কুলতলি: কয়েক দিন ধরে কুলতলিতে ত্রাস ছড়ানো রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারকে অবশেষে মঙ্গলবার ভোর সাড়ে তিনটায় খাঁচাবন্দি করলেন বনকর্মীরা। সোমবার বাঘটিকে ধরতে গিয়ে গুরুতর আহত হন এক বনকর্মী। এরপরেই তৎপরতা আরও বাড়িয়ে রাতভর নজরদারির পর বাঘ ধরার জন্য টোপ হিসাবে রাখা ছাগলেই ফাঁদে পড়ে দক্ষিণরায়।
কিভাবে ধরা পড়ল বাঘ?
সোমবারই বাঘের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পর বন দফতর কুলতলির একটি সব্জি খেতে দু’টি খাঁচা পাতে। টোপ হিসাবে রাখা হয় ছাগল। মঙ্গলবার ভোর ৩টে ৩২ মিনিটে বাঘটি সেই টোপে ধরা পড়ে। বন দফতর সূত্রে খবর, প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর আজই গভীর জঙ্গলে ছাড়া হতে পারে বাঘটিকে।
আতঙ্ক, আহত বনকর্মী ও গ্রামবাসীদের উদ্বেগ
বাঘ ধরার চেষ্টার মধ্যেই সোমবার বনকর্মী গণেশ শ্যামলের উপর হামলা করে বাঘটি। ঘাড়ে কামড় বসিয়ে সে আবার গভীর জঙ্গলে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত গণেশকে উদ্ধার করে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এরপর থেকেই গ্রামবাসীদের আতঙ্ক আরও বেড়ে যায়। বনকর্মীদেরও মনোবলে কিছুটা ধাক্কা লাগে, তবে তারা চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখেননি। মঙ্গলবার ভোরে বাঘ ধরা পড়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই স্থানীয়রা ওই সব্জি খেতে ভিড় জমাতে শুরু করেন।
বাঘ জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এলো কেন?
বন দফতরের ডিএফও নিশা গোস্বামী জানিয়েছেন, ১০ বছর বয়সী এই পুরুষ বাঘটি কেন লোকালয়ে চলে এলো, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে তিনি বলেন, বয়স বেশি হলে, জঙ্গলে দ্বন্দ্ব হলে বা বাঘের সংখ্যা বেড়ে গেলে তারা জঙ্গল ছাড়তে পারে।
তিনি আরও জানান, বাঘটি সামান্য পরিমাণে টোপের ছাগল খেয়েছে। প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন অনুযায়ী এটিকে গভীর জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে। তবে কোথায় তা এখনও নির্ধারিত হয়নি।
অবশেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস
বাঘ ধরার পর এলাকাবাসীর আতঙ্ক অনেকটাই কেটেছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জঙ্গলে খাদ্যের সংকট বা অন্য কোনও কারণে বাঘ লোকালয়ে আসছে কি না, তা খতিয়ে দেখা দরকার। বন দফতর বিষয়টি নিয়ে আরও বিস্তারিত তদন্ত চালাবে বলে জানিয়েছে।