জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) কার্যকর করার দাবি উঠল এবার কলকাতা হাই কোর্টে। এ রাজ্যে এনআরসি চালুর দাবিতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন পারমিতা দে নামে এক ব্যক্তি। তাঁর আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি আদালতে মামলাটি পেশ করলে, কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি স্মিতা দাস দের ডিভিশন বেঞ্চ মামলাটি গ্রহণ করে রাজ্যের কাছে জানতে চেয়েছেন, এই বিষয়ে অন্য কোনও মামলা বিচারাধীন রয়েছে কি না।
মঙ্গলবার শুনানি
আদালত জানিয়েছে, এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী মঙ্গলবার। তখন রাজ্যকে তার অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। এনআরসি-র মতো একটি স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে মামলার গুরুত্ব অনেক, কারণ এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে নাগরিকত্বের প্রশ্ন, ভোটার তালিকা, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা এবং মানবিক সুরক্ষা।
রাজনীতিতে তোলপাড়
এই মামলা দায়েরের খবর সামনে আসতেই রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে শুরু হয়েছে বিতর্ক। মাত্র কয়েক দিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অসমে এনআরসি প্রক্রিয়া নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, অসমে নাগরিকদের ‘বিদেশি’ তকমা দিয়ে বঞ্চিত করা হচ্ছে অধিকার থেকে।
অন্যদিকে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন, “পিছনের দরজা দিয়ে বাংলায় এনআরসি চালু করার চেষ্টা করছে বিজেপি।” এই আবহে কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।
অসমের প্রেক্ষাপট
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৩১ অগস্ট অসমে এনআরসি-র চূড়ান্ত খসড়া তালিকা প্রকাশিত হয় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে। তালিকায় দেখা যায়, ৩ কোটি ৩০ লক্ষ আবেদনকারীর মধ্যে ১৯ লক্ষ ৭ হাজার জনের নাম বাদ পড়েছে। তাঁদের মধ্যে বহু ভারতীয়ও রয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। আধার না থাকায় তাঁরা বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে জানা যায়।
ভবিষ্যৎ কী?
মামলাকারীর দাবি, পশ্চিমবঙ্গে বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তাই অসমের মতো এ রাজ্যেও এনআরসি চালু করা হোক। আদালত বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করেছে। তবে এখন দেখার, রাজ্যের কী অবস্থান হয় এবং পরবর্তী শুনানিতে কী সিদ্ধান্ত নেয় আদালত।
আরও পড়ুন: পাড়ায় পাড়ায় ছোট সমস্যার সমাধানে ‘বুথ ক্যাম্প’, ভোটের মুখে নতুন সরকারি কর্মসূচি মমতার