উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়: সুন্দরবনের নদীবাঁধ পরিদর্শন ও গোসাবা বিডিও অফিসে ঢোকার মুখে বিক্ষোভের মধ্যে পড়লেন রাজ্যের সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা।
ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে গত সপ্তাহে উপকূলবর্তী অঞ্চলে কোথায় কী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা খতিয়ে দেখছে রাজ্য সরকার। সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরাও মঙ্গলবার এই কাজ দেখতে সুন্দরবনের গোসাবায় প্রশাসনিক বৈঠকে গিয়েছিলেন। সঙ্গে ছিলেন জয়নগরের সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল, গোসাবার বিধায়ক সুব্রত মণ্ডল, জেলা পরিষদের সভাধিপতি নীলিমা বিশাল মিস্ত্রী-সহ অন্য আধিকারিকেরা। কিন্তু বৈঠক শুরুর আগেই বিপত্তি।
গোসাবার বিডিও অফিসে বৈঠকের কথা ছিল। দুপুর ১২টা নাগাদ মন্ত্রী বিডিও অফিসের সামনে পৌঁছতেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন এলাকাবাসীরা। অভিযোগ মূলত গোসাবার বিধায়কের বিরুদ্ধে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, বিধায়ক এলাকার স্থানীয় মানুষজনদের থেকে টাকা তুলেছিলেন। কিন্তু পরে সেই টাকা ফেরত দেননি বলে অভিযোগ। কবে তাঁরা টাকা ফেরত পাবেন, সেই প্রশ্ন তুলে মন্ত্রী, বিধায়কের সামনেই বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন এলাকাবাসীরা। বিক্ষোভকারীদের দাবি, তাঁরা তৃণমূলেরই সমর্থক।
সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বিক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলেন।তিনি তাঁদের ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা করেন। আশ্বাস দেন এই বিষয়টি তিনি মুখ্যমন্ত্রীর গোচরে আনবেন। তিনি এদিন বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বলেন, “আমি আজ সরকারি কর্মসূচিতে এসেছি। যদি আপনারা চান, আমি এখান থেকে ফিরে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পুরো ঘটনার কথা জানাব”।
কিন্তু সেই আশ্বাসে দৃশ্যত সন্তুষ্ট হননি বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীরা।কবে টাকা ফেরত পাওয়া যাবে, সে বিষয়ে তাঁরা বিধায়কের থেকে তৎক্ষণাৎ উত্তর চাইতে থাকেন। বিক্ষোভকারীদের হই হট্টগোলের মাঝে ক্ষণিকের জন্য দৃশ্যত রেগেও যেতে দেখা যায় মন্ত্রীকে কিছুটা ধমক দিয়েই বলেন, “একটিও বাজে কথা যদি কেউ বলেন, তাঁর রেহাই নেই। আমি মন্ত্রী হিসাবে এখানে এসেছি”।
পরে বিডিও অফিসের ভিতরে তাঁরা প্রবেশ করার সময়েই বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন এলাকা বাসীরা। বিধায়ক সুব্রতকে বিভিন্ন ধরনের কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়। লোকসভা ভোটের সময় বিধায়ক কোথায় ছিলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এলাকাবাসী। আড়ালে-আবডালে বিধায়ক তাঁর অনুগামীদের দিয়ে বিজেপির হয়ে কাজ করিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠে আসে। বিক্ষোভকারীদের ভিড় থেকে ভেসে আসে, বিজেপির বিধায়ক। কেউ আবার বললেন, আপনি বিধায়ক হওয়ার যোগ্য নন।
তবে বিধায়ক তাঁর বিরুদ্ধে তোলা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে অপপ্রচার করা হচ্ছে আমার বিরুদ্ধে”। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়।