বেঙ্গালুরু এফসি: ২ (সুনীল ছেত্রী, ফ্লোরেন্ট ওগিয়ার, আত্মঘাতী)
মহমেডান এসসি: ১ (সিজার মানজোকি)
কলকাতা: সারা ম্যাচে বেঙ্গালুরু এফসি-র উপর আধিপত্য বজায় থাকল। রীতিমতো দাপট নিয়ে খেলে ম্যাচের ৮২ মিনিট পর্যন্ত এগিয়ে থাকল। তবু ম্যাচের শেষে সমর্থকদের হারের হতাশায় ডুবিয়ে দিল মহমেডান স্পোর্টিং। বুধবার কলকাতার কিশোরভারতী ক্রীড়াঙ্গনে আয়োজিত আইএসএল-এর ম্যাচে বেঙ্গালুরু এফসি-র কাছে তারা হেরে গেল ২-১ গোলে।
বেঙ্গালুরু এফসি-র এই জয়ের কৃতিত্ব সবটাই দিতে হয় ভারতীয় ফুটবলের কিংবদন্তি সুনীল ছেত্রীকে। রিজার্ভ বেঞ্চে ছিলেন সুনীল। দ্বিতীয়ার্ধের ৫৩ মিনিটে মাঠে নামলেন সুনীল। আর ৮২ মিনিটে সমতা এনে নিজের দলকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনলেন সুনীল। তার পর ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ের একেবারে শেষ মুহূর্তে গোল করে বেঙ্গালুরু হারের হতাশায় ডুবিয়ে দিল মহমেডানকে।
ম্যাচের ৫৩ মিনিটে সুনীল ছেত্রী মাঠে নামার পর থেকে ছবিটা ক্রমশ পাল্টে যেতে থাকে। একটু একটু করে ম্যাচে ফিরে আসে বেঙ্গালুরু। এবং মহমেডানের বিরুদ্ধে ২টি গোল করে। ৮২ মিনিটের গোলটি তো সুনীলেরই করা। আর ম্যাচের শেষ মিনিটে বেঙ্গালুরু যে গোলটি পেল তারও কৃতিত্ব সুনীলের। তাঁরই মাথা থেকে ছিটকে বেরনো বল মহমেডানের ফ্লোরেন্ট ওগিয়ারের গায়ে লেগে গোলে ঢুকে পড়ে এবং বেঙ্গালুরু এফসি-কে ২-১ জয় এনে দেয়।
মহমেডানের মানজোকির উচ্ছ্বাস, গোলের পরে। ছবি: সঞ্জয় হাজরা।
প্রথমার্ধে ১-০ এগিয়ে মহমেডান
গোড়া থেকেই বেঙ্গালুরুর উপর আধিপত্য রেখে খেলা শুরু করে মহমেডান। তার ফলও পেয়ে যায় ম্যাচের ৮ মিনিটে। মির্জালল কাসিমভের কর্নারে নিখুঁত হেড করে বল জালে জড়িয়ে দেন সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক থেকে আসা ফরোয়ার্ড সিজার মানজোকি। এই মানজোকি গত সাতটি ম্যাচে ব্যর্থ হওয়ার পর আট নম্বর ম্যাচে অবশেষে গোল পেলেন। বেঙ্গালুরুর নাওরেম রোশন সিং তাঁকে পাহারা দিলেও শেষ পর্যন্ত আটকাতে পারেননি (১-০)। মানজোকির তীব্র শট গোলকিপার গুরপ্রীত সিং সান্ধুর পক্ষেও বাঁচানো কার্যত অসম্ভব ছিল।
এর পরেও মহমেডান একাধিক গোলের সুবর্ণ সুযোগ তৈরি করে। কিন্তু একটা থেকেও গোল করতে পারেনি তারা। লিগ টেবিলের শীর্ষে থাকা বেঙ্গালুরুর খেলায় বেশ জড়তা ছিল। ম্যাচের প্রথম আধ ঘণ্টা তো বেঙ্গালুরুর দিকেই বল ঘোরাফেরা করেছে। একটিও শট তারা মহমেডানের গোলে রাখতে পারেনি।
বেঙ্গালুরুর জয়সূচক গোল শেষ মুহূর্তে
ম্যাচের ৫৩ মিনিটে সুনীল নামার পরে বেঙ্গালুরু একটু নড়েচড়ে বসে। ৬৪ মিনিটের মাথায় মহমেডানের বক্সের সামনে একটি ফ্রিকিক পায় বেঙ্গালুরু। সেই ফ্রিকিক থেকে মহমেডানের গোল লক্ষ্য করে দুর্দান্ত একটি শটও নেন সুনীল। তবে ডান দিকে ডাইভ দিয়ে তা দারুণ ভাবে বাঁচিয়ে দেন মহমেডানের গোলকিপার ভাস্কর রায়। এর দু’ মিনিট পর ফের শট। এ বার বক্সের বাইরে থেকে। এ বারও বল আটকে দেন ভাস্কর।
ম্যাচের একটি মুহূর্ত। ছবি: সঞ্জয় হাজরা।
শেষ পর্যন্ত সুনীল গোল পান ৮২ মিনিটে। মহমেডানের মানজোকির ভুলে পেনাল্টি পেয়ে যায় বেঙ্গালুরু । কর্নারের সময় পেদ্রো কাপোকে জড়িয়ে ধরে টেনে ফেলে দিয়েছিলেন তিনি। রেফারি পেনাল্টি দিতে দ্বিধা করেননি। সেই পেনাল্টি থেকে ম্যাচে সমতা আনেন সুনীল।
ম্যাচের শেষ দিকে জেতার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে বেঙ্গালুরু। আর তার ফলও পেয়ে যায় অতিরিক্ত সময়ের একেবারে শেষ মিনিটে। বক্সের বাঁ দিক থেকে পরিবর্ত মিডফিল্ডার ফানাইয়ের মাপা ক্রসে মহমেডানের গোল লক্ষ্য করে হেড করেন সুনীল, যা ফ্লোরেন্ট ওগিয়ারের গায়ে লেগে ঢুকে যায় গোলে ঢুকে পড়ে।
লিগ টেবিলে অবস্থান
এ দিনের ২-১ গোলে জয়ের পরে বেঙ্গালুরু চলে গেল লিগ টেবিলের শীর্ষে। ৯ ম্যাচ থেকে তাদের পয়েন্ট দাঁড়াল ২০। দ্বিতীয় স্থানে আছে মোহনবাগান। ৮ ম্যাচ থেকে তাদের সংগ্রহ ১৭। মহমেডান থাকল সেই দ্বাদশ স্থানেই। ৮ ম্যাচ থেকে তাদের সংগ্রহ ৫ পয়েন্ট।