মুর্শিদাবাদ: নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে গ্রেফতার আরও এক তৃণমূল বিধায়ক। মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে গ্রেফতার করল সিবিআই। তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১২টা থেকে টানা জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার হলেন বড়ঞার বিধায়ক। পুকুরে জোড়া ফোন ফেলে দিয়েও হল না শেষরক্ষা। পুকুর থেকে বিধায়কের মোবাইল ফোন দুটি উদ্ধারের জন্য পাম্প বসানো হয়। পুকুর থেকে উদ্ধার হয় একটি ফোন। পাঁচটি ব্যাগ থেকে উদ্ধার একাধিক নথি নিয়োগ সংক্রান্ত নথি, খবর সিবিআই সূত্রে। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে তদন্তে অসহযোগিতা ও তথ্য প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা, মূলত এই দুই অভিযোগে প্রাথমিকভাবে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর।
জানা গিয়েছে, সোমবার ভোর সওয়া ৫টা নাগাদ গ্রেফতার করা হয়েছে তৃণমূল বিধায়ককে। জীবনকৃষ্ণকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হবে দূর্গাপুরের সিবিআই ক্যাম্পে। ওই ক্যাম্পে তাঁর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হবে। সেখান থেকে নিজাম প্যালেসের উদ্দেশে জীবনকৃষ্ণকে নিয়ে রওনা দেবেন সিবিআই আধিকারিকরা।
জানা গিয়েছে, ২০১৮ সাল থেকে ২০২২ পর্যন্ত প্রচুর সম্পত্তি কিনেছেন জীবনকৃষ্ণ। কান্দিতে রয়েছে একটি রাইস মিল। রয়েছে ৪ বিঘে জমি। একাধিক জমি রয়েছে, যেগুলির টাকা দেওয়া হলেও রেজিস্ট্রি হয়নি। কান্দি হাই স্কুলের পিছনে রয়েছে বিধায়কের একটি পুকুর ও গ্যাসের গোডাউন।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত মুর্শিদাবাদের কৌশিক ঘোষের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন জীবনকৃষ্ণ। অভিযোগ, তাঁর বাড়ির আশেপাশে কম করে ৩৫ বিঘা জমি রয়েছে বিধায়কের। এ ছাড়া, বীরভূমেও একাধিক জায়গায় তার জমি ও সম্পত্তি রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সিবিআই সূত্রে খবর, জীবনকৃষ্ণের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ২ হাজারের উপরে শিক্ষক নিয়োগের প্রার্থী তালিকা ও টাকা লেনদেনের হদিস মিলেছে।
তদন্তকারীরা মনে করছেন, তিন হাজারেরও বেশি চাকরিপ্রার্থী মাথা পিছু ৬-১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দিয়েছেন। প্রাথমিকে ৬ লক্ষ টাকা, আর উচ্চ প্রাথমিকের ক্ষেত্রে ১৫ লক্ষ টাকা মাথা পিছু প্রার্থীদের থেকে নেওয়া হয়েছে। এই গোটা টাকার অঙ্কটা একটা গড় হিসাব করলে বিষয়টা ৩০০ কোটির কাছাকাছিই দাঁড়াচ্ছে। গোয়েন্দারা মনে করছেন, কেবলমাত্র এই বিধায়কের মাধ্যমেই ৩০০ কোটি টাকা তোলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: তীব্র গরমে খোলা আকাশের নীচে সরকারি অনুষ্ঠান, মহারাষ্ট্রে মৃত ১১