উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, নিমপীঠ: চাষের কাজে এ বার ড্রোনের ব্যবহার করে কৃষি কাজে কার্যত আরেক বিপ্লব এল সুন্দরবনে। বিশাল মাপের ড্রোনের সাহায্য চাষের জমিতে এ বার সার প্রয়োগ। সুন্দরবনের কৃষকদের কম সময় খরচ করে এবং অর্থ সাশ্রয় করে কী ভাবে চাষকে আরও উন্নত এবং উন্নততর করা যায় সে দিকে এগিয়ে এল ভারত সরকারের কৃষি অনুসন্ধান পরিষদ।
ড্রোনের মাধ্যমে জমিতে সার ও কীটনাশক ছড়িয়ে চাষ করা তাই শুরু হল জয়নগর-২ ব্লকের নিমপীঠ শ্রীরামকৃষ্ণ আশ্রমের কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে। এই কেন্দ্রের উদ্যোগে ড্রোনের মাধ্যমে জমিতে রাসায়নিক সার জৈব কীটনাশক প্রয়োগের কাজ তাই শুরু হল। কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি অনুসন্ধান পরিষদ দেশের নির্দিষ্ট কয়েকটি কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রে পরীক্ষামূলক ভাবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে ড্রোনের মাধ্যমে কৃষি জমিতে রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক প্রয়োগের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। আর এই পরিষেবা পাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের পাঁচটি কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে। তার মধ্যে অন্যতম নিমপীঠ কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র।
নিমপীঠ কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের এই পরিষেবা পৌঁছোচ্ছে সুন্দরবনের বিভিন্ন ব্লকের মধ্যে জয়নগর-১ ও ২ ব্লক মথুরাপুর ২, পাথরপ্রতিমা, সাগর, নামখানা, কুলতলি-সহ সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা। চাষিরা এই ড্রোন প্রযুক্তির মাধ্যমে তাদের জমিতে রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক প্রয়োগের সুবিধা পাবেন বলে জানানো হল নিমপীঠ কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রে পক্ষ থেকে।
এ বিষয়ে নিমপীঠ কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের প্রধান বিজ্ঞানী চন্দনকুমার মণ্ডল বলেন, এতদিন এক একর জমিতে কীটনাশক বা রাসায়নিক সার ছড়াতে সময় লাগত ছয় থেকে আট ঘন্টা। আর এখন এই ড্রোনের মাধ্যমে মাত্র ৮ মিনিটে এক একর জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ করা যাচ্ছে। এর ফলে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকার চাষীদের অর্থ এবং সময় বাঁচছে।
তিনি আরও বলেন, এটাতে মূলত সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকার কৃষক যাঁরা আমাদের কাছে জানাচ্ছেন, তাঁদের আমরা প্রাথমিক ভাবে ন্যানো ইউরিয়ার স্প্রে ব্যবস্থা করছি। তবে এ বিষয়ে এক কৃষক জানান, “এত কম সময়ের মধ্যে এবং এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে জমিতে সার এবং কীটনাশক প্রয়োগ করতে পেরে আমরা খুশি”। আর এই ভাবে কমসময়ের মধ্যে চাষের জমিতে সার প্রয়োগ কৃষি কাজে সুন্দরনবনে বিপ্লব ঘটালে বলে মনে করছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: ফের ঝড়বৃষ্টির ইঙ্গিত দক্ষিণবঙ্গে, কবে থেকে কোথায় কোথায় ঘনিয়ে আসছে দুর্যোগ