Home খেলাধুলো ক্রিকেট বিশ্বকাপ ক্রিকেট ২০২৩: হারের বদলা, উদ্বোধনী ম্যাচে ‘চ্যাম্পিয়ন’ ইংল্যান্ডকে ৯ উইকেটে হারাল...

বিশ্বকাপ ক্রিকেট ২০২৩: হারের বদলা, উদ্বোধনী ম্যাচে ‘চ্যাম্পিয়ন’ ইংল্যান্ডকে ৯ উইকেটে হারাল ‘রানার্স’ নিউজিল্যান্ড

0
জয়ের দুই কান্ডারি রচিন রবীন্দ্র ও ডেভন কনওয়ে। ছবি সৌজন্যে আইসিসি।

ইংল্যান্ড: ২৮২-৯ (জো রুট ৭৭, জোস বাটলার ৪৩, ম্যাট হেনরি ৩-৪৮, গ্লেন ফিলিপস ২-১৭)

নিউজিল্যান্ড: ২৮৩-১ (৩৬.২ ওভার) (ডেভন কনওয়ে ১৫২ নট আউট, রাচিন রবীন্দ্র ১২৩ নট আউট, স্যাম কুরান ১-৪৭)

অমদাবাদ: অবিশ্বাস্য জয়। দুর্ধর্ষ জয়। দুটি পরাজয়ের প্রতিশোধ নিল নিউজিল্যান্ড। ২০১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে এই নিউজিল্যান্ডকেই হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইংল্যান্ড। আর গত সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ড ঘরের মাটিতে চার ম্যাচের সিরিজে নিউজিল্যান্ডকে ৩-১ ম্যাচে হারায়। সেই দুটি হারের বদলা নিল কিউয়িরা বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে।

অমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে আয়োজিত বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে প্রথম ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ড করে ৯ উইকেটে ২৮২। জো রুট এবং কিছুটা জোস বাটলার ছাড়া কেউই কিউয়ি বোলারদের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে পারেননি। তবে একটা ব্যাপার। ২৮২ রান করার পথে ইংল্যান্ডের ব্যাটাররা অজ্ঞাতেই একটা কাণ্ড করে ফেললেন। ১ থেকে ১১ নম্বর, সব ব্যাটারই দুই অঙ্কের রানে পৌঁছোলেন। কেউ এক অঙ্কের রানে আউট হননি, শূন্য করা তো দূরের কথা।

নিউজিল্যান্ডের দুই ব্যাটার ডেভন কনওয়ে এবং রাচিন রবীন্দ্র যে কত সহজে জয়ের জন্য ২৮২ রান তুলে ফেললেন তা ভাবা যায় না। মাত্র ১০ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর কনওয়ের সঙ্গী হন ভারতীয় বংশোদ্ভূত রাচিন রবীন্দ্র। ১৩.৪ ওভার বাকি থাকতেই প্রয়োজনীয় রান তুলে নেন তাঁরা। দু’ জনেই সেঞ্চুরি করে নট আউট থাকেন। ইংল্যান্ডের বোলারদের নিয়ে দুই কিউয়ি ব্যাটার রীতিমতো ছেলেখেলা করলেন। উল্লেখ্য, রাহুল দ্রাবিড় ও সচিন তেন্ডুলকরের নাম মিলিয়ের রবীন্দ্রর বাবা-মা ছেলের নাম রাখেন রাচিন।

নিয়মিত উইকেট পড়ল ইংল্যান্ডের   

টসে জিতে গত বারের চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে ব্যাট করতে পাঠায় গত বারের রানার্স নিউজিল্যান্ড। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ইংল্যান্ড করে ৯ উইকেট ২৮২। প্রথম উইকেট এবং পঞ্চম উইকেটের জুটি ছাড়া কোনো উইকেটেই তেমন বড়ো রান ওঠেনি। জনি বেয়ারস্টোর সঙ্গে ওপেন করতে নামেন ডাউইড মলন। প্রথম উইকেটের জুটিতে ৪০ রান ওঠার পর আউট হন মলন। এর পর নিয়মিত ব্যবধানেই উইকেট পড়তে থাকে। দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ উইকেট পড়ে যথাক্রমে ৬৪, ৯৪ ও ১১৮ রানে।

