি: আনন্দলোকে যাত্রা করলেন বাংলার বিশিষ্ট শ্রীখোল বাদক তিলক মহারাজ। সোমবার সকালে ৮০ বছর বয়সে বর্ধমানের মোহনপুরে, নিজ আশ্রমে প্রয়াত হলেন তিনি। রয়ে গেল তাঁর অসংখ্য গুণমুগ্ধ ভক্ত, বন্ধু এবং শিষ্য।
তিলক মহারাজ তাঁর দীর্ঘ সাংগীতিক জীবনে সঙ্গ করেছেন গোষ্ঠগোপাল দাস, পূর্ণদাস বাউল, সনাতনদাস বাউল, কালাচাঁদ দরবেশ, পরীক্ষিত বালা-সহ বাংলার বিশিষ্ট লোকসংগীত শিল্পীদের, সঙ্গলাভ করেছেন পণ্ডিত রবিশংকরজিরও। তিনি একজন শ্মশানবাসী সাধক ছিলেন, এটি বর্তমানে লোকসাধনার বিলুপ্তপ্রায় একটি ধারা।

২০১৩-তে তিলক মহারাজকে ‘সহজিয়া সম্মানে’ ভূষিত করা হয়েছিল। বাংলার প্রায় প্রতিটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানেই ওঁকে দেখা যেত। জি বাংলার সারেগামাপা-র মঞ্চে তিনি যখন অতিথি হয়ে গিয়েছিলেন, ভারতবিখ্যাত সংগীত পরিচালক শান্তনু মৈত্র, মোনালি ঠাকুর এবং শ্রীকান্ত আচার্য ওঁর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে আশীর্বাদ নিয়েছিলেন। তিলক মহারাজ ইদানীং পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্রের উদ্যোগে ও সহজিয়া ফাউন্ডেশনের সহায়তায়, ‘গুরু-শিষ্য পরম্পরা’র শ্রীখোল প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের গুরু হিসেবে ছিলেন।
গত কয়েক মাস ধরে তিলক মহারাজ হার্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। সহজিয়া ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ডা. শিশির নস্কর এবং ডা. পার্থপ্রতিম গুহর সহায়তায় কয়েক মাস আগে ব্যারাকপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ডা. রশিদ জেয়া আয়ুবির অধীনে তাঁর সফল ওপেন হার্ট সার্জারি হয়েছিল। তিনি প্রায় সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন।

সহজিয়ার কর্ণধার এবং জি বাংলা সারেগামাপার গ্রুমার লোকসংগীতশিল্পী দেব চৌধুরীর কথায়, “অপারেশান থিয়েটারে ঢোকার আগের মুহূর্তে আমরা সবাই খুবই দুশ্চিন্তায় ছিলাম, কিন্তু তিলকদার একই রকম এনার্জি আর মনের জোর দেখেছিলাম। লোকায়ত মানুষদের এই অফুরান প্রাণশক্তি আমাদের প্রতি মুহূর্তে বিস্মিত করে, আরো ভালো কাজের শক্তি জোগায়। তাঁর গুণমুগ্ধরা মঞ্চে আর টেলিভিশনে তাঁর স্বমহিমায় প্রত্যাবর্তনের আশায় ছিলেন, কিন্তু শেষরক্ষা হল না।”
ছবি সৌজন্যে সহজিয়া ফাউন্ডেশন
আরও পড়ুন
দুয়ারে গ্রীষ্ম, চাই একটু স্বস্তি…
আজ থেকে বৈঠক শুরু রিজার্ভ ব্যাঙ্কের, ফের সুদের হার বৃদ্ধির সম্ভাবনা