বাংলাদেশ: ২২৮ (৪৯.৪ ওভার) (তাওহিদ হৃদয় ১০০, জাকের আলি ৬৮, মহম্মদ শামি ৫-৫৩, হর্ষিত রানা ৩-৩১)
ভারত: ২৩১-৪ (৪৬.৩ ওভার) (শুবমন গিল ১০১ নট আউট, রোহিত শর্মা ৪১, কে এল রাহুল ৪১ নট আউট, রিশাদ হোসেন ২-৩৮)
দুবাই: টসে জিতে ব্যাট নিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু তার ফায়দা তুলতে পারল না তারা। ইনিংসের গোড়াতেই বড়ো বিপর্যয়। সেই বিপর্যয় থেকে দলকে টেনে তুললেন তাওহিদ হৃদয়। করলেন শতরান। সঙ্গী হিসাবে পেলেন জাকের আলিকে। দলকে সম্মানজনক রানে পৌঁছে দিলেন। কিন্তু ভারতকে হারানোর পক্ষে তা যথেষ্ট ছিল না। ৩.৩ ওভার বাকি থাকতেই জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছে গেল ভারত। সৌজন্যে শুবমন গিলের সেঞ্চুরি। এ বারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির গ্রুপ ‘এ’র দ্বিতীয় ম্যাচে ভারত ৬ উইকেটে হারিয়ে দিল বাংলাদেশকে।
বৃহস্পতিবার দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আয়োজিত ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশ করে ২২৮ রান। নির্ধারিত ৫০ ওভারের ২টি বল বাকি থাকতেই তাদের ইনিংস শেষ হয়ে যায়। হৃদয় করেন ১১৮ বলে ১০০ রান এবং জাকের আলি করেন ১১৪ বলে ৬৮ রান। ভারতীয় পেসার মহম্মদ শামি এবং হর্ষিত রানা বাংলাদেশের ৮টি উইকেট তুলে নেন। এর মধ্যে শামি ৫৩ রান দিয়ে ৫ উইকেট দখল করেন। রানা ৩১ রান দিয়ে পান ৩ উইকেট। জবাবে ৪৬.৩ ওভারে ভারত করে ৪ উইকেটে ২৩১ রান। ভারত জয়ে পৌঁছোয় মূলত গিল (১২৯ বলে ১০১ রান নট আউট), কে এল রাহুল (৪৭ বলে ৪১ রান) এবং রোহিত শর্মার (৩৬ বলে ৪১ রান) ব্যাটিংয়ের সুবাদে।
ইনিংসের গোড়াতেই বাংলাদেশের বিপর্যয়
প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে ৩৫ রানের মধ্যে ৫টি উইকেট হারায় নাজমুল হোসেন শান্তর দল। ওপেনার তানজিদ হোসেন এক প্রান্তে উইকেট রেখে অন্য প্রান্তে দলের পতন দেখতে থাকেন। একে একে ফিরে যান সৌম্য সরকার, অধিনায়ক শান্ত এবং মেহেদি হাসান মিরাজ। এর মধ্যে সৌম্য আর শান্ত রানের খাতাই খুলতে পারেননি। মিরাজ করেন ৫ রান। ২৫ বলে ২৫ রান করে দলের ৩৫ রানের মাথায় বিদায় নেন তানজিদ। ওই একই রানে শূন্য ঝুলি নিয়ে ফিরে যান মুসফিকুর রহমান। প্রথম ৫টি উইকেটের মধ্যে ২টি করে দখল করেন শামি এবং রানা। অন্যটি নেন অক্ষর পটেল।

রোহিত শর্মা এবং শুবমন গিলের ওপেনিং জুটি। ছবি BCCI ‘X’ থেকে নেওয়া।
এর পরই দলের হাল ধরেন তাওহিদ হৃদয় এবং জাকের আলি। তাঁরা দলের রান পৌঁছে দেন ১৮৯-এ। এই দুই ব্যাটার ষষ্ঠ উইকেটে যোগ করেন ১৫৪ রান। এক দিনের ম্যাচে ষষ্ঠ উইকেটে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রান। জাকের আলিকে তুলে নেন শামি। এর পর হৃদয়কে কিছুটা সাহায্য করেন রিশাদ হোসেন। ১২ বলে ১৮ রান করে রিশাদ রানার বলে পাণ্ড্যর হাতে ক্যাচ দিয়ে যখন বিদায় নেন দলের রান তখন ২১৪। এর পর আর বাংলাদেশ বেশি দূর এগোতে পারেনি। আর মাত্র ১৪ রান করে তারা গুটিয়ে যায়। হৃদয়ের ভাগ্য ভালো। ঠিক ১০০ রান করে তিনি রানার বলে আউট হন।
অবিচ্ছেদ্য থেকে জয়ে পৌঁছে দিলেন শুবমন, রাহুল
জয়ের জন্য ভারতের দরকার ছিল ২২৯ রান। স্বচ্ছন্দেই খেলা শুরু করেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা এবং শুবমন গিল। রোহিতের ব্যাটিং নিয়ে কিছুটা সংশয় ছিল। কিন্তু এ দিন তিনি স্বাভাবিক ভাবেই তাঁর গতিতেই খেলা চালিয়ে যান। ৩৬ বলে ৪১ রান করে তাসকিন আহমেদের বলে রোহিত যখন বিদায় নেন দলের রান তখন ৬৯। শুবমন গিলের সঙ্গী হন বিরাট কোহলি। ৩৮ বলে ২২ রান করে বিদায় নেন কোহলি। এর পর শ্রেয়স আইয়ার আর অক্ষর পটেল দ্রুত বিদায় নেন। বাংলাদেশের শিবিরে একটু আশার আলো দেখা যায়। সেই আশায় ছাই দিয়ে অবিচ্ছেদ্য থাকেন শুবমন গিল এবং কে এল রাহুল। পঞ্চম উইকেটে অবিচ্ছেদ্য থেকে ৮৭ রান যোগ করে জয় এনে দেন গিল-রাহুল জুটি। প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ হন শুবমন গিল।