ইস্টবেঙ্গল এফসি: ২ (বিষ্ণু, জেসিন তোনিক্কারা) মোহনবাগান এসজি: ১ (সুহেল ভাট)
খবর অনলাইন ডেস্ক: শেষ পর্যন্ত বাজিমাত করল ইস্টবেঙ্গল এফসি। শনিবার বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে আয়োজিত কলকাতা ফুটবল লিগের ডার্বিতে তারা ২-১ গোলে হারিয়ে দিলে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টকে। প্রথমার্ধ এবং দ্বিতীয়ার্ধের শেষ দিকটা ছাড়া মোহনবাগান লড়াই-ই করতে পারল না ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে।
প্রথমার্ধ গোলশূন্য অবস্থায় শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে ৩টি গোল হয়। ম্যাচের ৫০ মিনিটে গোল করে এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। ১৪ মিনিট পরে ব্যবধান বাড়ায় ইস্টবেঙ্গল। এটা ইস্টবেঙ্গলকে মোহনবাগানের উপহার বলা যেতে পারে। ইতিমধ্যে ৭৬ মিনিটে দ্বিতীয়বার হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হল ইস্টবেঙ্গলের জোসেফকে। ম্যাচের বাকি সময়টা ইস্টবেঙ্গলকে ১০ জনে খেলতে হল। সেই সুযোগে ম্যাচ শেষ হওয়ার একেবারে শেষ মুহূর্তে অতিরিক্ত সময়ের ৫ মিনিটে মোহনবাগান ১টি গোল শোধ করে।
প্রথমার্ধ গোলশূন্য
প্রথমার্ধে দুটি দল প্রায় সমানে সমানে খেলে। বলের উপর দখলদারিতে এগিয়ে ছিল মোহনবাগান। তাদের দখলদারি ছিল ৫২ শতাংশ এবং ইস্টবেঙ্গলের ৪৮ শতাংশ। ইস্টবেঙ্গল গোলে শট নিয়েছে ৪টি, মোহনবাগান ৩টি। কিন্তু তেকাঠিতে বল রাখার ব্যাপারে এগিয়ে ছিল মোহনবাগান। তারা রাখতে পেরেছে ৬৭ শতাংশ শট আর ইস্টবেঙ্গল রাখতে পেরেছে ৫০ শতাংশ শট। মোহনবাগান ৪টি কর্নার পেয়েছে, ইস্টবেঙ্গল পেয়েছে ৩টি।
ম্যাচের আর-একটি মুহূর্ত। ছবি:সঞ্জয় হাজরা।
প্রথমার্ধে ম্যাচ শুরু হতেই আক্রমণে যায় মোহনবাগান। ডানদিক থেকে ইস্টবেঙ্গলের বক্সে ঢোকার চেষ্টা করেন সুহেল ভাট। কিন্তু তাঁর কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে ইস্টবেঙ্গল আক্রমণে উঠে আসে। ডান দিকে উঠে আসেন রোশাল। প্রায় কর্নারের কাছাকাছি গিয়ে মোহনবাগানের পেনাল্টি বক্সে থাকা তন্ময় ঘোষকে পাস বাড়ান রোশাল। তন্ময়ের সাইড ভলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ম্যাচের ৫ মিনিটে কর্নার পায় ইস্টবেঙ্গল। মোহনবাগান বিপদে না পড়লেও তাদের উপর চাপ বাড়তেই থাকে।
এ ভাবেই মোহনবাগানের উপর একের পর এক চাপ সৃষ্টি করতেই থাকে ইস্টবেঙ্গল। এরই ফাঁকে মোহনবাগানও মাঝে মাঝে আক্রমণে উঠে আসে। তবে কোনো দলই প্রতিপক্ষের গোলকিপারকে ব্যতিব্যস্ত করতে পারেনি। কোনো পক্ষই কোনো গোল করতে পারল না। গোলশূন্য অবস্থায় শেষ হয় প্রথমার্ধ।
দ্বিতীয়ার্ধে ৩ গোল
দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হতে না হতেই আক্রমণ ইস্টবেঙ্গলের। মোহনবাগানের গোলের একদম সামনে থেকে জোরালো শট নেন আমন। বল গোলে ঢোকার মুখে দুই ডিফেন্ডারের স্লাইডিং ট্যাকলে বেঁচে যায় মোহনবাগান।
ম্যাচের ৫০ মিনিটেই গোল পেয়ে গেল ইস্টবেঙ্গল। সতীর্থের লম্বা পাস ধরেন বিষ্ণু। তার পর মোহনবাগানের দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সে ঢোকেন। সেখানেও বাগানের আরও দুই ডিফেন্ডার রাজ বাসফোর ও গ্লেন মার্টিন্স ছিলেন। তাঁদের মাঝখান দিয়ে বাঁ পায়ের শটে মোহনবাগানের জালে বল জড়িয়ে দেন বিষ্ণু। ইস্টবেঙ্গল এগিয়ে যায় ১-০ গোলে।
জয়ের পরে। ছবি: সঞ্জয় হাজরা।
ম্যাচের ৫৯ মিনিটে পর পর তিনটে সুযোগ নষ্ট হল ইস্টবেঙ্গলের। বাঁ দিক থেকে দ্রুত উঠে আসেন জেসিন টিকে। বক্সের মাথায় থাকা আমনকে বল বাড়ান। মোহনবাগানের গোলকিপার গোললাইন ছেড়ে বেরিয়ে এসে আটকে দেন দেন আমনের শট। ফিরতি বল থেকে আরও দু’বার গোল করার সুযোগ পায় ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু দু’বারই মোহনবাগান ডিফেন্ডাররা শুয়েপড়ে বাঁচিয়ে দেন।
এর পর ম্যাচের ৬৪ মিনিটে গোলের ব্যবধান বাড়িয়ে ফেলে ইস্টবেঙ্গল। মোহনবাগানের ডিফেন্ডারদের জঘন্য খেলার সুযোগ নিয়ে গোল করে বসে ইস্টবেঙ্গল। মোহনবাগানের গোলকিপারের কাছ থেকে বল পেয়ে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি সৌরভ। আমন তাঁর কাছ থেকে বল কেড়ে বাড়িয়ে দেন জেসিনকে। জেসিন ফাঁকায় গোল করেন। মোহনবাগানের ডিফেন্ডাররা কেউই তাঁদের জায়গায় ছিলেন না। ইস্টবেঙ্গল এগিয়ে যায় ২-০ গোলে।
৭৬ মিনিট থেকে ১০ জনে খেলতে হয় ইস্টবেঙ্গলকে। ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ের ৫ মিনিটে দুর্দান্ত হেডে ইস্টবেঙ্গলের গোলকিপারকে পরাস্ত করেন সুহেল ভাট। অনেক দিন পর ডার্বি ম্যাচে মোহনবাগানকে হারাল ইস্টবেঙ্গল। ফল ২-১।
আরও পড়ুন
ডুরান্ড কাপ ২০২৪: শুরু হচ্ছে ২৭ জুলাই, মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গল একই গ্রুপে