পঞ্চম উইকেটে জুটি বাঁধেন জো রুট ও জোস বাটলার। তাঁরা যোগ করেন ৭০ রান। ম্যাট হেনরির বলে ল্যাথামের হাতে ক্যাচ দিয়ে নিজস্ব ৪৩ রানে আউট হন বাটলার। এর পর আবার উইকেট পড়তে শুরু করে। ইতিমধ্যে ৭৭ রান করে রুট আউট হন দলের ২২৯ রানে। তাঁকে গ্লেন ফিলিপস সরাসরি বোল্ড করেন। ২৫২ রানে নবম উইকেট পড়ার পর দলের রান যতটা সম্ভব এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন আদিল রশিদ এবং মার্ক উড। শেষ ২৬ বলে তাঁরা যোগ করেন ৩০ রান। রসিদ ১৫ রানে এবং উড ১৩ রানে নট আউট থাকেন।

কনওয়ে ও রবীন্দ্রের দুরন্ত ব্যাটিং

জয়ের জন্য ২৮৩ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে গিয়ে শুরুতেই ধাক্কা খায় কিউয়িরা। অন্যতম ওপেনার উইল ইয়ং খাতা খোলার আগেই আউট হয়ে যান। স্যাম কুরানের বলে বাটলারের হাতে ক্যাচ দিয়ে তিনি প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। দলের রান তখন ১০। কিন্তু এর পর দুই কিউয়ি ব্যাটার ডেভন কনওয়ে এবং রাচিন রবীন্দ্র যে ভাবে ইংল্যান্ডের বোলারদের নিয়ে ছিনিমিনি খেললেন তা অবিশ্বাস্য।

কনওয়ে ও রবীন্দ্রের জুটি ৫০ রানে পৌঁছোল ৬.৫ ওভারে। সপ্তম ওভারে এই জুটি করল ১৭ রান। দু’ জনে সমান তালে খেলে যেতে লাগলেন। একেবারে স্বচ্ছন্দ ব্যাটিং। দ্বাদশ ওভারের পঞ্চম বলে মইন আলিকে ছয় মেরে রবীন্দ্র পৌঁছে গেলেন ৫০-এ্রর ঘরে। তাঁর রান দাঁড়াল ৫৩। পিছিয়ে থাকলেন না কনওয়েও। পরের ওভারে চতুর্থ বলে আদিল রশিদকে চার মেরে ৫০-এ পৌঁছোলেন তিনি। দলের ১০০ রান এসে গিয়েছে তার আগেই। ওই ওভারের প্রথম বলে ১ রান নিয়ে দলের রান ১০০-য় পৌঁছে দেন কনওয়ে।

১৩.৪ ওভারে মইন আলির বলে ১ রান নিয়ে নিজেদের জুটির ১০০ রান পূর্ণ করেন রবীন্দ্র। তুখোড় ব্যাটিং প্রদর্শনী চালিয়ে যেতে থাকেন দুই ব্যাটার। ২০তম ওভারের শেষ বলে আদিল রশিদকে ছয় মেরে দলের ১৫০ রান পূর্ণ করেন কনওয়ে। এর পর আসে কে আগে শতরান করবেন তার প্রতিযোগিতা। ২৭তম ওভারের প্রথম বলে মার্ক উডের বল লেগের দিকে ঠেলে নিজের ১০০ রানে পৌঁছে যান ডেভন কনওয়ে। ওই ওভারেরই পঞ্চম বলে ২০০ রানে পৌঁছে যায় নিউজিল্যান্ড। এর পর রবীন্দ্রের শতরান। ৩১তম ওভারের চতুর্থ বলে লিভিংস্টোনের বল লেগে ঠেলে ১ রান নিয়ে ১০০ করেন তিনি।

শেষ পর্যন্ত এই জুটি অবিচ্ছেদ্য থেকে দলকে জয়ে পৌঁছে দেন। ৩৭.২ ওভারে মইন আলিকে ১ রান নিয়ে দলকে জেতান রবীন্দ্র। ১২১ বলে ১৫২ রান করে নট আউট থাকেন ডেভন কনওয়ে এবং ৯৬ বলে ১২৩ রান করে নট আউট থাকেন রাচিন রবীন্দ্র। অলরাউন্ডার রবীন্দ্র ইংল্যান্ডের ১টা উইকেটও নেন। তাঁকেই ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’ ঘোষণা করা হয়।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version