নেদারল্যান্ডস: ২২৯ (স্কট এডোয়ার্ডস ৬৮, ভেসলে বারেসি ৪১, মুস্তাফিজুর রহমান ২-৩৬, মাহেদি হাসান ২-৪০)
বাংলাদেশ: ১৪২ (৪২.২ ওভার) (মেহেদি হাসান মিরাজ ৩৫, পাউল ফান মিকেরেন ৪-২৩, বাস ডে লিডে ২-২৫)
কলকাতা: এ বারের বিশ্বকাপে ইতিমধ্যেই ইতিহাস গড়ে ফেলেছে নেদারল্যান্ডস। তারা হারিয়েছে সাউথ আফ্রিকাকে। শনিবার তারা হারাল বাংলাদেশকে। তবে নেদারল্যান্ডস যতটা না হারাল, তার চেয়ে বলা ভালো, আত্মসমর্পণ করল বাংলাদেশ।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে খুব যে বেশি স্কোর করেছিল নেদারল্যান্ডস তা নয়, ২২৯ রান। অধিনায়ক স্কট এডোয়ার্ডস এবং কিছুটা ভেসলে বারেসির ব্যাটিং-এর সুবাদে এই রান করল তারা। লক্ষ্যমাত্রা যে কঠিন, তা নয়। কিন্তু এই রানও তাড়া করতে হিমশিম খেয়ে গেল বাংলাদেশ। তারা নির্ধারিত ৫০ ওভারের ৭.৪ ওভার বাকি থাকতেই গুটিয়ে গেল। করল মাত্র ১৪২ রান। নেদারল্যান্ডসের কাছে হেরে গেল ৮৭ রানে। তাদের এত কম রানে পতনের মূল কারণ নেদারল্যান্ডসের বোলার পাউল ফান মিকেরেনের দুর্ধর্ষ বোলিং। মাত্র ২৩ রান দিয়ে তিনি ৪টি উইকেট দখল করেন।
স্কট এডোয়ার্ডস-এর জন্যই সম্মানজনক রান ডাচদের
শনিবার কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে আয়োজিত ম্যাচে টসে জিতে ব্যাট নেয় নেদারল্যান্ডস। শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে তারা। মাত্র ৪ রানের মধ্যে ২টি উইকেট পড়ে যায়। হাল ধরেন ভেসলে বারেসি এবং কলিন আকারমান। তৃতীয় উইকেটের জুটিতে তাঁরা যোগ করেন ৫৯ রান। এই দুই ব্যাটারই দলের ৬৩ রানে আউট হয়ে যান। ফলে ৬৩ রানের মধ্যে ৪টি উইকেট হারায় ডাচরা।
এর পর জুটি বাঁধেন অধিনায়ক স্কট এডোয়ার্ডস এবং বাস ডে লিডে। তাঁরা দলের রান নিয়ে যান ১০৭-এ। তাস্কিন আহমেদের বলে মুস্তাফিজুর রহমানকে ক্যাচ দিয়ে লিডে আউট হন। এ বার সিব্রান্ড এঙ্গেলব্রেশট্কে সঙ্গী করে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন অধিনায়ক।
৮৯ বলে ৬৮ রান করে মুস্তাফিজুর রহমানের বলে মেহেদি হাসান মিরাজকে ক্যাচ দিয়ে স্কট যখন আউট হন তখন দলের রান ১৮৫। এর পর আর বেশি দূর এগোতে পারেনি নেদারল্যান্ডস। শেষ ৪টি উইকেটে ওঠে ৪৪ রান। বাংলাদেশের কাছে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ২৩০ রান।
সহজেই হার মানল বাংলাদেশ
লক্ষ্যমাত্রা ছিল খুবই সাধারণ। তাই বাংলাদেশের সমর্থকরা আশায় বুক বেঁধেছিলেন এ বারের বিশ্বকাপে আর-একটা জয় দেখার জন্য। কিন্তু বিধি বাম। এত সহজেই বাংলাদেশ হেরে বসবে সেটা কল্পনাতেও আনতে পারেননি তাঁরা।
এ বারের বিশ্বকাপে কলকাতায় খেলা শুরু হল খুব কাছের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশকে দিয়ে। ইডেন গার্ডেন্সের মাঠ আজ বাংলাদেশের সমর্থকে ভরা ছিল। কিন্তু তাদের সামনেই ভরাডুবি হল বাংলাদেশের। মাত্র ১৪২ রানে গুটিয়ে গেল তারা। শুরুতেই বিপর্যয়। দলের ১৯ রানের মাথায় দুটি উইকেট পড়ে যায়। লিটন দাস এবং তানজিদ হাসান আউট হয়ে যান যথাক্রমে আরিয়ান দত্ত এবং ফান বিকের বলে। দু’জনেই অধিনায়ক এডোয়ার্ডসকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন।
বাংলাদেশের কোনো ব্যাটারই নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেননি। পাউল ফান মিকেরেন এবং বাস ডে লিডের বলের কাছে তারা হার মানেন। শেষ পর্যন্ত ১০ উইকেটে মাত্র ১৪২ রান তোলে বাংলাদেশ। হেরে যায় ৮৭ রানে।
লিগে করুণ অবস্থা বাংলাদেশের
এ দিনের ম্যাচের পর এ বারের বিশ্বকাপ থেকে বাংলাদেশের বিদায়ের ঘণ্টা বাজতে শুরু করল। ৬টি ম্যাচ খেলে মাত্র ১টিতে জিতে তাদের সংগৃহীত পয়েন্ট ২ মাত্র। লিগ টেবিলে নবম স্থানে রইল তারা। সব চেয়ে করুণ অবস্থা বাংলাদেশের। ইংল্যান্ডের চেয়েও খারাপ। কারণ লিগ টেবিলে ইংল্যান্ড একেবারে নীচে থাকলেও তারা বাংলাদেশের থেকে ১টি ম্যাচ কম খেলেছে।
অন্য দিকে এ দিনের জয়ের পর ৬ ম্যাচের ২টিতে জিতে নেদারল্যান্ডস সংগ্রহ করল ৪ পয়েন্ট। লিগ টেবিলে তারা রইল অষ্টম স্থানে।
আরও পড়ুন
বিশ্বকাপ ক্রিকেট ২০২৩: কোন চার দেশ সেমিফাইনালে যেতে পারে?