কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর) ২২২/৬ (শ্রেয়স আইয়ার ৫০, ফিল সল্ট ৪৮, ক্যামেরন গ্রিন ২-৩৫, যশ দয়াল ২-৫৬)
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (আরসিবি) ২২১ (উইল জ্যাকস্ ৫৫, রজত পতিদার ৫২, আন্দ্রে রাসেল ৩-২৫, হরষিত রানা ২-৩৩)
কলকাতা: এবারের আইপিএল-এ একটা হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখলেন ক্রিকেটমোদীরা। ওই ম্যাচে মাত্র ১ রানে কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর) হারাল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে (আরসিবি)। ফিল সল্ট ও অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ারের ঝোড়ো ব্যাটিং এবং আন্দ্রে রাসেলের মারকাটারি ব্যাটিং ও বোলিং-এর ফায়দা তুলল কেকেআর। প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ হলেন আন্দ্রে রাসেল।
টসে জিতে ফিল্ডিং নিল আরসিবি
রবিবার কলকাতার ইডেন গার্ডেন্স-এ আয়োজিত ম্যাচে টসে জিতে ফিল্ডিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন আরসিবির অধিনায়ক ফাফ দু প্লেসি। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত থেকে খুব একটা লাভবান হয়নি আরসিবি। প্রথম উইকেটের জুটিতে কেকেআর-এর ফিল সল্ট এবং সুনীল নারিন ৪.২ ওভারে ৫৬ রান তুলে ফেলেন। এর মধ্যে ফিল সল্টেরই অবদান ৪৮ রান। শুরু থেকেই ঝড় তোলেন ফিল সল্ট। তিনি ৪৮ রান করেন মাত্র ১৪ বলে। এর মধ্যে ৩টে ছয় এবং ৭টা চার। তাঁর স্ট্রাইক রেট ছিল ৩৪২.৫৫। দুর্ভাগ্যের ব্যাপার, সল্ট অল্পের জন্য সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেটের রেকর্ডটি ভাঙতে পারলেন না।
এর পরে নিয়মিত ব্যবধানে কেকেআর-এর উইকেট পড়তে থাকে। কিন্তু রান ওঠার গতি কখনও থেমে যায়নি। ৯৭ রানের মধ্যে ৪ উইকেট পড়ে যায়। তবে সেই রান ওঠে মাত্র ৮.২ ওভারে। এদিন নারিনের অবদান ছিল মাত্র ১০ রান। আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা নারিন এ দিন অনেকটাই নিষ্প্রভ ছিলেন। ৯৭ রানে ৪ উইকেট পড়ার পর দলের হাল ধরেন অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার এবং রিঙ্কু সিং।
সপ্তম উইকেটে ঝড় রাসেল-রমনদীপের
পঞ্চম উইকেটে ৪০ রান যোগ করার পর রিঙ্কু নিজস্ব ২৪ রানের মাথায় ফার্গুসনের বলে যশ দয়ালকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন। ষষ্ঠ উইকেটে শ্রেয়সের সঙ্গী হন আন্দ্রে রাসেল। ওই জুটিতে মাত্র ৪.১ ওভারে যোগ হয় ৪২ রান। ৩৬ বলে ঠিক অর্ধশত রান করে ক্যামেরন গ্রিনের বলে দু প্লেসিকে ক্যাচ নিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান শ্রেয়স। সপ্তম উইকেটের জুটিতে ব্যাটিং-এ ঝড় তুলে বাকি কাজটা সম্পূর্ণ করেন আন্দ্রে রাসেল এবং রমনদীপ সিংহ। শেষ ১৬ বলে অবিচ্ছিন্ন থেকে তাঁরা যোগ করেন ৪২ রান। রাসেল নট আউট থাকেন ২০ বলে ২৭ করে এবং রমনদীপ নট আউট থাকেন মাত্র ৯ বলে ২৪ করে।
আরসিবির আপ্রাণ চেষ্টা বিফল হল
জয়ের জন্য আরসিবির দরকার ছিল ২২৩ রান। ৩৫ রানের মধ্যে দলের দুই নির্ভরযোগ্য ব্যাটার বিরাট কোহলি এবং অধিনায়ক ফাফ দু প্লেসি প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলেও পরিস্থিতি সামলে দেন উইল জ্যাকস্ এবং রজত পতিদার। শুধু তা-ই নয়, তাঁরা দুর্দান্ত গতিতে রান তুলতে থাকেন। তৃতীয় উইকেটের জুটিতে মাত্র ৮ ওভারে তাঁরা যোগ করেন ১০২ রান। ৩২ বলে ৫৫ রান করে দলের ১৩৭ রানের মাথায় আউট হন জ্যাকস্। তাঁকে তুলে নেন আন্দ্রে রাসেল। ক্যাচ ধরেন অংক্রিশ রঘুবংশী।
মাত্র ৩ বল পরেই আরসিবিকে আবার ধাক্কা আন্দ্রে রাসেলের। দলের স্কোরের সঙ্গে মাত্র ১ রান যোগ হতেই বিদায় নেন রজত পতিদার। মাত্র ২৩ বলে ৫২ রান করে হরষিত রানাকে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন তিনি। এর পর নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট পড়তে থাকে আরসিবি-র। তবু সুয়াস প্রভুদেশাই, দীনেশ কার্তিক এবং কর্ন শর্মার চেষ্টায় আরসিবি প্রায় ধরে ফেলেছিল কেকেআর-কে। কিন্তু দুর্ভাগ্য শেষরক্ষা হল না।
২০ বলে ২৭ রান করে এবং ২৫ রানে ৩ উইকেট দখল করে এ দিন প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ হলেন আন্দ্রে রাসেল। ২৫ কোটি টাকায় কেনা কেকেআর-এর মিশেল স্টার্কের এ দিনের অবদান ৩ ওভারে ৫৫ রান দিয়ে ১ উইকেট সংগ্রহ করা।