এটিকে মোহনবাগান ২ (পেত্রাতোস) ৪ (পেত্রাতোস, কোলাসো, নাসিরি, মনবীর)
বেঙ্গালুরু এফসি ২ (ছেত্রী, রয় কৃষ্ণ) ৩ (অ্যালান কোস্তা, রয় কৃষ্ণ, ছেত্রী)
মাড়গাঁও (গোয়া): হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর ম্যাচ গড়াল টাইব্রেকারে। বেঙ্গালুরু এফসির ব্রুনোর শট বাঁচিয়ে দিলেন এটিকে মোহনবাগানের বিশাল কাইথ। আর বেঙ্গালুরুর পেরেজের শট বেরিয়ে গেল এটিকে মোহনবাগানের বারের উপর দিয়ে। ও দিকে চারটি পেনাল্টি শট থেকেই গোল করল এটিকে মোহনবাগান। নির্ধারিত সময়ে ম্যাচ ২-২ গোলে অমীমাংসিত থাকার পর এটিকে মোহনবাগান ম্যাচ জিতল ৪-৩ গোলে।
শনিবার আইএসএল ২০২২-২৩ ফাইনালের আসর বসেছিল গোয়ার মাড়গাঁওয়ের জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে। খেলার প্রথম মিনিটেই বিপত্তি। বেঙ্গালুরু এফসির শিব সলতি এটিকে মোহনবাগানের কার্ল ম্যাকহিউ আর আশিকের মাঝে পড়ে চিঁড়েচ্যাপটা হয়ে যান। নাক দিয়ে রক্ত পড়তে থাকে। শেষ পর্যন্ত দলের মেডিক্যাল টিম স্ট্রেচার এনে শিবকে মাঠের বাইরে নিয়ে যান। মাঠে নামেন সুনীল ছেত্রী।
সেমিফাইনালে এটিকে মোহনবাগান যে কৌশল নিয়েছিল, সেই কৌশলে খেলা শুরু করে। রক্ষণকে জোরদার করে সুযোগ পেলে আক্রমণে যাওয়া। আর বেঙ্গালুরু লম্বা পাসে খেলা শুরু করে। ম্যাচের ১১ মিনিটে বেঙ্গালুরু খাবি এরনান্দেজের শট হেড দিয়ে বার করে দেন এটিকেএমবি-র শুভাশিস। বল চলে যায় বেঙ্গালুরুর প্রবীরের কাছে। তিনি বাঁ দিকে ক্রস বাড়ান। বল যায় রয় কৃষ্ণের কাজে। তা থেকে কাজের কাজ কিছু হয়নি।
প্রথমার্ধে ১-১
ম্যাচের ১৪ মিনিটে গোল করে এগিয়ে যায় এটিকেএমবি। তারা কর্নার পায়। কর্নার কিক নেন পেত্রাতোস। বেঙ্গালুরুর গোলকিপার গুরপ্রীত বল বাঁচান। কিন্তু সেই জায়গায় হ্যান্ডবল করেন রয় কৃষ্ণ। পেত্রাতোস বাঁ দিক ঘেঁষে পেনাল্টি কিক নেন। সে দিকেই ঝাঁপিয়েছিলেন গুরপ্রীত। কিন্তু বল বাঁচাতে পারেননি।
গোল পেয়ে এটিকেএমবি যেন চেগে ওঠে। তারা আক্রমণ শানাতে থাকে। প্রতি-আক্রমণে ঝাঁপিয়ে পড়ে বেঙ্গালুরুও। ম্যাচ সমানে সমানেই চলতে থাকে।
প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ের ৫ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল শোধ করে বেঙ্গালুরু। পেনাল্টি থেকে গোল শোধ করেন সুনীল ছেত্রী।
দ্বিতীয়ার্ধে এটিকেএমবি আবার আক্রমণে যায়। ম্যাচের ৬৫ মিনিটে গোল করার সুযোগ পায় তারা। বেঙ্গালুরুর পেনাল্টি বক্সের কাছে আশিস রাই পাস দেন বৌমৌসকে। বৌমৌস যে শট নেন তা পোস্টের উপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। পরের মিনিটেই আবার সুযোগ। বৌমৌস ও পেত্রাতোস একসঙ্গে আক্রমণে উঠে আসেন। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি।
নির্ধারিত সময়ে ২-২
ম্যাচের ৭৮ মিনিটে গোল করে এগিয়ে যায় বেঙ্গালুরু। কর্নার পায় তারা। সুরেশ সিংয়ের কর্নার কিকে হেড দিয়ে এটিকে মোহনবাগানের গোলকিপার বিশাল কাইথকে পরাস্ত করেন রয় কৃষ্ণ।
কিন্তু ৬ মিনিট পরেই ম্যাচে সমতা ফেরায় এটিকেএমবি। বেঙ্গালুরুর পাবলো পেরেজ নিজেদের বক্সে ফাউল করেন এটিকেএমবির কিয়ান নাসিরিকে। পেনাল্টিকে কাজে লাগাতে কোনো ভুলচুক করেননি পেত্রাতোস। ম্যাচের নির্ধারিত সময়ে খেলা ২-২ গোলে অমীমাংসিত থাকে।
খেলা অতিরিক্ত সময়ে গড়ায়। ৩০ মিনিটের অতিরিক্ত সময়েও ফয়সালা না হওয়ায় ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়ায়।
টাইব্রেকারে ৪-৩
প্রথম পেনাল্টি শটে গোল করে বেঙ্গালুরু ও এটিকে মোহনবাগান, দুই দলই। বেঙ্গালুরুর হয়ে গোল করেন অ্যালান কোস্তা এবং এটিকে মোহনবাগানের পেত্রাতোস। ফল ১-১।
দ্বিতীয় পেনাল্টি শটও কাজে লাগায় দুই দলই। গোল করেন বেঙ্গালুরুর রয় কৃষ্ণ এবং এটিকে মোহনবাগানের কোলাসো। ফল ২-২।
তৃতীয় পেনাল্টি শট থেকে গোল করতে ব্যর্থ হয় বেঙ্গালুরু। ব্রুনোর শট বাঁচিয়ে দেন বিশাল কাইথ। কিন্তু কিয়ান নাসিরির গোলে এগিয়ে যায় এটিকে মোহনবাগান। ফল ৩-২।
চতুর্থ পেনাল্টি শটে দুই দলই গোল করে। বেঙ্গালুরুর হয়ে সুনীল ছেত্রী এবং এটিকে মোহনবাগানের হয়ে মনবীর সিং। ফল ৪-৩। বেঙ্গালুরু এফসি পঞ্চম পেনাল্টি শট মিস করে। পেরেজের শট এটিকে মোহনবাগানের গোলের উপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। এটিকে মোহনবাগানকে আর পঞ্চম পেনাল্টি শট নিতে হয়নি। তারা ম্যাচ জিতে যায় ৪-৩ গোলে। ম্যাচের সেরা হলেন দিমিত্রি পেত্রাতোস।
আরও পড়ুন
মঙ্গলবার পর্যন্ত হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি, সঙ্গে দমকা হাওয়া